Thank you for trying Sticky AMP!!

যাত্রীশূন্য দৌলতদিয়া লঞ্চঘাট, অলস সময় কাটছে চালক-শ্রমিকদের

যাত্রীশূন্য দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাট। যাত্রীর অভাবে অধিকাংশ সময় অলস সময় কাটছে লঞ্চের চালক–শ্রমিকদের। রোববার দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার যাত্রীশূন্য দৌলতদিয়া ঘাটে অলস সময় পার করছেন লঞ্চের চালক-শ্রমিকেরা। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকে এ অচলাবস্থা। এ ছাড়া শুক্রবার মধ্যরাত থেকে নতুন করে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় যাত্রীসংখ্যা আরও কমেছে। আগে প্রতি ২০ থেকে ২৫ মিনিট পরপর একটি লঞ্চ ছেড়ে গেলেও যাত্রীস্বল্পতায় এখন পৌনে এক ঘণ্টার আগে ঘাট থেকে লঞ্চ ছাড়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এতে লোকসানে পড়েছেন লঞ্চের মালিকেরা।

সরেজমিন দেখা গেছে, পন্টুনের সঙ্গে সারি সারি লঞ্চ বেঁধে রাখা। যাত্রী না থাকায় সুনসান নীরবতা ঘাটে। দীর্ঘক্ষণ পরপর স্বল্পসংখ্যক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাট থেকেও হাতে গোনা কয়েকজন যাত্রী নিয়ে ঘাটে ভিড়ছে লঞ্চ।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) আরিচা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ও আরিচা-নগরবাড়ি নৌপথে ২৫টি লঞ্চ চলাচল করে। এর মধ্যে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৭টি লঞ্চ চলে। প্রতিদিন দুই ঘাটে ২৫ থেকে ৩০ হাজার যাত্রী পারাপার হতেন। বিশেষ করে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া ঘাটে সব সময় যাত্রীদের চাপ ছিল। তবে পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া ফেরিঘাটে দূরপাল্লার পরিবহনের পাশাপাশি পণ্যবাহী গাড়ি, ব্যক্তিগত গাড়ি কমেছে। সেই সঙ্গে নদী পার হওয়া যাত্রীদের চাপও কমেছে।

ফরিদপুরের মধুখালী এলাকার বাসিন্দা কাওছার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঘাট একেবারে ফাঁকা হয়ে গেছে। তিনি মধুখালী থেকে লোকাল বাসে দৌলতদিয়া ঘাটে নামেন। নদী পার হওয়ার পর পাটুরিয়া থেকে বাসে নবীনগর দিয়ে গাজীপুরে যাবেন। লঞ্চ ছাড়ার অপেক্ষায় ঘাটে প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা বসে আছেন। যাত্রী না থাকায় ঘাট থেকে লঞ্চও ছাড়ছে না।

এমভি টুম্পা লঞ্চের চালক ঠান্ডু মিয়া বলেন, ‘আগে ২০ মিনিট পরপর শতাধিক যাত্রী নিয়ে ঘাট ছেড়ে যেতাম। এখন প্রায় এক ঘণ্টা অপেক্ষা করেও মাত্র ৩০ থেকে ৪০ জন যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ছাড়তে হচ্ছে। মাঝেমধ্যে তেলের খরচও উঠছে না। এখন নতুন করে তেলের দাম বাড়ায় লঞ্চ চালু রাখাই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে বসে থাকতে হচ্ছে।’

লঞ্চঘাটের টিকিট কাউন্টারে থাকা আফজাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু চালুর আগে ঘাট দিয়ে প্রতিদিন ২০ হাজারের মতো যাত্রী পারাপার হতেন। এখন পাঁচ হাজারের মতো যাত্রী পারাপার হচ্ছেন। লঞ্চঘাটে কর্মরত মালিক সমিতি ও ঘাট ইজারাদারের লোকজনের প্রতিদিনের হাজিরার টাকা ওঠানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। অনেককে চাকরি থেকে ছাঁটাই করতে বাধ্য হচ্ছে কর্তৃপক্ষ।

আরিচা লঞ্চ মালিক সমিতির দৌলতদিয়া ঘাটের তত্ত্বাবধায়ক নূরুল আনোয়ার বলেন, যাত্রীশূন্য দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া লঞ্চঘাট। লঞ্চের জন্য আগে ঘাটে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যাত্রীরা অপেক্ষা করতেন। আর এখন যাত্রীস্বল্পতায় লঞ্চ ছাড়া যাচ্ছে না। বর্তমানে ফেরিঘাটে কোনো গাড়ি দাঁড়াচ্ছে না। এতে লঞ্চঘাটের যাত্রী আরও কমে গেছে।

বিআইডব্লিউটিএর আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক পরিদর্শক আফতাব হোসেন বলেন, যাত্রী কমে গেলেও জনস্বার্থে লঞ্চ পারাপার স্বাভাবিক আছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ১৭টি লঞ্চ চালু রয়েছে।