Thank you for trying Sticky AMP!!

মাদারীপুরে ৫০টি স্থানে বড় পর্দায় দেখানো হবে ফাইনাল

মাদারীপুর শহরের বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় দেখানো হবে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতির ফাঁকে আর্জেন্টিনার সমর্থকেরা। আজ সকালে শহরের মিলন হল এলাকায়

মাদারীপুর শহরের মিলন হল এলাকার বাসিন্দা রাজীব মাহামুদ আর্জেন্টিনা ফুটবল দলের পাঁড় সমর্থক। কাতার বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার প্রথম ম্যাচ থেকে প্রতিটি খেলা তিনি বাড়ির সামনে বড় পর্দা টাঙিয়ে দেখেছেন। যেসব দিনে আর্জেন্টিনার খেলা ছিল, সেসব দিনে ছিল খাওয়াদাওয়ার বিশেষ আয়োজন। রাজীব মাহামুদের স্বপ্ন, এবার লিওনেল মেসির দল আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন ট্রফি জিতবে। সেই স্বপ্নপূরণের আর মাত্র এক ধাপ বাকি।

আজ রোববার রাত নয়টায় মাঠে নামছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স ও ফুটবলের অন্যতম পরাশক্তি আর্জেন্টিনা। ফাইনাল খেলা উপলক্ষে রাজীব মাহামুদের আনন্দ-উচ্ছ্বাস যেন আরও বেড়েছে। একসঙ্গে খেলা দেখবেন ৩০০ থেকে ৪০০ ফুটবলপ্রেমী। জয়-পরাজয় যা–ই হোক, সবার জন্যই থাকছে খিচুড়ি ভোজের আয়োজন।

রাজীব মাহামুদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলে, স্ত্রী, বোনসহ পরিবারের সবাই আর্জেন্টিনার অন্ধ ভক্ত। সবাই বড় পর্দায় একসঙ্গে খেলা দেখি। সঙ্গে এলাকার সব বয়সী মানুষও খেলাটা উপভোগ করেন। আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, ফ্রান্স, স্পেনের মতো বড় দলের কোনো খেলাই মিস করিনি। সব দেখেছি। আমার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস, মেসির হাতে এবার বিশ্বকাপের ট্রফিটা উঠবে। বিশ্বকাপটা এবার আর্জেন্টিনার হবে।’

Also Read: ব্রাজিল সমর্থন করলেও মেসির হাতে শিরোপা দেখতে চান তাঁরা

শহরের মিলন হল ছাড়াও বড় পর্দায় ফাইনাল খেলা দেখার আয়োজন চলছে জেলার অন্তত ৫০টি স্থানে। খেলা শেষে প্রিয় দলের পতাকা হাতে নিয়ে বিজয় মিছিলের প্রস্তুতি নিয়েছেন ফুটবলপ্রেমীরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মাদারীপুর শহরের কলেজ সড়ক এলাকায় তিনটি স্থানে স্থানীয় যুবকেরা বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেছেন। এ ছাড়া পুরান বাজার স্বর্ণকারপট্টি, বাদামতলা, নিরাময় হাসপাতালের সামনে, সদর উপজেলা পরিষদের সামনে, কুলদ্বীপ, লেকপাড় রুবেল পয়েন্টে, চরমুগরিয়া, সরকারি মাদারীপুর কলেজ মাঠে, জেলা পরিষদের সামনে, মাদারীপুর পৌরসভা চত্বর, ইটেরপুল, থানতলি, চৌরাস্তাসহ শহরের বিভিন্ন স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর প্রস্তুতি চলছে।

শহরের শকুনি লেকপাড়ের রুবেল পয়েন্টে বড় পর্দায় খেলা দেখার আয়োজন করেছেন স্থানীয় কয়েকজন তরুণ। তাঁদের একজন শামীম আহমেদ বলেন, ‘ফুটবল খেলা ভালোবাসি। এ জন্য আমরা কয়েকজন নিজেদের মধ্যে চাঁদা তুলে খেলা দেখার আয়োজন করেছি। আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার। সৌদি আরবের সঙ্গে প্রথম ম্যাচ হেরেও ফাইনালে আমরা আসতে পেরেছি। এটাই বড় পাওয়া। এখন জয়-পরাজয় দুটোই মেনে নেব।’

Also Read: খেলা দেখার আয়োজন করেছে আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল সমর্থকেরা আমন্ত্রিত

শহরের চৌরাস্তা এলাকার বাসিন্দা নূরে আলম ব্রাজিলের পাঁড় সমর্থক। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত তাঁর সঙ্গে আর্জেন্টিনা সমর্থকদের তর্কবিতর্ক লেগেই ছিল। কিন্তু নূরে আলমের দল ক্রোয়েশিয়ার কাছে হেরে যাওয়ার পর তিনি এখন ফ্রান্সকে সমর্থন দিয়েছেন। বড় পর্দায় ফাইনাল খেলা প্রসঙ্গে নূরে আলম বলেন, ‘আর্জেন্টিনার মেসি খুবই ভালো খেলে, এটা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্সও কোনো অংশে কম নয়। এখানে এমবাপ্পের মতো দারুণ খেলোয়াড় আছে। ব্রাজিল হেরেছে ভাগ্যের কাছে। নিজ দলের হার মেনেও নিয়েছি। কিন্তু কোনো খেলা মিস করিনি। আজ ফাইনালে দুটি ভালো দল খেলবে। আমরা শৈল্পিক ফুটবল খেলা দেখতে পারব, এটার জন্যই বড় পর্দায় আমাদের এই বিশেষ আয়োজন।’

এদিকে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা কেন্দ্রে করে যেকোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা। জেলা পুলিশ সুপার মো. মাসুদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল মানেই উৎসব। সবার মধ্যে উৎসবের আমেজ কাজ করছে। জেলায় বেশ কয়েকটি স্থানে বড় পর্দায় খেলা দেখার ব্যবস্থা করেছেন স্থানীয় ব্যক্তিরা। ফাইনাল খেলায় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে কথা–কাটাকাটি থেকে সংঘর্ষে রূপ নিতে পারে। এর জন্য আমাদের পুলিশ সতর্ক অবস্থানে আছে। খেলা চলাকালীন কিংবা পরবর্তী সময়ে পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।’