Thank you for trying Sticky AMP!!

‘আগামী নির্বাচনকে যুদ্ধের চোখে দেখতে হবে’

বরিশালে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করেন জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার। শনিবার দুপুরে বরিশাল ক্লাবে

জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার বলেছেন, ‘আগামী নির্বাচনকে আমাদের যুদ্ধের চোখে দেখতে হবে। কারণ, সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদ যেভাবে দেশের রাজনীতিতে শিকড় গজাচ্ছে, বেড়ে উঠছে, তাতে এসব প্রতিহত করতে না পারলে মুক্তিযুদ্ধের আকাঙ্ক্ষা বৃথা হয়ে যাবে। এ জন্য মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হলেই চলবে না, আন্তরিকভাবে সহমত পোষণ করে কঠোরভাবে কাজ করতে হবে।’

আজ শনিবার দুপুরে বরিশাল ক্লাবের ক্যাফেটেরিয়ায় সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির বিষয়ে সংসদ সদস্য ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের এই নেতা বলেন, ‘বিশ্বময় এখন যুদ্ধের কারণে মন্দা পরিস্থিতি বিরাজমান। সারা পৃথিবীতেই নিত্যপণ্যসহ সবকিছুর দাম বেড়েছে। এটাকে আমরা অন্যভাবে নেব না। তবে এর পেছনে যদি লুটেরা সিন্ডিকেটের হাত থাকে, তাহলে সরকারের উচিত তাঁদের নির্মূল করা ও মানুষকে স্বস্তিতে রাখা। বারবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে মানুষের জীবন যাতে অসহনীয় হয়ে না পড়ে, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে সরকারকে। তবে যে ধরনের পরিস্থিতিই হোক না কেন, তারপরও দেশটা যেন তালেবানি রাষ্ট্রে পরিণত না হয়, সেদিকে সবাইকে নজর রাখতে হবে।’

বাঙালি জাতি কীভাবে এগোবে, বাঙালির শত্রু কারা হবে—সেসব বঙ্গবন্ধু বলে গেছেন উল্লেখ করে শিরীন আখতার বলেন, ‘এ জন্য আমাদের পবিত্র সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা, সমাজতন্ত্রের মতো বিষয় তিনি (বঙ্গবন্ধু) সন্নিবেশ করেছিলেন। দুর্ভাগ্য, সাম্প্রদায়িক শক্তির পৃষ্ঠপোষকেরা পবিত্র সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে সেসব বিষয় বাদ দিয়েছিল। পরে পুনরায় তা সন্নিবেশিত হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা মনে করি, এগুলো সংবিধানে থাকলেই হবে না, বাস্তবিক প্রয়োগ ও চর্চা নিশ্চিত করতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা ও ধর্মীয় উগ্রবাদের বিরুদ্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সামনে এগোতে হবে। সবার জন্য সমান একটি সাম্যবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে।’

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের বর্তমান অবস্থানের বিষয়ে জোটের অন্যতম এই নেতা বলেন, ‘১৪ দলীয় জোটের ঐক্য অটুট আছে এবং থাকবে। তবে আমি মনে করি, ১৪ দলকে আরও সুসংগঠিত করা প্রয়োজন। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া প্রয়োজন।’

আগামী নির্বাচন ও বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে জাসদ সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন একটি সাংবিধানিক প্রক্রিয়া। এ জন্য নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করতে হবে। কিন্তু বিএনপি-জামায়াত জোট কিন্তু ভিন্ন সুরে কথা বলছে। তারা সরকারের পদত্যাগ চাইছে। তাদের উদ্দেশ্য মহৎ নয়।

বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কার প্রস্তাবনার বিষয়ে শিরীন আখতার বলেন, ‘বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে জঙ্গিদের পৃষ্ঠপোষকতা দিয়েছে। তাদের ১০ ও ২৭ দফা আমি দেখেছি। সেখানে তারা যুদ্ধাপরাধীদের মুক্তির দাবি করেছে। তারা আলেমদের মুক্তির দাবি করেছে। কিন্তু দেশের কোনো আলেম কারাগারে নেই। যারা বাংলাদেশকে বিশ্বাস করে না, স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারে না, সেই দল কীভাবে রেইনবো জাতি গড়বে? মূলত তারা চাইছে অসাংবিধানিক উপায়ে ক্ষমতায় যেতে, দেশকে সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রে পরিণত করতে।’

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোহসীন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন, জেলা জাসদের সভাপতি আবদুল হাই মাহবুব, জাসদ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি রামেদুল হক।