Thank you for trying Sticky AMP!!

২৯ আসামির ১৪ জন পলাতক, সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু ১০ অক্টোবর

নিহত রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ

রোহিঙ্গাদের শীর্ষনেতা মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার এক বছর পূর্ণ হলো আজ বৃহস্পতিবার। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে উখিয়ার লাম্বাশিয়া আশ্রয়শিবিরের ডি ব্লকে আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটসের (এআরএসপিএইচ) কার্যালয়ে বন্দুকধারীদের গুলিতে নিহত হন মুহিবুল্লাহ। তিনি ওই সংগঠনের চেয়ারম্যান ছিলেন।

আলোচিত এ হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁরা সবাই কারাগারে আছেন। মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত বাকি ১৪ আসামি পলাতক। আগামী ১০ অক্টোবর থেকে হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হবে। মামলার ৩৮ সাক্ষীকে সমন জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) ফরিদুল আলম।

Also Read: মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় আরসার ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন

মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ১১ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠন করেন কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল। এর আগে ১৩ জুন কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার অভিযোগপত্র দেন উখিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী সালাহ উদ্দিন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়, মিয়ানমারের সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান (কমান্ডার) আতাউল্লাহ আবু আম্মার ওরফে জুনুনির নির্দেশে এ সংগঠনের ৩৬ সদস্য পরিকল্পিতভাবে মুহিবুল্লাহকে গুলি করে হত্যা করেন। ঠিকানা শনাক্ত করতে না পারায় সাতজনকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন আরসার প্রধান জুনুনি, ওস্তাদ খালেদ ওরফে খালিদ, ওস্তাদ হাশিম, ইব্রাহিম, আলমগীর, শুভ ওরফে আলমগীর ও মৌলভি মোস্তাক। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আসামিদের কয়েকজন ঘটনার সঙ্গে জুনুনিসহ সাতজনের সম্পৃক্ত থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন।

মামলার বাদীপক্ষ ও রোহিঙ্গা নেতাদের অভিযোগ, মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেনের মাধ্যমে অভিযোগপত্র থেকে আরসা কমান্ডারসহ সাতজনের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। তবে এমন অভিযোগ ভিত্তিহীন দাবি করে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গাজী সালাহ উদ্দিন বলেন, তদন্তে তিনি যা পেয়েছেন, অভিযোগপত্রে তা–ই উল্লেখ করেছেন।

কানাডায় মুহিবুল্লাহর পরিবারের ২৬ জন

মুহিবুল্লাহ হত্যার পর তাঁর পরিবারের সদস্যরা আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তাহীন হয়ে পড়েন। আসতে থাকে প্রাণনাশের হুমকি। মুহিবুল্লাহ হত্যার কয়েক দিনের মাথায় পরিবারের সদস্যদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়। রাখা হয় পুলিশি পাহারায়। ইতিমধ্যে শরণার্থী হিসেবে দুই দফায় মুহিবুল্লাহর পরিবারের ২৫ সদস্যকে কানাডায় পাঠিয়েছে জাতিসংঘের উদ্বাস্তুবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।

কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, প্রথম দফায় গত ৩১ মার্চ রাতে কানাডায় পাঠানো হয় মুহিবুল্লাহর স্ত্রী নাসিমা খাতুন, তাঁদের ৯ ছেলেমেয়েসহ ১১ জনকে। দ্বিতীয় দফায় ২৫ সেপ্টেম্বর ভোরে কানাডার উদ্দেশে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেন মুহিবুল্লাহর মা উম্মে ফজল (৬০), ছোট ভাই ও মামলার বাদী হাবিবুল্লাহর স্ত্রী আসমা বিবি (৩৫), সন্তান কয়কবা (১৫), বয়সারা (১৩), হুনাইসা (৯), মো. আইমন (৮), ওরদা বিবি (৫) ও মো. আশরাফ (৫) এবং আরেক ভাই আহমদ উল্লাহর স্ত্রী শামছুন নাহার (৩৭), সন্তান হামদাল্লাহ (১১), হান্নানা বিবি (৯), আফসার উদ্দীন (৭), সোহানা বিবি (৫), মেজবাহ উল্লাহসহ (১) ১৪ জন। মামলার বাদী হওয়ায় হাবিবুল্লাহর কানাডায় যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

Also Read: মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলায় ‘আরসার ওলামা শাখার নেতা’ গ্রেপ্তার

আদালতের পিপি ফরিদুল আলম বলেন, আগামী ১০ অক্টোবর মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ বাদী হাবিবুল্লাহকে দিয়েই শুরু হবে। সাক্ষ্য দিতে ওই দিন আদালতে হাজির থাকতে ইতিমধ্যে হাবিবুল্লাহকে সমন জারি করা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব এ মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ করার প্রস্তুতি চলছে।

রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সহকারী পুলিশ সুপার মো. ফারুক আহমদ বলেন, শরণার্থী হিসেবে মুহিবুল্লাহ পরিবারের ২৫ সদস্যকে দুই দফায় কানাডায় স্থানান্তর করা হয়েছে। মুহিবুল্লাহ হত্যা মামলার রায় না হওয়া পর্যন্ত বাদীকে (হাবিবুল্লাহ) এখানেই থাকতে হবে।

Also Read: ‘মুহিবুল্লাহ, ওঠ’ বলেই পরপর তিনটি গুলি