Thank you for trying Sticky AMP!!

কক্সবাজারের রামুর চেরাংঘাটা এলাকার শতবর্ষী বৌদ্ধবিহারের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত সিঁড়ি। আজ শনিবার সকালে

রামুর প্রাচীন বৌদ্ধবিহারে আগুনে পুড়ল কাঠের সিঁড়ি

কক্সবাজারের রামু উপজেলা সদরের চেরাংঘাটা এলাকায় শতবর্ষী ‘উসাইচেন বৌদ্ধ বিহারে’ (বড় ক্যাং) আগুনে কাঠের সিঁড়ির অংশবিশেষ পুড়ে গেছে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কাঠের তৈরি বিহারটি পরিচালনা করেন রাখাইন সম্প্রদায়ের লোকজন।

দুর্বৃত্তরা বিহারটিতে অগ্নিসংযোগ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিহার পরিচালনা কমিটি ও রাখাইন সম্প্রদায়ের নেতারা। তাঁরা বলেন, ১৫০ বছরের পুরোনো কাঠের বিহারে রাত ১০টার দিকে ঘুমিয়ে পড়েন পুরোহিতসহ অন্যরা। এরপর রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তরা বিহারে ঢুকে আগুন দেয়। আগুনে বিহারের সিঁড়ি পুড়ে গেছে। আগুন দেখে বিহারের লোকজন হইচই শুরু করলে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ছুটে এসে তাৎক্ষণিক আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

উসাইচেন বৌদ্ধবিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মং কিউ রাখাইন বলেন, গতকাল দিবাগত রাত দুইটার দিকে বিহারে আগুন দিয়ে এক ব্যক্তিকে চলে যেতে দেখা গেছে সিসি ক্যামেরায়। এটি পরিকল্পিত ঘটনা, নাশকতার চেষ্টা। ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতেও এ বিহারকে আগুনে ধ্বংস করার চক্রান্ত হয়েছিল।

শনিবার সকালে বিহার পরিদর্শনে যান রাখাইন বুড্ডিস্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। কমিটির সভাপতি মং চে হ্লা প্রথম আলোকে বলেন, এটি পরিকল্পিত ঘটনা। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনতে হবে।

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কক্সবাজার জেলা শাখার সভাপতি দীপঙ্কর বড়ুয়া বলেন, ৭ জানুয়ারি নির্বাচনকে ঘিরে একটি মহল কাজটি করে থাকতে পারে। বৌদ্ধবিহারে আগুন দিলে কিংবা সংখ্যালঘুরা ভোট না দিলে কোন পক্ষ লাভবান হওয়ার কথা, তা খুঁজে বের করতে হবে।

এ ঘটনায় আজ দুপুরে বৌদ্ধবিহার পরিদর্শন করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিহারের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা গেছে, রাত দুইটার দিকে একজন লোক বিহারের ভেতর থেকে চলে যাচ্ছেন। কিন্তু লোকটিকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। নির্বাচনের এক দিন আগে বৌদ্ধবিহারে আগুন দেওয়ার ঘটনা নাশকতা কি না, তা অনুসন্ধান করা হচ্ছে। পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করছে। বৌদ্ধবিহারসহ আশপাশের সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে পুলিশ ঘটনার অনুসন্ধান করছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রামুর ১২টি প্রাচীন বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনায় ১৯টি পৃথক মামলা করা হয়। একটি মামলা আপসে নিষ্পত্তি হলেও বাকি ১৮টি মামলার কোনোটির বিচার হয়নি। বর্তমানে মামলাগুলো কক্সবাজারের আদালতে বিচারাধীন। বিচারাধীন ১৮ মামলায় আসামি ৯৯৫ জন, যাঁদের সবাই জামিনে।