Thank you for trying Sticky AMP!!

শিবালয়ে যমুনা থেকে অবাধে মাটি উত্তোলন 

নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী। তাঁদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে ভয় পান স্থানীয় বাসিন্দারা।

খননযন্ত্র দিয়ে অবৈধভাবে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। সম্প্রতি মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা বন্দরের পাশে নেহালপুর এলাকায়

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা নদীবন্দরের পাশে যমুনা নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছে। খননযন্ত্র দিয়ে দেদার মাটি উত্তোলনের কারণে নদীর তীরঘেঁষা স্থানীয়ভাবে গুরুত্বপূর্ণ আরিচা-তেওতা সড়কে ভাঙনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া ওই সড়কের পাশের নেহালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েকটি বসতবাড়িও ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। 

উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে কয়েক দফা ওই এলাকায় অবৈধভাবে মাটি তোলার কাজে ব্যবহৃত খননযন্ত্র ও পাইপ ধ্বংস করলেও মাটি উত্তোলন বন্ধ হয়নি। অভিযানের পর দুই থেকে তিন দিন মাটি উত্তোলন বন্ধ থাকলেও পরে আবার তা শুরু হয়। 

বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁদের কিছু বলতে সাহস পান না স্থানীয় বাসিন্দারাও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেহালপুরের নদীর পাড়ের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমরা অসহায় মানুষ। কিছু বললেই আমাদের হুমকিধমকি দেয়। এভাবে নদী থেকে ড্রেজার (খননযন্ত্র) দিয়ে মাটি তুললে আগামী বর্ষায় আমাগো বাড়িঘর নদীতে চইল্যা যাইতে পারে। ভয়ে ওনাগো (মাটি উত্তোলনকারী) কিছু কউনও যায় না।’ 

সম্প্রতি সরেজমিন দেখা যায়, আরিচা ফেরিঘাটের উত্তরে নেহালপুর এলাকায় প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ গজের মধ্যে নদী থেকে পাঁচটি খননযন্ত্র দিয়ে বালুমাটি তোলা হচ্ছে। এসব মাটি লোহা ও প্লাস্টিকের পাইপ দিয়ে নদীর তীরে এবং আরিচা-তেওতা সড়কের পূর্ব পাশে স্তূপ করে রাখা হচ্ছে। এরপর এসব মাটি ড্রাম ট্রাকে করে বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়া পাইপের মাধ্যমে এক থেকে তিন কিলোমিটার এলাকার মধ্যে বিভিন্ন ডোবা ও নিচু জমিতে বালু ফেলে ভরাট করা হচ্ছে। 

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তেওতা ইউপির ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মাসুদ রানা ও তাঁর ছোট ভাই জুয়েল রানা একটি, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি সেলিম রেজা একটি, সদ্য সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হুদা ওরফে নয়ন একটি, উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি মশিউর রহমান ওরফে সিকো একটি, ছাত্রলীগ নেতা মো. মুন্নাসহ তাঁর কয়েকজন সহযোগী একটি খননযন্ত্র বসিয়েছেন। 

বালুমাটি তোলার বিষয়ে জানতে চাইলে জুয়েল রানা ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ‘কেন এসেছেন এখানে! চলে যান, নইলে আপনার সমস্যা হবে।’ মুঠোফোনে মাসুদ রানা বলেন, ‘এলাকার উন্নয়নের জন্য নদী থেকে মাটি তুলছি। সবাইকে ম্যানেজ করেই তুলছি।’ 

মাটি তোলার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা নেই দাবি করে মশিউর রহমান বলেন, ‘আমার নাম হয়তো কেউ বলতে পারে। তবে এর সঙ্গে আমি জড়িত নেই।’ এ ছাড়া সেলিম রেজার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি। 

 উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাহিদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, নদী থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যেই অভিযান পরিচালনা করা হয়। এর আগে নেহালপুর এলাকায়ও কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার মাধ্যমে এসব খননযন্ত্র ও পাইপ ধ্বংস করা হয়েছে। এর পরও কেউ কেউ মাটি তোলার সঙ্গে জড়িত থাকতে পারেন। খোঁজ নিয়ে এসব মাটি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবেযে