Thank you for trying Sticky AMP!!

দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার দুর্গাপুর ঢিবিসংলগ্ন এলাকায় পুলিশ বক্স পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। গত বুধবার তোলা

পুলিশ বক্স পরিত্যক্ত, বেড়ে গেছে অপরাধ

গত এক মাসে ওই পুলিশ বক্সের সামনে মহাসড়কে আটজনের মুঠোফোন ছিনতাই হয়েছে।

মহাসড়কের দুই পাশে বন বিভাগের বিস্তীর্ণ সামাজিক বন। বিকেলের পর থেকে সড়কের দুই পাশে অন্ধকারে ঢেকে যায়। সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত নামলে পথচারীদের কানে আসে শিয়ালের ডাক। মহাসড়ক ধরে চলাচল করা তখন গা–ছমছমে ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

দুই দশক আগে এ মহাসড়কে ভারী যানবাহন ও পথচারীকে সুরক্ষা দিতে বসানো হয়েছিল একটি পুলিশ বক্স। কিন্তু সেই পুলিশ বক্সে পাঁচ বছর ধরে পুলিশ থাকছে না। এতে ওই মহাসড়কে ছিনতাই ও অপরাধের ঘটনা বেড়ে গেছে। এমনকি দিনের পর দিন সড়কের পাশে অযত্নে পড়ে থাকা সেই পুলিশ বক্সের জানালা খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা।

বেহাল এই পুলিশ বক্সের দেখা মিলবে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলা শহরের প্রবেশমুখে দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে। এলাকাটির নাম দুর্গাপুর।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত এক মাসে ওই পুলিশ বক্সের সামনে মহাসড়কে চলাচল করা দুর্গাপুর গ্রামের পথচারীদের মধ্যে প্রায় আটজনের মুঠোফোন ছিনতাই হয়েছে। গত ডিসেম্বরে দিনাজপুর থেকে গোবিন্দগঞ্জগামী একটি যাত্রীবাহী বাসে ওই পরিত্যক্ত পুলিশ বক্সের সামনে থেকে সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা পাথর ছুড়ে মারে। এতে করে বাসে থাকা এক নারী যাত্রী আহত হয়ে স্থানীয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন।

উপজেলার পলিপ্রয়াগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান রহমত আলী প্রথম আলোকে বলেন, ‘দুর্গাপুর ঢিবিসহ আশপাশের পথচারী ও পরিবহনের নিরাপত্তার কথা ভেবে ২০০৪ সালে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে এডিপির (বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি) মাধ্যমে ইটের দেয়াল ও টিনের ছাউনি দিয়ে একটি পুলিশ বক্স তৈরি করা হয়। তখন থেকে ১২ বছরের বেশি সময় ধরে সেখানে পুলিশ সদস্যরা ডিউটি করতেন। এর ফলে ওই সময়ে সেখানে ছিনতাই ও চুরি-ডাকাতি বন্ধ হয়েছিল। কিন্তু পাঁচ বছর ধরে সেখানে পুলিশের ডিউটি না থাকায় এলাকায় আবারও চুরি ও ছিনতাই শুরু হয়েছে। গত এক মাসে আমার এলাকায় ৮ থেকে ১০টি জায়গায় চুরির ঘটনা ঘটেছে।’

স্থানীয় লোকজন জানান, গত বছর নভেম্বর মাসের এক রাতে ওই পুলিশ বক্সের চার দেয়ালে থাকা লোহার গ্রিলের পাঁচটি জানালা খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা।

পুলিশ বক্সের দক্ষিণ পাশের শ্যামপুর গ্রামের বাসিন্দা ও দোকানি সুপল মুরমু প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঢিবিত তো আর পুলিশ থাকে না। চোরেরা জানলা-দরজা ব্যাবাক খুলে নিয়ে গেইছে। পুলিশের ডিউটির ঘরের জানলা-দরজা চোরেরা খুলে নিয়ে যায়, তাইলে তো হামার মতো মানষের বাড়িঘরোত দরজা-জানলা কিচ্ছুই থাকপে না। ওটে (ওখানে) পুলিশ ডিউটি করলে তো হামার এলাকার মানুষের উপকার হলো হনে।’

জানতে চাইলে বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুব্রত কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, দুর্গাপুর এলাকা ও সেখানকার মহাসড়কে যাতে কোনো ধরনের চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা না ঘটে, সে জন্য পুলিশ প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে থাকবে। তবে থানা-পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ বক্সটি এ মুহূর্তে সংস্কারের সুযোগ না থাকলেও সেখানে এখন থেকে নিয়মিত পুলিশের প্যাট্রল ডিউটির ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে।