Thank you for trying Sticky AMP!!

ভোমরা স্থলবন্দরে ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ

সাতক্ষীরা জেলার মানচিত্র

সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরে পাওনা টাকার জন্য চট্টগ্রামের এক ব্যবসায়ীকে ১৫ দিন ধরে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকছুদ খানের ব্যক্তিগত কার্যালয় থেকে ওই ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে পুলিশ।

উদ্ধার হওয়া ওই ব্যবসায়ীর নাম সাউদ মোহাম্মদ সাদাত। তিনি চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার ফরহাদাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। পাওনা টাকার জন্য ওই ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছিল বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। তবে অভিযুক্ত মাকছুদ খান দাবি করেছেন, ওই ব্যবসায়ীকে আটকে রাখা হয়নি। তিনি তাঁর (মাকছুদ) কার্যালয়ে থেকে পাওনা টাকা উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন।

উদ্ধার হওয়া ব্যবসায়ীর স্ত্রী স্কুলশিক্ষক ফারহানা রেজা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী সাউদের ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মাকছুদ খানের সঙ্গে ব্যবসা ছিল। ঈদুল ফিতরের আগে মাকছুদ খানের কাছ থেকে শুকনা মরিচ, পেঁয়াজ ও রসুন নিয়েছিলেন তাঁর স্বামী। যেটাতে বড় অঙ্কের টাকা লোকসান হয়। এ জন্য মাকছুদের টাকা পরিশোধ করতে পারছিলেন না।

ফারহানা রেজা বলেন, আগস্ট মাসে মাকছুদ খান চট্টগ্রামে গিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে পাওনা টাকার বিষয়ে আলোচনা করে আসেন। ১ সেপ্টেম্বর তাঁর স্বামীসহ তিনজন ব্যবসায়ী সাতক্ষীরায় এলে মাকছুদের সঙ্গে দেখা হয়। এ সময় তাঁর স্বামীকে আটক করে অন্য ব্যবসায়ীদের চট্টগ্রামে ফিরে যেতে বলেন। সাউদের সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে কথা বলবেন বলে জানানো হয় তাঁদের। পরে মাকছুদ খান তাঁর স্বামীকে ভোমরা বন্দরে তাঁর কার্যালয়ে নিয়ে আটকে রাখেন। এ সময় তাঁর মুঠোফোনের সিম খুলে নিয়ে নতুন সিম কার্ড দেওয়া হয়। ওই সিমকার্ড দিয়ে শুধু তাঁর (ফারহানা) সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হতো।

ফারহানা রেজা অভিযোগ করেন, প্রথম দিকে ভালো ব্যবহার করলেও চার-পাঁচ দিন আগে তাঁর স্বামীকে মারধর করা হয়। এতে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে পরিচিত একজনকে দিয়ে তিনি সাতক্ষীরা সদর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় মাকছুদের কার্যালয় থেকে তাঁর স্বামীকে উদ্ধার করে পুলিশ।

তবে ব্যবসায়ীকে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ভোমরা স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এ এস এম মাকছুদ খান। তিনি বলেন, তিনি ওই ব্যক্তির কাছে ১ কোটি ২৩ লাখ টাকা পান। ওই টাকার বিপরীতে দুটি চেক ও নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামাও আছে। এ ছাড়া পাওনা টাকা দিতে টালবাহানা করায় সাউদ মোহাম্মদের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা সদর থানায় ২৬ জুলাই ও চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় ৮ আগস্ট পৃথক জিডি করা হয়।

মাকছুদ খান দাবি করেন, ব্যবসায়ী সাউদ মোহাম্মদ স্বেচ্ছায় তাঁর কার্যালয়ে থাকছিলেন। সেখানে থেকে তিনি পাওনাদারদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের চেষ্টা করছিলেন। রোববার তাঁর ৫০ লাখ টাকা পরিশোধের কথা ছিল। ওই টাকা না দেওয়ার জন্য তিনি এমন নাটক রচনা করেছেন।

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিদুল ইসলাম বলেন, চট্টগ্রামের একজন ব্যবসায়ীকে ভোমরায় আরেকজন ব্যবসায়ী আটকে রেখেছেন—তাঁর কাছে এমন অভিযোগ আসে। আবার এ-ও শুনতে পান, ওই ব্যবসায়ী স্বেচ্ছায় সেখানে থাকছেন। একপর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় তিনি ওই ব্যবসায়ী সাউদ মোহাম্মদ ও মাকছুদ খানের ব্যবস্থাপক মহসিন কবীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছেন।