Thank you for trying Sticky AMP!!

‘মাছ কেনার চাইতে লোকজন মাছ দেখতে আসেন বেশি’

পৌষ-সংক্রান্তি উপলক্ষে বড় বড় মাছ সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। প্রতিবছর এই দিনে মাছের মেলা বসে এখানে। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের নতুন বাজার থেকে রোববার

পৌষসংক্রান্তি উপলক্ষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলায় বসেছে মাছের মেলা। বিভিন্ন ধরনের মাছ নিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। গতকাল শনিবার রাত থেকে শহরের নতুন বাজারে দূরদূরান্ত থেকে মাছ নিয়ে আসছেন বিক্রতারা।

আজ রোববার দুপুরে নতুন বাজারে গিয়ে দেখা যায়, মাছ ব্যবসায়ী রিপন মিয়া খুয়াই গাঙ থেকে একটি বড় বাগাড় মাছ নিয়ে এসে বসেছেন মেলায়। প্রায় ৬০ কেজি ওজনের মাছের দাম চাচ্ছেন ৮০ হাজার টাকা। ক্রেতারা আসছেন, মাছ দেখছেন ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছেন। অনেকে দামাদামি করছেন। আরেকজন ব্যবসায়ী ফজলু মিয়া ৫০ কেজি ওজনের বাগাড় মাছের দাম হাঁকছেন ৬০ হাজার টাকা।

মানুষের ভিড়ে বাজারে পা ফেলা দায়। কেউ মাছ কিনে নিয়ে যাচ্ছেন, কেউ কেউ আবার বড় মাছ দেখে চলে যাচ্ছেন। কেউ কেউ পরিবারের ছোট সদস্যদের নিয়ে এসেছেন, বিভিন্ন মাছ দেখাতে। কিন্তু গতবারের তুলনায় এ বছর বড় মাছের সংখ্যা কম বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই।

বাজারে আসা শ্রীমঙ্গলের বাসিন্দা উত্তম দাশ বলেন, ‘আমরা যখন ছোট ছিলাম, তখন বড়দের সঙ্গে পৌষসংক্রান্তির বাজারে আসতাম। বইয়ে পড়া সব মাছ দেখতে পেতাম। আমরা এখান থেকে মাছের নাম মুখস্ত করতে পারতাম। শ্রীমঙ্গলের এই মাছের বাজারটি একটি মিলনমেলা হয়ে উঠেছে। তবে আগের মতো বড় মাছ দেখা যায় না। আমাদের ছেলে–মেয়েরা কিন্তু সব মাছের নাম জানে না। এই মেলায় বাচ্চাদের নিয়ে এসে মাছের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া উচিত।’

বাজার ঘুরে দেখা যায়, মাছের মেলায় রুই, চিতল, কাতল, মৃগেল, কালবাউশ, বাউশ, গ্রাসকার্প, বোয়াল, পাবদা, শোল, গজার, তেলাপিয়া, আইড়, কমন কার্পসহ নানা জাতের মাছ উঠেছে।

Also Read: পৌষসংক্রান্তিতে মৌলভীবাজারে ‘শেরপুরের মাছের মেলা’

বাজারে উঠেছে বড় বাগাড় মাছ

শ্রীমঙ্গল নতুন বাজারের মাছের বাজারের সভাপতি মো. মজনু মিয়া বলেন, সারা বছরই তাঁদের বাজারে মাছ বিক্রি হয়। পৌষসংক্রান্তির আগের দিন থেকে এখানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বড় বড় মাছ নিয়ে আসেন বিক্রেতারা। সব সময় এ রকম বড় মাছ বাজারে দেখা যায় না। এখানে মাছের বাজার এক মেলায় পরিণত হয়। লোকজন মেলায় মাছ কেনার চাইতে মাছ দেখতে আসেন বেশি।

কবি ও গবেষক নৃপেন্দ্র লাল দাশ বলেন, ‘আমাদের অঞ্চলের হাইল হাওর, হাকালুকি হাওর, মনু, সুরমা, কুশিয়ারাসহ নদীগুলো মৎস্যভান্ডার। এই মাছের মেলা এগুলোরই প্রতিফলন। আগের কালে এই দিন মেয়ের বাড়িতে বাবা বড় বড় মাছ পাঠাতেন। অনেকেই বড় মাছ উপহার পাঠান আত্মীয়দের বাড়ি। এ রকম প্রথা প্রচলিত ছিল। এখন সেটা কমে গেলেও মাছ কেনার যে উৎসব ও আনন্দ, সেটা এখনো আছে।’