Thank you for trying Sticky AMP!!

ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. ফরিদ। বুধবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদসংলগ্ন এলাকায়

ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করেন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী ফরিদ

৩৫ বছর বয়সী দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী মো. ফরিদ। পরনে শার্ট-লুঙ্গি, মাথায় টুপি। হাতে লাগাম ধরে ঘোড়ার পিঠে ছুটে চলেন তিনি। জামালপুর শহরের রাস্তায় রাস্তায় ঘোড়ায় করে নিয়মিত ঘুরতে দেখা যায় তাঁকে। ঘোড়ায় চড়ে সপ্তাহে ছয় দিন শহরের বিভিন্ন দোকানপাটে যান ভিক্ষা করতে।

মো. ফরিদ জামালপুর পৌর শহরের হরিপুর এলাকার মৃত আবদুল কুদ্দুসের ছেলে। ফরিদ কৃষি কাজ করতেন। কিন্তু ১০ থেকে ১২ বছর আগে হঠাৎ টাইফয়েডে তাঁর দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে যায়। অর্থের অভাবে ভালো চিকিৎসা করাতে পারেননি। চোখের দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েন তিনি। পরে ভিক্ষাবৃত্তি শুরু করেন। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় তিনি পথঘাট চিনতে পারতেন না। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতেন। পরে প্রতিবেশীর পরামর্শে ঘোড়ায় করে ভিক্ষা করার সিদ্ধান্ত নেন। ঘোড়া তাঁকে নিয়ে যায়, আবার বাড়ি নিয়ে আসে। এক ব্যক্তির সহযোগিতায় তিনি একটি ঘোড়া কেনেন। প্রায় পাঁচ বছর ধরে ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করছেন তিনি। প্রতিদিন তাঁর ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। এ ছাড়া সাত মাস ধরে তিনি সরকারিভাবে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন।

গতকাল বুধবার সকালে জামালপুর সদর উপজেলা পরিষদসংলগ্ন এলাকায় ঘোড়া দিয়ে ভিক্ষা করতে যাওয়ার সময় মো. ফরিদের সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, এক শতাংশ জমিতে তাঁর একটি ঘর আছে। তিন বছর আগে তিনি প্রতিবন্ধী এক নারীকে বিয়ে করেছেন। স্ত্রী ও তাঁর মাকে নিয়ে তাঁর সংসার। কেউ অন্যভাবে সহযোগিতা করলে তিনি আর ভিক্ষা করতে চান না।

ঘোড়ায় চড়ে ভিক্ষা করার বিষয়ে ফরিদ বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে বাড়ি থেকে ঘোড়ায় করে বের হই। ঘোড়া সঠিক পথে নিয়ে যায়। দিন শেষে সন্ধ্যার দিকে ঘোড়া আবার বাড়িতে নিয়ে আসে। এভাবেই সপ্তাহে ছয় দিন ভিক্ষা করি।’