Thank you for trying Sticky AMP!!

খুলনা মেডিকেল কলেজশিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষ, আহত ২৯

শিক্ষার্থী ও ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের পর খুলনা মেডিকেল কলেজের সামনে জটলা। গতকাল দিবাগত রাতে

খুলনা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ওষুধ ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল সোমবার রাত ৯টার দিকে হাসপাতালের সামনে এ সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তত ২০ শিক্ষার্থী ও ৯ জন ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন বলে উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এর মধ্যে তিন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর।

ওই ঘটনার প্রতিবাদে তাৎক্ষণিকভাবে কর্মবিরতি শুরু করেন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকেরা। অন্যদিকে হাসপাতালের সামনের ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত দুই পক্ষের এই কর্মসূচি অব্যাহত ছিল। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন সাধারণ রোগীরা। ওই এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বিপুলসংখ্যক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের দাবি, হাসপাতালের সামনের বিপ্লব মেডিসিন কর্নার নামের একটি দোকানে ওষুধ কিনতে যান প্রথম বর্ষের এক শিক্ষার্থী। কিন্তু ওই দোকান থেকে ওষুধটির দ্বিগুণ দাম চাওয়া হয়। এটা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেন দোকানের কর্মচারীরা। পরে ওই শিক্ষার্থী হোস্টেলে এসে অন্যদের বিষয়টি জানান। এরপর কয়েকজন শিক্ষার্থী ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করার কারণ জানতে দোকানে যান। এ সময় অন্য ব্যবসায়ীরা শিক্ষার্থীদের ওপর চড়াও হয়ে ব্যাপক মারধর করেন। এতে তাঁদের বিভিন্ন বর্ষের অন্তত ২০ জন শিক্ষার্থী আহত হন। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হলেও ২৯ ব্যাচের আনান, ৩১ ব্যাচের মাহাদি ও দেব চৌধুরীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে।

সংঘর্ষের সময় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল রাতে

ওষুধ ব্যবসায়ীদের দাবি, ওই শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর তিনি মোট দামের ওপর ১০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিলেন। তবে দোকানদার ওই কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দুজন বাগ্‌বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। এতে মেডিকেল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা এসে ওই দোকানে ভাঙচুর চালান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ওই ঘটনায় ৯ জন ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন।

ঘটনাস্থলে থাকা সোনাডাঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সুকান্ত দাস বলেন, ওষুধ ব্যবসায়ী ও মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ এসে তাৎক্ষণিক দুই পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বর্তমান এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

সংঘর্ষের পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আহত অবস্থায় সেখানে ২০ জন শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের চিকিৎসা দিতে তোড়জোড় করছেন চিকিৎসকেরা। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা কাজ করছে।

খুলনা মেডিকেল কলেজের উপাধ্যক্ষ চিকিৎসক অধ্যাপক মেহেদী নেওয়াজ বলেন, ‘ওষুধের দাম বেশি রাখার প্রতিবাদ করায় আমাদের শিক্ষার্থীদের খুব বাজেভাবে মারা হয়েছে। গুরুতর আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।’

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পাদক চিকিৎসক জ্যোতির্ময় বৈরাগী বলেন, কয়েকজন শিক্ষার্থীর অবস্থা খুবই মারাত্মক। শিক্ষার্থীদের ওপর যাঁরা হামলা করেছেন, তাঁদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি চলবে।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দোকান রয়েছে ওষুধ ব্যবসায়ী সমিতির কেন্দ্রীয় পরিচালক জিল্লুর রহমানের। তিনি বলেন, হামলার ঘটনায় ৯ জন ওষুধ ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। শিক্ষার্থীরা একটি দোকানে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছেন। অন্যান্য দোকানের শাটার ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘যেকোনো ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য আমাদের দোকানগুলো বন্ধ রাখা হয়েছে। হাসপাতাল ও কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’