Thank you for trying Sticky AMP!!

যমজ তিন মেয়েসহ চার সন্তানকে নিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম আরিফুলের

গত বছরের নভেম্বরে আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তারের কোলজুড়ে এসেছে তিন যমজ মেয়ে

দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালান আরিফুল ইসলাম। কখনো কৃষিশ্রমিকের কাজ করেন, আবার কখনো রাজমিস্ত্রির জোগালির কাজ করেন। বসতভিটা ছাড়া কোনো জমিও নেই তাঁর। অল্প আয় দিয়ে পাঁচ বছরের এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার চালাতে গিয়ে এত দিন হিমশিম খাচ্ছিলেন আরিফুল। এর মধ্যে গত বছরের নভেম্বরে আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তারের কোলজুড়ে এসেছে তিন যমজ মেয়ে। তিন সন্তানের জন্মের খবরে আরিফুল-সুমির বাড়িতে খুশির বন্যা বয়ে গিয়েছিল। কিন্তু এখন নবজাতকদের খাবার আর চিকিৎসা নিয়ে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন।

আরিফুল ইসলামের বাড়ি নাটোরের সিংড়া উপজেলা সদরের পৌরপাড়া এলাকায়। ছয় বছর আগে সুমিকে বিয়ে করেন আরিফুল। বিয়ের বছরখানেক পর তাঁদের সংসারের জন্ম প্রথম সন্তান। এরপর গত নভেম্বরে তাঁদের সংসারে নতুন অতিথি হয়ে আসে তিন যমজ মেয়ে পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা। ধীরে সন্তানেরা বড় হচ্ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে খরচ। এর মধ্যে বাজারে প্রায় সব নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে। সব মিলিয়ে সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন আরিফুল।

আরিফুল বলেন, ‘আল্লাহ দয়া করে ওদের আমাদের ঘরে পাঠাইয়েছেন। আমরা তো ফেলে দিতে পারি না। অনেক সময় নিজেরা না খেয়ে ওদের খাওয়াচ্ছি। কিন্তু পেরে উঠছি না। দুশ্চিন্তায় আছি। আয়রোজগার বাড়ানো না গেলে পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দেব, তা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে।’
দিনমজুরের কাজ করে আরিফুল প্রতিদিন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা উপার্জন করেন। তবে আরিফুরের দাবি, পদ্মা, মেঘনা ও যমুনার প্রতিদিন দুধের পেছনেই খরচই হয় প্রায় ৫০০ টাকা। এ অবস্থায় ধারদেনা করে দিন পার করছেন তিনি।

আরিফুলের স্ত্রী সুমি আক্তার বলেন, গরিবের সংসারে অন্যদের মতো তাঁরাও একটা ছেলেসন্তানের আশায় সন্তান নিয়েছিলেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় তিন যমজ মেয়ে জন্ম নিয়েছে। তাঁরা এতে অসন্তুষ্ট নন। নিজের সন্তানকে লালনপালন করতে যা করার, সবকিছুই চেষ্টা করছেন। কিন্তু দিন দিন খরচ বেড়ে যাচ্ছে। টাকার অভাবে এখন যমজ সন্তানদের ঠিকমতো খাওয়াতে পারছেন না।

আরিফুলের প্রতিবেশী লালন হোসেন বলেন, আরিফুল একজন হতদরিদ্র ব্যক্তি। দিনমজুরের কাজ করেই তাঁর সংসার চলে। আরিফুলের তিন ভাইও দিনমজুরের কাজ করেন। তাঁদের আর্থিক অবস্থাও ভালো নয়। তিন যমজ মেয়ে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে। তাদের পেছনে খরচও বাড়ছে। কিন্তু আরিফুলের আয়রোজগার তো বাড়ছে না। এ অবস্থায় সংসার চালানো আরিফুলের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আরিফুল ইসলামের পরিবারের অসহায়ত্বের বিষয়ে সম্প্রতি জানতে পেরেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা খাতুন। তিনি বলেন, ‘আমরা তাঁদের সন্তানদের খোঁজখবর নিচ্ছি। হতদরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া নবজাতকেরা যেন সুন্দরভাবে বেড়ে উঠতে পারে, সে জন্য উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করা হবে। পাশাপাশি সমাজের সচ্ছল মানুষদেরও পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’