Thank you for trying Sticky AMP!!

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের বিভিন্ন স্থানের পলেস্তারা খসে পড়েছে। পিলারগুলোতে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। সম্প্রতি তোলা ছবি

পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান

বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সরকারি এই বিদ্যালয়ের ভবন ২০১৫ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। কিন্তু আজও এটি সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

ভবনটির অনেক অংশ ধস পড়েছে। ভবনের বিভিন্ন স্থানের বিম এবং পলেস্তারা খসে পড়ে রড বের হয়ে আছে। এই জরাজীর্ণ অবস্থা বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জল্লা ইউনিয়নের বাহেরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনের। ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় আট বছর আগে এই ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ। তবে বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় এই ভবনেই ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন শিক্ষকেরা।

স্থানীয় কয়েকজন বলেছেন, ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে এটি যেকোনো সময় সম্পূর্ণভাবে ধসে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই অনেক অভিভাবক তাঁদের সন্তানদের এই বিদ্যালয়ে পাঠাতে চান না।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. মোজাম্মেল সিকদার জানান, ১৯৪০ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১৯৯৪-৯৫ অর্থবছরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য তিন কক্ষবিশিষ্ট একতলা পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়। বিদ্যালয় ভবনটি প্রতিষ্ঠার ২৭ বছর পরও কোনো সংস্কার হয়নি। বর্তমানে বিদ্যালয়ে ২০০ জন শিক্ষার্থী আছে। বিদ্যালয়টি পরিত্যক্ত ঘোষণা হওয়ার পরও শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে ক্লাস করছে। শিক্ষকেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করছেন। বিদ্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনটি সংস্কারের জন্য উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয়নি।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মেহজামিন রহমান, মিনহাজুল আরেফিন বলে, ‘স্যার এইহানে বইয়া লেহাপড়া করতে মোরা ভয় পাই। ছাদ ভাইঙ্গা মোগো গায়ে পড়ে—মোরা আহত অই।’ অভিভাবক মো. সেলিম সিকদার ও শাহনাজ পারভীন বলেন, ‘পরিত্যক্ত ভবনে ক্লাস নেওয়া হয়। এ কারণে আমরা সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাই।’

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের তিন কক্ষবিশিষ্ট পরিত্যক্ত ভবনটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চলছে। ভবনটির প্রতিটি পিলারে বড় বড় ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ভবনের সামনের অংশের বিম ভেঙে গেছে। বিদ্যালয়ের ভেতরের বিমগুলোর অবস্থাও করুণ। যেকোনো সময় ভবনটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বিদ্যালয়ের তিনটি কক্ষের একটি দাপ্তরিক ও অপর দুটিতে পাঠদান করা হয়। তৃতীয় শ্রেণির পাঠদান কক্ষে দেখা গেছে, কক্ষটির বিমের ও ছাদের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়ছে। দ্বিতীয় শ্রেণির পাঠকক্ষের অবস্থা আরও নাজুক। বিদ্যালয়ের বাইরে একটি বাড়ির মধ্যে নোংরা পরিবেশে একটি পরিত্যক্ত দোচালা টিনের ঘরে পাঠদান চলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান।

এ বিষয়ে উজিরপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তাসলিমা বেগম বলেন, ‘বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকেরা বিষয়টি লিখিতভাবে আমাকে জানিয়েছে। বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনওসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।’