Thank you for trying Sticky AMP!!

জরাজীর্ণ ভবনে স্বাস্থ্যসেবা 

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার এই ক্লিনিকে বিদ্যুৎ ও পানি নেই। বর্ষাকালে ক্লিনিক চত্বরে পানি জমে থাকে।

সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার লক্ষ্মীখোলা কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনের দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়ে ইট বের হয়ে আছে

গ্রামের মানুষকে সহজে ও তাৎক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার জন্য সারা দেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছিল বর্তমান সরকার। এর মধ্যে সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের লক্ষ্মীখোলা কমিউনিটি ক্লিনিক ভবনের। এই ক্লিনিকের ভবনের ছাদে ফাটল ধরেছে। দেয়াল ও ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। এই ভবনে রোগীদের ঝুঁকি নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। ১০ বছর ধরে ভবনটি জরাজীর্ণ অবস্থায় থাকলেও এটি সংস্কারে উদ্যোগ নেয়নি স্বাস্থ্য বিভাগ।

আশাশুনি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষ্মীখোলা গ্রামে ২০০১ সালে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য দুই কক্ষের ভবন নির্মাণ করা হয়। ওই বছরই কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম শুরু হয়। এখানে জেলপাতুয়া, মাদিয়া, লক্ষ্মীখোলা, কদমতলা, মরারীকাটি, হেতালবুনিয়া, বাইনতলাসহ আশপাশের ১০-১২ গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা নারী, মা ও শিশুসহ  বিভিন্ন শ্রেণির মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসা এবং পরিবার পরিকল্পনাসেবা, টিকাদান কর্মসূচি এবং স্বাস্থ্যশিক্ষাবিষয়ক পরামর্শ দেওয়া হয়। এখানে কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার (সিএইচসিপি) সেলিনা আক্তার এবং স্বাস্থ্য সহকারী অমলেন্দু মণ্ডল কর্মরত আছেন। তবে অমলেন্দু মণ্ডল সপ্তাহে তিন দিন এখানে আসেন।

সাতক্ষীরা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে আশাশুনি উপজেলার বড়দল ইউনিয়নে লক্ষ্মীখোলা কমিউনিটি ক্লিনিক। গতকাল বেলা ১১টার দিকে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ক্লিনিক ভবনের ছাদে ফাটল ধরেছে। বৃষ্টির পানি ছাদ দিয়ে চুইয়ে মেঝেতে পড়ছে। ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। মরিচা পড়ে নষ্ট হয়ে গেছে জানালার লোহার গ্রিল। জানালার একাংশ খুলে রাখা হয়েছে। ভবন জরাজীর্ণ হওয়ায় রোগীরা কক্ষের ভেতরে ঢুকতে সাহস পান না।

কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার সেলিনা আক্তার বলেন, তিনি ২০১২ সালের ২৬ আগস্ট এখানে যোগদান করেন। আসার পর থেকে ক্লিনিক ভবনের অবস্থা নাজুক। বর্তমানে ভবনের অবস্থা এতটাই খারাপ যে এখানে বসে কাজ করতে ভয় লাগে। প্রতিনিয়ত পলেস্তারা খসে পড়ছে। ক্লিনিকে একটি শৌচাগার থাকলেও পানির ব্যবস্থা না থাকায় তা কখনো ব্যবহার করা যায় না। জরুরি প্রয়োজনে রোগীরা এবং তিনি পাশের একটি বাড়ির শৌচাগার ব্যবহার করেন। বিদ্যুৎ–সংযোগ না থাকায় গরমে তাঁরা এবং রোগীরা দুর্ভোগ পোহান। খাবার পানির কোনো ব্যবস্থা না থাকায় নিজের টাকা দিয়ে তিনি প্রতিদিন পানি কিনে নিয়ে আসেন।

সেলিনা আক্তার আরও বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে যাতায়াতের জন্য উঁচু কোনো রাস্তা নেই। বর্ষাকালে ক্লিনিক চত্বর ডুবে থাকে। রোগীদের হাঁটুপানি ঠেলে ক্লিনিকে যেতে হয়। ক্লিনিকের সামনের সড়কটি এক বছরের বেশি সময় ধরে কাজ না করে ঠিকাদার ফেলে রেখে গেছে। ফলে সড়কে ভ্যান কিংবা রিকশা চলে না। ফলে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার হেঁটে ক্লিনিকে চিকিৎসাসেবা নিতে হয়।

আশাশুনি উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. মিজানুল হক বলেন, উপজেলার ১০টি কমিউনিটি ক্লিনিকের ভবন নির্মাণের জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে চিঠি লিখেছেন। এর মধ্যে এবার পাঁচটি ভবন হচ্ছে। আশা করছেন আগামী অর্থবছরে লক্ষ্মীখোলাসহ আরও পাঁচটি ভবন নির্মাণ করা যাবে।