Thank you for trying Sticky AMP!!

জমি নিয়ে বিরোধ থেকে হত্যা, ভিন্ন দিকে নিতে নির্বাচনী বিরোধের কথা প্রচার

নিহত রফিকুল ইসলাম

ময়মনসিংহ সদর উপজেলায় মারধরে নিহত রফিকুল ইসলামের (৫২) পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নির্বাচনের ক্যাম্প স্থাপনের বিরোধের জন্য নয়, জমিসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে রফিকুলের ভাই ও দুই ভাতিজা জড়িত। তাঁরা হত্যার ঘটনাটি ভিন্ন দিকে প্রবাহিত করার জন্য একে নির্বাচনসংক্রান্ত বিরোধ বলে প্রচার করেন।

নিহত রফিকুল উপজেলার সিরতা ইউনিয়নের কোনাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। গত মঙ্গলবার রাত আনুমানিক পৌনে ৯টার দিকে গ্রামের চৌরাস্তার মোড়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. আমিনুল হকের নির্বাচনী ক্যাম্পের সামনে ছোট ভাই মো. ফারুক এবং অপর ভাই ওয়াজ উদ্দিনের দুই ছেলে রাজু ও সাজুর মারধরে নিহত হন রফিকুল।

Also Read: ময়মনসিংহে ‘নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র স্থাপন’ নিয়ে মারধরে একজনের মৃত্যু

এ ঘটনায় নিহত রফিকুল ইসলামের মেয়ে রিক্তা আক্তার গতকাল বুধবার ময়মনসিংহ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলায় চাচা মো. ফারুক, আরেক চাচা ওয়াজ উদ্দিনের স্ত্রী মর্জিনা খাতুন, ওয়াজ উদ্দিনের দুই ছেলে রাজু ও সাজুকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারেও জমিসংক্রান্ত বিরোধের কারণে হত্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। নির্বাচনসংক্রান্ত বিরোধের বিষয়টি তাতে উল্লেখ করা হয়নি। মামলার পরপরই অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে রফিকুলের বাড়িতে গিয়ে কথা হয়, তাঁর স্ত্রী খালেদা বেগম, মেয়ে রিক্তা আক্তার, ছেলে হৃদয় হোসেনসহ স্বজন ও গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে। তাঁরা জানান, মঙ্গলবার রাতে কোনাপাড়া চৌরাস্তার মোড়ে আমিনুল হকের নির্বাচনী ক্যাম্পের সামনে দিয়ে রফিকুল বাড়ি ফিরছিলেন। ওই সময় সাজু ও রাজু রফিকুল ইসলামকে উদ্দেশ্য করে গালাগালি শুরু করেন। পরে রফিকুল ক্ষিপ্ত হয়ে গালাগালির কারণ জানতে চাইলে ফারুক, সাজু ও রাজু মিলে রফিকুলকে মারধর করতে শুরু করেন। মুঠোফোনে মারধরের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রফিকুলের ছেলে হৃদয় হোসেন। পরে হৃদয়কেও মুঠোফোন দিয়ে মেরে কপাল ফাটিয়ে দেন তাঁরা। রফিকুলকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

Also Read: ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তর্কাতর্কির জেরে যুবককে কুপিয়ে হত্যা

মামলার বাদী রফিকুলের মেয়ে রিক্তা আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর স্বামী জয়নাল আবেদিন ১০ বছর আগে তাঁর চাচা ফারুকের (রফিকুলের ভাই) কাছ থেকে ৭ লাখ টাকায় জমি কেনেন। ওই জমি লিখে দিলেও জমির দাগ নম্বর ইচ্ছাকৃতভাবে ভুল করেন ফারুক। গত দুই বছর ধরে ওই জমির জন্য ফারুক আবারও রিক্তার কাছে টাকা দাবি করেন। এক বছর আগে ফারুককে খুশি করতে আরও ৭৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। কিন্তু এরপর ফারুক আরও টাকা দাবি করতে শুরু করেন। টাকার জন্য প্রায়ই হুমকি দিতেন। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিস হলেও সমাধান হয়নি। এ বিরোধের জের ধরেই পরিকল্পিতভাবে তাঁর বাবা রফিকুলকে হত্যা করে নির্বাচনের ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে বিরোধ বলে প্রচার করেন হত্যাকারীরা।

Also Read: নাটোরের আলোচিত খাইরুল হত্যা মামলায় ১৩ জনের যাবজ্জীবন

রফিকুলের ছেলে হৃদয় হোসেন বলেন, ‘এ হত্যার পরিকল্পনা আগে থেকেই করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। বিস্তারিত পুলিশকে বলেছি।’

রফিকুল ইসলাম হত্যার পর থেকে আসামিরা পলাতক। আজ অভিযুক্ত ফারুক, সাজু ও রাজুর বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।

ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দীন আজ সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে নির্বাচনী ক্যাম্প নিয়ে বিরোধের কিছু পাওয়া যায়নি। পুলিশ গতকাল আসামি মর্জিনা খাতুনকে গ্রেপ্তার করেছে।

Also Read: নান্দাইলে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ছাত্রলীগ নেতাকে বইঠা দিয়ে মারধরের অভিযোগ