Thank you for trying Sticky AMP!!

মনোনয়ন না দিতে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের ৪ মনোনয়নপ্রত্যাশী, পাল্টা চ্যালেঞ্জ সংসদ সদস্যের

নিকলীতে গত শনিবার সমাবেশ করে সংসদ সদস্য আফজাল হোসেনের বিরুদ্ধে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েছেন চার মনোনয়নপ্রত্যাশী। এ ঘটনায় পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছেন সংসদ সদস্য

কিশোরগঞ্জ-৫ (বাজিতপুর-নিকলী) আসনের সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেনকে আগামী নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান না আওয়ামী লীগের চারজন মনোনয়নপ্রত্যাশী। কয়েক মাস ধরে তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে বর্তমান সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে সভা-সমাবেশ করছেন। তাঁদের একটিই স্লোগান, ‘পরিবর্তন’। এ নিয়ে সংসদ সদস্য এত দিন খুব বেশি প্রতিক্রিয়া না দেখালেও পাল্টা চ্যালেঞ্জ জানাতে এবার মাঠে নেমেছেন তিনি।

কাল বুধবার বিকেলে বাজিতপুরে সমাবেশ ডেকেছেন সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন। ডাকবাংলো মাঠে অনুষ্ঠিতব্য সমাবেশটি বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ডাকা হলেও তা নিজের নির্বাচনী মহড়া বলে জানিয়েছেন তিনি। সংসদ সদস্যের অনুসারী নেতা-কর্মীদের ভাষ্য, কালকের সমাবেশে সর্বোচ্চ জনসমাগম করে দলীয় প্রতিপক্ষের দেওয়া চ্যালেঞ্জের জবাব দেওয়া হবে।

জানতে চাইলে সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জামায়াত-বিএনপির নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ ডাকা হলেও মূলত এটি আমার নির্বাচনী শোডাউন। কালকের শোডাউন দেখার পর যাঁরা আমার পরিবর্তন চান, হয়তো তাঁরা আর পরিবর্তন চাইবেন না। ধারণা হবে, পরিবর্তন চাওয়া মানুষের সংখ্যা চার আর আমাকে ধরে রাখতে চান লাখো মানুষ।’

গত শনিবার নিকলীতে সমাবেশ করেন আওয়ামী লীগের চার মনোনয়নপ্রত্যাশী। ওই সমাবেশে তাঁদের মূল বক্তব্য ছিল, তাঁরা আর আফজাল হোসেনকে আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য হিসেবে দেখতে চান না। তাঁকে (আফজাল) বাদ দিয়ে তাঁদের কাউকে মনোনয়ন দিলে তাঁরা মেনে নেবেন। ২৬ অক্টোবর বাজিতপুরে সমাবেশ ডেকেছে পক্ষটি।

সংসদ সদস্য মো. আফজাল হোসেন

সংসদ সদস্যের পরিবর্তন ইস্যুতে জোটবদ্ধ হওয়া নেতারা হলেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুব্রত পাল, ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অজয় কর, জেলা কৃষক লীগের সাবেক সহসভাপতি ফারুক আহমদ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শেখ রফিকুন্নবী। চারজনের মধ্যে অজয় করের বাড়ি নিকলী। বাকি তিনজনের বাড়ি বাজিতপুর।

নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আফজাল হোসেন টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। প্রথমবার সংসদ সদস্য হওয়ার পর দলে বিভাজন দেখা দেয়। একটি পক্ষ আফজালের বিরুদ্ধে দলীয় কর্মসূচি পালন করতে থাকে। দ্বিতীয়বার সংসদ সদস্য হওয়ার পর দলীয় রাজনীতিতে আফজালের একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠিত হয়। তখন আফজালবিরোধী পক্ষটি কিছুটা কোণঠাসা হয়ে পড়ে। নির্বাচনে আগে পক্ষটি ‘পরিবর্তন’ ইস্যুতে এক মঞ্চে এলেও সফল হয়নি। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর পক্ষটি আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ে। ওই পক্ষ নতুন করে আবার মাঠে সরব হয়েছে। তাদের চ্যালেঞ্জ জানাতে বাজিতপুরে সমাবেশ ডেকেছেন সংসদ সদস্যের অনুসারী নেতা-কর্মীরা।

সংসদ সদস্যের অনুসারী হিসেবে পরিচিত বাজিতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এক মঞ্চে দাঁড়িয়ে চারজন পরিবর্তন চাইলেই পরিবর্তন আনা যায় না। এ জন্য প্রয়োজন জনসমর্থন ও যোগ্যতা। আফজাল ভাইয়ের প্রতি মানুষের ভালোবাসা আছে কি না, তা কালকের সমাবেশে প্রমাণিত হবে।’ তিনি বলেন, ইতিমধ্যে সমাবেশের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। কালকের সমাবেশে অন্তত ৫০ হাজার মানুষের সমাগম হবে।

চার মনোনয়নপ্রত্যাশীর একজন ফারুক হোসেন। তিনি বলেন, বাজিতপুর-নিকলীতে এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতি নেই। শুধু আফজালের রাজনীতি আছে। টানা তিনবারের শাসনামলে বাজিতপুর ও নিকলীবাসী কেবল সংসদ সদস্যের মামা, ভাগনে, ভাইয়ের রাজত্ব দেখেছেন। আত্মীয়দেরœরাজত্বের কারণে বাজিতপুর-নিকলীতে উন্নয়ন হয়নি। পরিবর্তন ছাড়া এভাবে দল রক্ষা করা যাবে না।