Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহীতে সরকারি খামারের গরু নিলামে ‘অনিয়ম’ তদন্তের সাক্ষীকে মারধরের অভিযোগ

মারধর

রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ীহাটে আঞ্চলিক দুগ্ধ ও গবাদি উন্নয়ন খামারের ৪০টি গরু নিলামে ‘অনিয়মের’ বিষয়ে অনুষ্ঠিত তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেওয়ায় এক ব্যক্তিকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যার একটু আগে খামারের বাইরে এ ঘটনা ঘটেছে। এর আগে দুপুরে তদন্ত কমিটি গেলে ওই ব্যক্তি কমিটির কাছে সাক্ষ্য দেন।

Also Read: রাজশাহীতে সিন্ডিকেট করে সরকারি খামারের গরু নিলাম, অনিয়ম তদন্তের আশ্বাস

ভুক্তভোগী সাক্ষীর নাম অমিত হাসান (৪০)। তাঁর বাড়ি খামারের পাশের মোল্লাপাড়া গ্রামে। অমিত হাসান বলেন, গতকাল দুপুরে সাক্ষ্য দেওয়ার পর সন্ধ্যার একটু আগে তিনি খামারের ফটক থেকে প্রায় তিন মিনিটের হাঁটাপথের দূরত্বে বসেছিলেন। এ সময় খামারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কামরুজ্জামান ওরফে বাদশা হাতুড়ি নিয়ে তাঁর দিকে তেড়ে আসেন। ‘তুই ওখানে (তদন্ত কমিটির কাছে) আমার নাম বলেছিস কেন’, বলেই হাতুড়ি দিয়ে পায়ের ওপর আঘাত করেন কামরুজ্জামান। এ সময় কয়েকজনের হস্তক্ষেপে রক্ষা পান বলে জানান অমিত।

এ বিষয়ে আইনি পদক্ষেপ নেবেন কি না জানতে চাইলে অমিত হাসান বলেন, তাঁর পক্ষ থেকে তাঁর শ্বশুর খামারের উপপরিচালকের সঙ্গে কথা বলেছেন। একটি লিখিত অভিযোগ দিতে বলেছেন। অমিত হাসান বলেন, খামারের উপপরিচালকের কাছে অভিযোগ দিয়ে কোনো কাজ নেই। তিনি মামলা করার বিষয়ে পরামর্শ করছেন। যদি করেন, তিনি আদালতে মামলা করবেন। থানায় ওদের লোক আছে মামলা না–ও নিতে পারে।

মারধরের বিষয়ে জানতে চাইলে খামারের উপপরিচালক আতিকুর রহমান উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তিনি উল্টো জানতে চান, কোথায় এ ঘটনা ঘটেছে। খামারের গেটের পাশে এ ঘটনা ঘটেছে জানালে আতিকুর বলেন, গেটের পাশে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। একপর্যায়ে তিনি স্বীকার করেন, লোকমুখে মারধরের কথা শুনেছেন। সেটা নিশ্চিত না–ও হতে পারে বলে দাবি করেন তিনি।

১০ অক্টোবর খামারে ওই গরু নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। নিলামে অংশ নিতে প্রায় ৪০০ ব্যবসায়ী আবেদন জমা দিয়েছিলেন। কিন্তু নিলামে অংশ নেন মাত্র চারজন। এরপরও সিন্ডিকেট করে চারজনের পক্ষে একজন শুধু দর হাঁকেন। তিনি ওই খামারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কামরুজ্জামান ওরফে বাদশা। এ নিয়ে ‘নিলামে সরকারি খামারের গরু কিনতে প্রায় ৪০০ আবেদন, দর হাঁকেন মাত্র একজন’ শিরোনামে প্রথম আলো অনলাইনে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

নিলামে কেনা একেকটি গরু সেখানেই পরে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেশি দামে বিক্রি করা হয়েছে। কর্তৃপক্ষের ভাষ্য, আবেদন জমা দিয়ে ব্যবসায়ীরা নিলামে অংশ না নিলে তাদের কিছু করার নেই। ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে ছিলেন রাজশাহী জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি সালমান ফিরোজ ওরফে ফয়সাল।

প্রকাশ্য নিলামে অংশ নেন কালু, বাবু, মেহেরাব ও খামারের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী কামরুজ্জামান। কামরুজ্জামান সরকার নির্ধারিত সর্বনিম্ন দামের চেয়ে মাত্র ২০০ টাকা করে বেশি দিয়ে দর হাঁকান। এ সময় কাউকে কথা বলার সুযোগও দেওয়া হয়নি। সিন্ডিকেটের বাইরের অমিত হাসান নিলামে ডাক দিলে তাঁকে বের করে দেওয়া হয়।

অমিত হাসানের ওপর হামলার বিষয়ে কথা বলতে কামরুজ্জামান বাদশার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। গরু সিন্ডিকেটে নেতৃত্ব দেওয়া সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সালমান ফিরোজ ফয়সাল বলেন, ‘অমিত হাসানের ওপর হামলা হয়েছে এ রকম কোনো ঘটনা আমার জানা নেই।’