Thank you for trying Sticky AMP!!

৯ হাজার টাকার জন্য হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন না প্রসূতি

বকেয়া পরিশোধ করতে না পারায় নবজাতক মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছেন না পিরোজপুরের রিমা আক্তার

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে অন্তঃসত্ত্বা রিমা আক্তারের (২০) অস্ত্রোপচার হয়। ওষুধ, অস্ত্রোপচার ও ক্লিনিকের শয্যাভাড়া হিসাবে ১৪ হাজার টাকায় চুক্তি হয়। ক্লিনিকে ভর্তির পর ধারদেনা করে ৫ হাজার টাকা জমা দেয় রিমার পরিবার। বকেয়া ৯ হাজার টাকা শোধ করতে না পারায় হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন না মা ও নবজাতক।

রিমা আক্তার নীলফামারীর ডোমার উপজেলার সজীব মিয়ার স্ত্রী। তাঁর বাবার বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার টিয়ারখালী গ্রামে।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সজীব মিয়া ঢাকার একটি জুতার কারাখানায় কাজ করতেন। রিমা অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার পর বাবার বাড়ি মঠবাড়িয়ায় চলে যান। এক মাস আগে সজীব চাকরি ছেড়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যান। গত শনিবার বিকেলে রিমার প্রসবব্যথা শুরু হলে মঠবাড়িয়া শহরের ইসলামিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসক জানান, তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হবে। এতে ১৪ হাজার টাকা লাগবে বলে রিমার পরিবারকে জানান হাসপাতালের ব্যবস্থাপক। রিমার মা তাসলিমা বেগম পরিচিত এক নারীর কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা ধার নিয়ে হাসপাতালে জমা দেন। ওই রাতে অস্ত্রোপচারে রিমার মেয়েসন্তান হয়। এখন বকেয়া টাকা শোধ করতে না পারায় নবজাতক ও মা হাসপাতাল ছাড়তে পারছেন না।

রিমার মা বলেন, ‘মেয়ের জামাই মুঠোফোন বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে এক মাস ধরে চলছে। আমাদের ধারণ ছিল, রিমার স্বাভাবিকভাবে সন্তান হবে। অস্ত্রোপচার করতে হবে—এমন কোনো প্রস্তুতি ছিল না। যখন হাসপাতালে গিয়ে শুনি ১৪ হাজার টাকা লাগবে, তখন এক পরিচিত নারীর কাছে টাকা চাই। তিনি ৫ হাজার টাকা দেন। পরে তিনি আরও কিছু টাকা দিয়ে আমাদের সহায়তা করেন। এরপর ওই নারী জানান, আমার নাতনিকে তাঁর এক আত্মীয় দত্তক নিতে চান। নিরুপায় হয়ে আমরা প্রথমে রাজি হই। পরে আমার মেয়ে রাজি হয়নি। নাতনিকে আর দত্তক হিসেবে দিইনি।’

হাসপাতালের ব্যবস্থাপক আবুল বাশার বলেন, ‘রিমার স্বজনেরা ৫ হাজার টাকা জমা দিয়েছেন ভর্তির সময়। পরিবারটি দরিদ্র হওয়ায় আমরা ৯ হাজার টাকা বকেয়া রেখে অস্ত্রোপচার করি। আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তারা টাকা জোগাড় করতে পারেনি। তবে পরিবারটি দরিদ্র হওয়ায় আমরা কিছু টাকা কম নেওয়ার চেষ্টা করব।’

টিয়ারখালী গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য খলিলুর রহমান বলেন, পরিবারটি খুবই গরিব। টাকাটা জোগাড় করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।