Thank you for trying Sticky AMP!!

‘আল্লাহ কেন এত তাড়াতাড়ি আমার মানিকের প্রাণটা নিয়ে নিল’

মালয়েশিয়ায় নিহত দুই তরুণ জাহেদুল ইসলাম খান ও সাজ্জাদ হোসেন (ডানে)

মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে মাটি চাপা পড়ে নিহত শরীয়তপুরের দুই তরুণের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়েছে। আজ বুধবার দুপুরে স্বজনেরা তাঁদের মরদেহ গ্রামের বাড়িতে দাফন করেছেন।

নিহত দুই তরুণ হলেন শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের জাহেদুল ইসলাম খান (২০) ও জাজিরার আহাদ্দি মাদবরকান্দি এলাকার সাজ্জাদ হোসেন (২০)। তাঁদের স্বজনেরা জানান, ২ নভেম্বর মালয়েশিয়ার কেলানতাং রাজ্যের মাচাং জেলার একটি এলাকায় অন্য শ্রমিকদের সঙ্গে সড়কের মাটি খননের কাজ করছিলেন জাহেদুল ও সাজ্জাদ। মালয়েশিয়ার সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সেখানে ওই দুজনসহ তিন বাংলাদেশি শ্রমিক মাটি চাপা পড়েন। ঘটনাস্থলেই তাঁদের মৃত্যু হয়। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ তাঁদের মরদেহ উদ্ধার করে মাচাংয়ের একটি হাসপাতালে রেখেছিল।

সাজেদুল ও সাজ্জাদের আত্মীয় শফিক লিবলু ব্যাপারী গতকাল মঙ্গলবার মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসের একটি বিমানে করে তাঁদের লাশ নিয়ে দেশে ফেরেন। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পৌঁছানোর পর আজ সকালে স্বজনেরা তাঁদের মরদেহ গ্রামে নিয়ে যান।

ওই দুই তরুণ যে কোম্পানিতে কাজ করতেন, দূতাবাসের মধ্যস্থতায় তাদের থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেছে।

শফিক লিবলু ব্যাপারী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাহেদুল ও সাজ্জাদের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য হাইকমিশনে আবেদন করা হয়েছিল। তাদের সহযোগিতায় দুই স্বজনের লাশ নিয়ে গ্রামে পৌঁছেছি। ওরা যে কোম্পানির অধীনে কাজ করত, তারা কিছু আর্থিক সহায়তা দিয়েছে এবং ওদের দেশে ফিরিয়ে আনার যাবতীয় খরচ বহন করেছে।’

ওই দুই তরুণের পরিবারের সদস্যরা জানান, জাহেদুল সংসারের দারিদ্র্য দূর করতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর এবং সাজ্জাদ ভালো আয়ের স্বপ্ন নিয়ে গত ফেব্রুয়ারিতে মালয়েশিয়ায় যান। জাহেদুলের লাশ আজ দুপুরে শরীয়তপুর সদর উপজেলার দক্ষিণ কেবলনগর গ্রামের বাড়িতে দাফন করেছেন স্বজনেরা। আর সাজ্জাদের লাশ বাড়ির পাশের একটি মাদ্রাসার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

জাহেদুলের মা আলেয়া বেগম বলেন, ‘জাহেদুলের নিথর দেহ ফিরে পেয়েছি। আল্লাহ কেন এত তাড়াতাড়ি আমার মানিকের প্রাণটা নিয়ে নিল? আমি এখন কী নিয়া বাঁচুম...।’

সাজ্জাদের মা নুরজাহান বেগম বলেন, ‘১০ মাস পর ছেলের প্রাণহীন মুখটা দেখছি। কষ্টে আমার বুকটা ফেটে যাচ্ছে। ছেলে ভাগ্যবদলের জন্য বিদেশে গেছিল। এটাই যে ওর জীবনের শেষ যাওয়া হবে, তা বুঝতে পারি নাই।’

শরীয়তপুর সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র প্রথম আলোকে বলেন, ‘মালয়েশিয়ায় কাজ করতে গিয়ে শরীয়তপুরের যে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে, দূতাবাসের সহায়তায় তাঁদের লাশ দেশে আনা হয়েছে। ওই দুই তরুণ যে কোম্পানিতে কাজ করতেন, দূতাবাসের মধ্যস্থতায় তাদের থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া গেছে। এখন ওই দুই তরুণের পরিবারের আরও কোনো সহায়তার প্রয়োজন হলে আমরা পাশে থাকব।’