Thank you for trying Sticky AMP!!

‘রাইতের জারোত কাবু হই গেছু, কম্বলখান পাই ভালো নাগিল’

প্রথম আলো ট্রাস্টের উদ্যোগে দিনাজপুর সরকারি কলেজ মাঠে শীতার্থদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। আজ সকালে

কনকনে শীত। বইছে হিমেল হাওয়া। হাড়কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে আজ বুধবার সকাল সাড়ে আটটায় দিনাজপুর সরকারি কলেজ মাঠে শ দুয়েক বৃদ্ধ ও মাঝবয়সী নারী-পুরুষ। উপস্থিত সবার জন্য প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল নিয়ে হাজির হয়েছেন দিনাজপুর প্রথম আলো বন্ধুসভার জনাবিশেক বন্ধু।

গায়ে কাঁথা জড়িয়ে এসেছেন জোহরা খাতুন নামের একজন। বয়স ৮০ ছুঁই ছুঁই। কুচকে গেছে শরীরের চামড়া। কানেও শোনেন কম। স্বামী মারা যাওয়ার পর ছেলের সংসারে আছেন। দিনাজপুর শহরের চারুবাবুর মোড় এলাকায় ছেলের চায়ের দোকানে মাঝেমধ্যে নিজেও চা তৈরিতে হাত লাগান। বন্ধুদের হাত থেকে কম্বল পেয়ে বলতে শুরু করলেন, ‘এইবার ঠান্ডা বেশি পরোছে। টিনের চালের ফাঁক দিহেনে রাইতোত শীল শীল বাতাস ঢুকোছে। বিছানাত মনে হছে পানি ঢালি দিছে। এই কয় দিনে রাইতের জারোত কাবু হই গেছু। তুমহার কম্বলখান পাই ভালো নাগিল।’

Also Read: শীতার্তদের পাশে প্রথম আলো ট্রাস্ট

আজ ওই কলেজ মাঠে ২০০ অসহায় মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করেছেন প্রথম আলো বন্ধুসভার বন্ধুরা। এর আগে সদর উপজেলার সুইহারী, গোসাইপুর, গোপালগঞ্জ, মির্জাপুর, গোয়ালপাড়া, নতুনপাড়া এলাকায় দুস্থ মানুষ বাছাই করেছেন তাঁরা।

বয়স্ক এই নারী কম্বল পেয়ে অনেক খুশি বলে জানান। আজ সকালে দিনাজপুর সরকারি কলেজ মাঠে

গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে কম্বল নিতে এসেছেন মেরী বেগম (৫৫)। গত কয়েক বছর ধরে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে আছেন। দাঁড়িয়ে থাকতে পারেন না দেখে লাইনে দাঁড়াননি। কিছুটা দূরে বসে আছেন। ইজিবাইকে করে মেরীকে সঙ্গে নিয়ে এসেছেন পাড়ার একজন। কম্বল পেয়ে অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, শরীর চলে না। স্বামীর বয়স হয়েছে। কাজকর্ম করতে পারেন না। এবার এত ঠান্ডা যাচ্ছে, কেউ খোঁজ রাখেননি। দুই বছর আগে একবার একটা কম্বল পেয়েছিলেন। এবারের কম্বলটা পেয়ে খুব উপকৃত হলেন।

Also Read: প্রথম আলো ট্রাস্ট পাশে না দাঁড়ালে পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেত

মির্জাপুর এলাকায় নৈশপ্রহরীর দায়িত্বপালন করেন বাচ্চু মিয়া (৬০)। কম্বল পেয়ে খুশি হয়েছেন তিনি। বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘কম্বলটা সবচেয়ে বেশি দরকার ছিল। সারা রাত দোকানের বারান্দায় বেঞ্চে শুয়ে-বসে পাহারা দেই। রাত ১০টার পরে কুয়াশায় কিছু দেখা যায় না। ঠান্ডা বাতাসে হাত-পা কোঁকড়া লাগে আসে। কম্বলটা খুব কাজে আসবে।’

প্রথম আলো ট্রাস্টের পক্ষ থেকে কম্বল নিয়ে হাজির হয়েছিলেন দিনাজপুর প্রথম আলো বন্ধুসভার জনাবিশেক বন্ধু। আজ সকালে দিনাজপুর সরকারি কলেজ মাঠে

নতুনপাড়া এলাকার বাসিন্দা সাবিহা বেগম (৫৮)। বন্ধুদের দেওয়া স্লিপ হাতে কম্বল নিতে এসেছেন তিনি। সঙ্গে লাঠি হাতে ষাটোর্ধ্ব এক বৃদ্ধা। সাবিহা বলতে শুরু করলেন, ‘বুড়িটা প্রতিবন্ধী। মোক তোমরা না দেও, কিন্তুক এই বুড়িটাক একটা কম্বল দেও। হামাক কাহো দেখোছে নাই।’ তাঁদের দুজনের হাতেই কম্বল তুলে দিতেই ‘আল্লাহ তোমহার ভালো করিবি’ বলে দোয়া করতে থাকেন সাবিহা।

কম্বল বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো বন্ধুসভার উপদেষ্টা রেজাউল করিম, সভাপতি মুনিরা শাহানাজ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক শুভ রায়, সদস্য খেয়া রানী, রিতু, সাদিয়া আফরোজ, লাবণী, সাব্বির, নাহিদ, নাদিম, রিয়াদ, অনুপ, সাজেদুর, সাকি আক্তার, আপেল, সাদমান, নিশি প্রমুখ।

Also Read: শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ত্রাণ বিতরণ: কষ্টের দিনে পাশে দাঁড়াল প্রথম আলো ট্রাস্ট

শীতার্ত মানুষের সহযোগিতায় আপনিও এগিয়ে আসতে পারেন। সহায়তা পাঠানো যাবে ব্যাংক ও বিকাশের মাধ্যমে।
হিসাবের নাম: প্রথম আলো ট্রাস্ট/ ত্রাণ তহবিল
হিসাব নম্বর: ২০৭২০০১১১৯৪
ঢাকা ব্যাংক লিমিটেড, কারওয়ান বাজার শাখা, ঢাকা।
অথবা বিকাশে পেমেন্ট করতে পারেন: ০১৭১৩-০৬৭৫৭৬ এই মার্চেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বরে। বিকাশ অ্যাপে ডোনেশন অপশনের মাধ্যমেও আপনার অনুদান পাঠাতে পারেন।