Thank you for trying Sticky AMP!!

বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, সঙ্গে ‘হেইও রে, হেইও’ কোরাস

নৌকাবাইচ উপভোগ করছেন হাজারো মানুষ । শনিবার বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তরণীহাট এলাকায়

সকাল থেকেই আকাশে মেঘের আনাগোনা। কখনো মেঘের ফাঁক দিয়ে উঁকি দিচ্ছে কড়া রোদ। এমন দিনে সকাল থেকেই ইছামতী নদীর দুই পাড়ের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে লাখো মানুষের ঢল নামে। থেমে থেমে হর্ষধ্বনিতে মুখরিত নদীপারের চারপাশ। বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দের সঙ্গে যোগ হয় ঢাকঢোল, পিতলের খঞ্জনি আর বাঁশি-করতালের শব্দ। আর মাঝি-মাল্লাদের কণ্ঠে কোরাস শোনা যায় ‘হেইও রে, হেইও’।

ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ আয়োজন ঘিরে শনিবার সকাল থেকে দিনভর এ উৎসবের আমেজ ছিল বগুড়ার গাবতলী উপজেলার তরণীহাটে ইছামতী নদীর তীরে। নৌকাবাইচ উপভোগ করেছেন পূর্ব বগুড়ার লাখো মানুষ। কেউ বসে ছিলেন ইছামতী নদীর পাড়ে, কেউ আশপাশের বাড়ির ছাদে। অনেকে উঠে পড়েন গাছের ডালে। ব্রিজের রেলিংয়ে দাঁড়িয়ে ও বসে নৌকাবাইচ উপভোগ করেন অনেকে। এর আয়োজন করে বালিয়াদীঘি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিং।

নৌকাবাইচকে ঘিরে বসে দিনব্যাপী মেলা। মেলায় হরেক রকম পণ্য ছাড়াও ছোটদের আকর্ষণ ছিল নাগরদোলা। বাইচ উপলক্ষে আশপাশে গ্রামে আত্মীয়স্বজনকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়। এ নৌকাবাইচ উপভোগ করতে গাবতলী ছাড়াও শাজাহানপুর, ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলার হাজারো মানুষের ঢল নামে।  

আয়োজকেরা বলেন, ১১টি নৌকা নিয়ে প্রতিযোগীরা বাইচে অংশগ্রহণ করে। কোয়ার্টার ফাইনাল পর্বে অংশ নেয় আটটি দল। সেমিফাইনাল পর্বে চারটি নৌকায় ভাগ হয়ে বাইচে অংশ নেন মাল্লারা। এই চারটি দল হলো উড়াল পঙ্খি বনাম সততা এবং আল্লাহ ভরসা বনাম ইনশা আল্লাহ। চূড়ান্ত বাইচের ফাইনালে ইনশা আল্লাহকে হারিয়ে উড়াল পঙ্খি চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় গতবারের চ্যাম্পিয়ন সততা এবার চতুর্থ স্থান অধিকার করে।

মাঝি–মাল্লারা গাচ্ছেন কোরাস

ফাইনাল শেষে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বগুড়া পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী। তিনি বলেন, নৌকাবাইচ দেশের হাজার বছরের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। আবহমান বাংলার লোকজ ঐতিহ্য ধরে রাখতে এ ধরনের আয়োজনে উদ্যোগ নিতে হবে। ইতিহাস ও ঐতিহ্য লালন করে আগামীর বাংলাদেশ গড়ায় অংশ নিতে হবে। ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে লালন করে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে হবে।

বালিয়াদীঘি ইউনিয়ন কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সভাপতি শাহ নেওয়াজ জাকিরের সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও দৈনিক করতোয়ার সম্পাদক মোজাম্মেল হক, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শাহাদৎ আলম, গাবতলী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সনাতন সরকার, স্থানীয় চেয়ারম্যান ইউনুস আলী ফকির প্রমুখ।