Thank you for trying Sticky AMP!!

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নে সুপার ফরমিকা অ্যান্ড লোমিনেশন লিমিটেডের কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গতকাল রোববার রাত সাড়ে আটটার দিকে

মুন্সিগঞ্জে ১৯ ঘণ্টা পর কারখানার আগুন নিয়ন্ত্রণে, সরানো হচ্ছে ভস্মীভূত মালামাল

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দি ইউনিয়নের মেঘনা নদীর পাড়ে প্লাই বোর্ড তৈরির কারখানার গুদামে লাগা আগুন প্রায় ১৯ ঘণ্টার চেষ্টায় সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে এনেছে ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট। গতকাল রোববার দুপুরে এই আগুনের সূত্রপাত। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর আজ সোমবার সকাল ৮ থেকে গুদামের ভস্মীভূত মালামাল সরানোর কাজ করে ফায়ার সার্ভিস।

এর আগে গতকাল দুপুরে কারখানার গুদামে লাগা আগুন বাতাসের কারণে সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। আগুনের ফুলকিতে নদীতে রাখা তিনটি ট্রলার পুড়ে গেছে।
ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণকক্ষের কর্তব্যরত কর্মকর্তা রোজিনা আক্তার জানান, আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এখন আর আগুন নেই। আজ সকাল থেকে গুদামের ভেতরের পাটখড়ি ও প্লাই বোর্ড অপসারণ করা হচ্ছে।

ফায়ার সার্ভিস ও কারখানাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কারখানাটির নাম সুপার ফরমিকা অ্যান্ড লোমিনেশন লিমিটেড। গতকাল সকাল থেকে কারখানার গুদামে শ্রমিকেরা কাজ করছিলেন। বেলা সোয়া একটার দিকে গুদামে মজুত করা পাটখড়িতে আগুন ধরে গেলে শ্রমিক ও স্থানীয় লোকজন নেভানোর চেষ্টা করেন। তবে বাতাসের কারণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় তাঁরা ব্যর্থ হন। গুদামের পাশেই নদীতে পাটখড়িবোঝাই তিনটি ট্রলার ছিল। গুদামের আগুনের ফুলকি বাতাসের মাধ্যমে ওই ট্রলারগুলোয় পড়লে মালামালসহ ট্রলারও পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেওয়া হয়। প্রথম দিকে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট, এরপর নারায়ণগঞ্জের আরও চারটি ইউনিট আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। আগুনের তীব্রতা বেশি হওয়ায় কুমিল্লা, ঢাকা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের আরও কয়েকটি দল আসে। রাত সাড়ে আটটায় আগুনের ভয়াবহতা কমতে শুরু করে। আজ সকালে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে।

গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার আজ সকাল ১০টার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত গজারিয়া, নারায়ণগঞ্জ, ঢাকা ও কুমিল্লা ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে টানা কাজ করেছে। দৃশ্যমান আগুন নিভে গেছে। তবে গুদামের মজুত করা পাটখড়ি ও প্লাই বোর্ডে আগুনের ফুলকি আছে। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট কাজ করছে। পাটখড়ি ও প্লাই বোর্ডের ওপরের স্তরে ফুলকি আছে। পানি ছিটিয়ে একটি একটি করে আগুন নির্বাপণ করে মালামাল সরানো হচ্ছে। এ ঘটনায় কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেটি এখনো নিরূপণ করা যায়নি।

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মুন্সিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাসুদুল আলমকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। মো. মাসুদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ইউএনও, গজারিয়া থানার ওসি, ফায়ার সার্ভিসের একজন কমিটিতে আছেন। কেন, কীভাবে আগুন লাগল, তা জানতে বিষয়টির তদন্ত শুরু হয়েছে।

কারখানাটির শ্রমিকেরা জানান, কারখানার গুদামের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে পাটখড়ির মজুত ছিল। গতকাল সকাল থেকে তাঁরা কারখানায় কাজ করেছিলেন। একপাশে সামান্য আগুনের ফুলকি দেখেন তাঁরা। অগ্নিনির্বাপণযন্ত্র দিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টাও করেন। কিন্তু পাটখড়িতে লাগা আগুন মুহূর্তেই সম্পূর্ণ কারখানায় ছড়িয়ে পড়ে। পরে কারখানার ভেতর থেকে শ্রমিকেরা নিরাপদে বেরিয়ে যান। তাঁদের কারখানার পাশে একটি ওয়েল্ডিংয়ের প্রতিষ্ঠান আছে। সেখানে ওয়েল্ডিং করার সময় আগুনের ফুলকি কারখানার গুদামের পাটখড়িতে এসে পড়ে। সেখান থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলে দাবি করেছেন দুজন শ্রমিক।