Thank you for trying Sticky AMP!!

কার্পেটিং উঠে গিয়ে শহীদ রীমু সরণির বিভিন্ন স্থানে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে । গত সোমবার জেলা ডিবির কার্যালয়ের সামনে

বেহাল সড়কে ভোগান্তি চরমে

কোথাও পিচঢালাই উঠে খোয়া বেরিয়ে গেছে। সড়কজুড়ে ছোট-বড় হাজারো গর্ত। সড়কে গাড়ি চলছে ঝাঁকুনি খেতে খেতে। মাঝেমধ্যে গাড়ি উল্টে পড়ার অবস্থা হয়। চারদিকে উড়ছে ধুলা। রিকশা দিয়ে যাওয়ার সময় ঝাঁকুনি খেয়ে এক যাত্রী বললেন, ‘ধুর, এ রাস্তায় গাড়িতে চড়ার থেকে হেঁটে যাওয়া ভালো।’

সাতক্ষীরা পোস্ট অফিস মোড় থেকে সরকারি কলেজ পর্যন্ত শহীদ রীমু সরণিটি (কলেজ সড়ক) চলাচলের উপযোগী নেই আর। রাস্তাটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময়ে স্থানীয় লোকজন আন্দোলন–সংগ্রাম করলেও কোনো লাভ হয়নি।

এলাকার লোকজন বলেন, সাতক্ষীরা-২ আসনের (সদর) সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান গত রোববার জাতীয় সংসদে এ সড়কের কথা উল্লেখ করে বলেন, অবস্থা এতটাই খারাপ যেকোনো অন্তঃসত্ত্বা নারী ওই রাস্তায় চলাচল করলে পথেই ‘ডেলিভারি’ (সন্তান প্রসব) হয়ে যাবে।

স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক শহীদ রীমু সরণি (কলেজ রোড)। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস, ইজিবাইক, মাহিন্দ্রাসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল করে। এ সড়কের দুই পাশে সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে, জেলা পোস্ট অফিস, জেলা জজের সরকারি বাসভবন, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার জেলা অফিস, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অফিস, জেলা সমবায় অফিস, জেলা টেলিফোন অ্যান্ড টেলিগ্রাম অফিস, উপজেলা সমাজসেবা অফিস ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। ফলে দিন-রাত এ সড়ক দিয়ে অসংখ্য মানুষ চলাচল করে থাকে।

গতকাল সোমবার দুপুরে সড়কের পোস্ট অফিস মোড় থেকে পুরোনো হাটখোলা মোড় পর্যন্ত ঘুরে দেখা গেছে, সড়কে পিচঢালাই নেই। গাড়ি চলাচল করছে হেলেদুলে। কোথাও কোথাও বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।

সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আমানউল্লাহ আল হাদী বলেন, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১৭ হাজার। কলেজটি শহীদ রীমু সরণির পাশেই অবস্থিত। প্রতিদিন হাজার হাজার শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ চলাচল করে ঝুঁকি নিয়ে। প্রায় সড়ক দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থীরা আহত হয়। তারপরও এ সড়ক চলাচলের উপযোগী করেনি পৌর কর্তৃপক্ষ।

সড়কের বামুনপাড়ার বাসিন্দা মঞ্জুর হাসান বলেন, সড়ক দিয়ে চলাচল করতে ভয় হয়। কখন গাড়ি উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। এ সঙ্গে ধুলায় বাড়িঘরে থাকাও কঠিন হয়ে পড়েছে।

জেলা বন্ধুসভার সভাপতি কর্ণ বিশ্বাস বলেন, শহীদ রীমু সরণিটি মেরামত করার জন্য বন্ধুসভার পক্ষ থেকে মানববন্ধন ও সভা করা হয়েছে। ওই সময় তৎকালীন পৌর মেয়র বন্ধুসভাকে চিঠি দিয়ে আশ্বস্ত করেছিলেন সড়কটি দ্রুত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করা হবে কিন্তু তিনি কথা রাখেননি।

পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ থেকে জানা গেছে, সাতক্ষীরা শহরের পোস্ট অফিস মোড় থেকে পুরোনো হাটখোলা মোড় পর্যন্ত শহীদ রীমু সরণি দৈর্ঘ্য ১ হাজার ৮১৪ মিটার। ২০১১-১২ সালে সম্পূর্ণ সড়কটি শেষবারের মতো পিচঢালাই করা হয়। একেবারে চলাচলে অনুপযোগী হয়ে পড়লে ২০২৩ সালে মার্চ মাসে সড়কটি সংস্কার করা হয়।

সাতক্ষীরা নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের নেতা ও বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার বলেন, নাগরিক আন্দোলন মঞ্চের পক্ষ থেকে শহীদ রীমু সরণিটি সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন, পৌরসভা ভবন ঘেরাও করা হয়েছে। তারপরও কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

সাতক্ষীরা পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র কাজী ফিরোজ হাসান বলেন, সড়ক নির্মাণের জন্য দরপত্রপ্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আশা করা হচ্ছে, আগামী মাসে এ সড়কসহ আরও ১০টি সড়কের দরপত্রের কাজ করা হবে।