Thank you for trying Sticky AMP!!

পটুয়াখালীতে ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ বরসহ চারজনের ২৪ ঘণ্টায়ও সন্ধান মেলেনি

নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে আজ সকাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তেঁতুলিয়া নদীতে উদ্ধার অভিযান চালায়

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবির ঘটনার পর ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে। তবে আজ শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত বরসহ নিখোঁজ চারজনের সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে আজ সকাল নয়টা থেকে সারা দিন বরিশাল ও পটুয়াখালী ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল তেঁতুলিয়া নদীতে উদ্ধার চালায়।

এর আগে গতকাল শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে উপজেলার আউলিয়াপুর লঞ্চঘাটের পাশে বরযাত্রীবাহী ট্রলারটি ডুবে যায়। এতে লিপি বেগম (৩০) নামের ট্রলারের এক যাত্রীর মৃত্যু হয়। বরসহ চারজন নিখোঁজ হন। তাঁরা হলেন বর রাব্বি হাওলাদার (২০), তাঁর মা সেলিনা বেগম (৪৫), মৃত লিপি বেগমের মেয়ে খাদিজা (৮), মারিয়া (৮) নামের আরেক শিশু।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, গতকাল বিকেলে দশমিনার উত্তর রনগোপালদি গ্রামের মনির হাওলাদারের ছেলে রাব্বি বিয়ে করার জন্য স্বজনদের নিয়ে ট্রলারে করে কনের বাড়ি উপজেলার চর শাহজালালে যান। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষে বরযাত্রীরা ট্রলারে করে বাড়িতে ফিরছিলেন। বিকেল চারটার দিকে বরযাত্রীবাহী ট্রলারটি আকস্মিক ঝড়ের কবলে পড়ে। একপর্যায়ে তেঁতুলিয়া নদীর স্রোতে ট্রলারটি ১৫ থেকে ১৬ জন যাত্রী নিয়ে ডুবে যায়। এ সময় অনেকেই সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হলেও পাঁচজন নিখোঁজ হন। পরে স্থানীয় লোকজন লিপি বেগমের লাশ উদ্ধার করেন।

নিখোঁজ বর রাব্বির বাবা মনির হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের পর নববধূকে নিয়ে বাড়ি আসার পথে তেঁতুলিয়া নদীতে ঝড়ের কবলে পড়ে তাঁদের ট্রলারটি ডুবে যায়। ট্রলারে বর-কনেসহ তাঁরা ২০ জন ছিলেন। এখনো তাঁর ছেলেসহ চারজন নিখোঁজ আছেন।

Also Read: নববধূকে নিয়ে বাড়ি ফেরার আগেই ট্রলারডুবিতে নিখোঁজ বর

পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, ট্রলারডুবির খবর পেয়ে পটুয়াখালী থেকে নদী ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালায়। গতকাল নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান না পেয়ে সন্ধ্যার পর অভিযান বন্ধ করা হয়। আজ সকালে আবার ডুবে যাওয়া ট্রলার ও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে উদ্ধারকাজ শুরু করা হয়। তবে সারা দিন অভিযান চালিয়েও নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধান মেলেনি। এ সময় নিখোঁজদের স্বজন ও স্থানীয়রা তেঁতুলিয়া নদীর পাড়ে ভিড় করেন। স্থানীয় কয়েকজন নিজ উদ্যোগে নদীর বিভিন্ন জায়গায় নিখোঁজদের খোঁজাখুঁজি করেন। তাঁরা ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করেন।

পটুয়াখালী নদী ফায়ার স্টেশনের কর্মকর্তা মো. রেজওয়ান প্রথম আলোকে বলেন, ট্রলারডুবির খবর পেয়ে তাঁদের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালায়। আজ বরিশাল থেকে ফায়ার সার্ভিসের আরেকটি উদ্ধারকারী দল ঘটনাস্থলে এসে তাঁদের সঙ্গে উদ্ধারকাজে অংশ নেয়। তবে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত তাঁদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।

Also Read: পটুয়াখালীতে বরযাত্রীবাহী ট্রলারডুবি: বরসহ নিখোঁজ চারজনের খোঁজ মেলেনি

মো. রেজওয়ান আরও বলেন, আসলে ট্রলারটি যে জায়গায় ডুবেছিল, সাঁতরে ওঠা ব্যক্তিরা সেটি সঠিকভাবে চিহ্নিত করতে পারছেন না। এ ছাড়া তেঁতুলিয়া নদীতে প্রবল স্রোত ও গভীরতা বেশি থাকায় উদ্ধারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয়রা ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার করেছে। সন্ধ্যার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করা হবে।

দশমিনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ঘটনার পর থেকে তাঁরা ঘটনাস্থলে আছেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাফিজা নাজ নীরা বলেন, ট্রলারডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের উদ্ধারে আজ সকাল থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী ও দশমিনা ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটগুলো উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। ডুবে যাওয়া ট্রলারটি উদ্ধার হয়েছে। তিনি ঘটনাস্থলে আছেন উল্লেখ করে ইউএনও বলেন, নিখোঁজদের উদ্ধারে ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।