Thank you for trying Sticky AMP!!

যে মায়ের জন্য মোস্তাকিমের গ্রেপ্তার, কারাভোগ, সেই মা আর নেই

মো. মোস্তাকিম

মো. মোস্তাকিমের মা নাসরিন আক্তারের (৫৫) দুটি কিডনিই বিকল। সপ্তাহে ডায়ালাইসিস করাতে হতো তিনবার। একমাত্র অবলম্বন মাদ্রাসাপড়ুয়া ২২ বছর বয়সী ছেলে মো. মোস্তাকিম। তাঁর টিউশনির টাকাতেই চলত নাসরিন আক্তারের ডায়ালাইসিসের খরচ। গত বছরের ১০ জানুয়ারি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডায়ালাইসিসের খরচ বাড়ানোর প্রতিবাদ করতে গিয়ে গ্রেপ্তার হন মোস্তাকিম। পাঁচ দিন পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। কিন্তু যে মায়ের জন্য মোস্তাকিম মামলা, গ্রেপ্তার ও কারাভোগ করেছেন, সেই মা আর নেই। গতকাল সোমবার রাতে নগরের একটি হাসপাতালে নাসরিন আক্তার মারা যান।

মো. মোস্তাকিম প্রথম আলোকে বলেন,  মাকে আজ মঙ্গলবার ডায়ালাইসিস করার পূর্বনির্ধারিত দিন ছিল। কিন্তু গতকাল রাতে মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। রাতেই তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আর সেখানে তিনি রাতে মারা যান। পরে মাকে গ্রামের বাড়ি ফটিকছড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জোহরের নামাজের পর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর লাশ দাফন করা হয়েছে।

Also Read: ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো একমাত্র ছেলেটি কারাগারে, দিশাহারা মা

উল্লেখ্য, গত বছরের ১০ জানুয়ারি ডায়ালাইসিস ফি বৃদ্ধি এবং সরকারিভাবে ভর্তুকি কমিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের সামনের সড়কে কিডনি রোগী ও স্বজনদের বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁকেসহ অজ্ঞাতপরিচয়ের ৫০ থেকে ৬০ জন রোগীর স্বজনকে আসামি করে সরকারি কাজে বাধাদান ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে মামলা করে পুলিশ। পরে প্রথম আলোর অনলাইন ও প্রিন্টে ‘ডায়ালাইসিসের খরচ জোগানো একমাত্র ছেলেটি জেলে, দিশাহারা মা’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

মা নাসরিন আক্তার

Also Read: ‘ওসি স্যারের সঙ্গে আর বেয়াদবি করবি?’

এরপর ওই মায়ের সঙ্গে বিভিন্ন ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান যোগাযোগ করে আর্থিক সহায়তা ও ডায়ালাইসিসের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। মোস্তাকিমকে হিউম্যান রাইটস ফাউন্ডেশন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইনি সহায়তা দেয়। আদালতে তাঁর জামিন আবেদনে প্রথম আলোর প্রকাশিত প্রতিবেদনের কথা তুলে ধরা হয়। পাঁচ দিন পর জামিনে মুক্তি পান তিনি। এরপর ২০ ফেব্রুয়ারি নগরের পাঁচলাইশ থানার ওসি নাজিম উদ্দিন মজুমদারসহ দুই পুলিশের বিরুদ্ধে থানায় নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেন মোস্তাকিম। পরে তদন্ত শেষে সিআইডি এই মামলায় আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয়। এটির বিরুদ্ধে নারাজি আবেদন করলেও তা নামঞ্জুর হয়।