Thank you for trying Sticky AMP!!

শীতের রাতে বৈদ্যুতিক আলোতে চলছে ব্যাডমিন্টন খেলা। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার কয়রা উপজেলা মদিনাবাদ এলাকায়

শীতের সন্ধ্যা নামতেই কয়রার পাড়া-মহল্লায় ব্যাডমিন্টন উৎসব

পাড়া-মহল্লার ফাঁকা জায়গা ও ছোট-বড় মাঠে প্রস্তুত করা হয়েছে ব্যাডমিন্টন কোর্ট। সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসতেই সেখানে জ্বলে উঠছে বৈদ্যুতিক বাতি। শীতের ঠান্ডা হাওয়ায় উঠতি বয়সী থেকে শুরু করে মধ্যবয়সীরাও সেখানে মেতে উঠছেন ব্যাডমিন্টন খেলায়।

খুলনার সুন্দরবন-সংলগ্ন কয়রা উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। পাড়া-মহল্লা থেকে শুরু করে উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গণও এখন গভীর রাত পর্যন্ত সরগরম থাকছে ব্যাডমিন্টন উৎসবে।

উপজেলার আমাদী, মহেশ্বরীপুর, মহারাজপুর, উত্তর বেদকাশী, দক্ষিণ বেদকাশী ও কয়রা সদর এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোনো ব্যাডমিন্টন কোর্টে বড় হ্যালোজেন বাতি, কোনোটায় কাঠের বোর্ডে লাগানো ৮-১০টি করে বৈদ্যুতিক বাতি। মাঠের মাঝামাঝি টানানো জালের দুই পাশ থেকে র‍্যাকেট দিয়ে কর্ক হাওয়ায় উড়িয়ে চলছে খেলোয়াড়দের জেতার লড়াই। কেউ উচ্চ স্বরে পয়েন্ট গুনছেন, কেউবা প্রস্তুতি নিচ্ছেন কোর্টে নামার। র‌্যাকেট-কর্কের শব্দ আর দর্শকের হাততালিতে মুখর পুরো এলাকা।

শীতের রাতে ব্যাডমিন্টন খেলা ঘিরে উৎসবের আমেজ। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় খুলনার কয়রা উপজেলা পরিষদ এলাকায়

কয়রা সদরের মদিনাবাদ এলাকার ব্যাডমিন্টনের কোর্টের পাশেই কথা হয় মাদ্রাসাশিক্ষক মেসবাহউদ্দিনের সঙ্গে। তিনি জানান, প্রতি শীতেই তাঁরা ব্যাডমিন্টন খেলার আয়োজন করেন। তাঁদের কেউ চাকরিজীবী, কেউ এলাকার বড় ভাই, আবার কেউ শিক্ষার্থী। শীতের মৌসুমে সবাই সন্ধ্যার পরের অবসর সময়টুকু রাখেন ব্যাডমিন্টন খেলার জন্য। সন্ধ্যা হওয়ার পরপরই খেলার জন্য মাঠে উপস্থিত হন তাঁরা।

বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মহারাজপুর এলাকার মনিরুল ইসলাম জানান, শীতের শুরুতেই বন্ধুদের সঙ্গে কোর্ট কেটেছেন। বন্ধুবান্ধব, এলাকার বড় ভাইয়েরা—সবাই উপস্থিত থাকেন। তাই খেলার পাশাপাশি আড্ডা দেওয়া যায়। সারা দিন কাজের পর বেশ ভালোই সময় কাটে।

কয়রা উপজেলা পরিষদ ও কয়রা থানা চত্বরেও দেখা যায়, জমে উঠেছে ব্যাডমিন্টন খেলা। কোর্ট থেকে ভেসে আসছে ‘থার্টিন হোপ’, ‘ফোরটিন লাস্ট’ চিৎকার। মাঠের পাশে র‍্যাকেট হাতে খেলার অপেক্ষায় থাকা কয়রা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, শীতের রাতে ব্যাডমিন্টন খেলার আলাদা একটা মজা আছে। প্রতি রাতে কিছু সময়ের জন্য হলেও মাঠে আসেন। ফিটনেস ধরে রাখার জন্য এ খেলার বিকল্প নেই।

ব্যাডমিন্টন কোর্টের পাশে বসে কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. কামাল হোসেন বলেন, এ খেলার মজা কিংবা উত্তেজনার কোনো কমতি নেই। কয়রার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদকে নিয়ে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে। খেলাধুলার মধ্যে থাকলে শরীরের পাশাপাশি মনও ভালো থাকে।

শীতের শুরু থেকেই ব্যাডমিন্টন খেলার সরঞ্জামের বেচাকেনাও বেড়েছে বলে জানান উপজেলা সদরের দোকানি আসাদুল ইসলাম। তিনি বলেন, শীতে খেলার সামগ্রী এমনিতেই বেশি বিক্রি হয়। তবে এ সময়ে ব্যাডমিন্টন খেলার সরঞ্জামের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এলাকার মুদিদোকানেও এখন শাটলকর্ক বিক্রি হচ্ছে।