Thank you for trying Sticky AMP!!

ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভোলায় মহিষ মেলা

আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে ভোলায় মঙ্গলবার দিনব্যাপী মহিষ মেলা হয়েছে। সদর উপজেলার ব্যাঙ্কেরহাট বাজারে

ঈদুল আজহা সামনে রেখে ভোলা সদর উপজেলার ব্যাংকেরহাট বাজারে মহিষ মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোরবানির পশু হিসেবে মহিষের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর লক্ষ্যে এ মেলার আয়োজন করে গ্রামীণ জন-উন্নয়ন সংস্থা (জিজুস)।

পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সাসটেইনেবল এন্টারপ্রাইজ প্রজেক্টের (সেপ) অর্থায়নে মঙ্গলবার দিনব্যাপী চলা এ মেলায় ২০টি স্টল বসেছে। এর মধ্যে রয়েছে উন্নত জাতের মহিষের স্টল, মিষ্টি, দই ও ঘিয়ের স্টল, মহিষসহ গবাদিপশুর স্বাস্থ্যসেবা–সংক্রান্ত স্টল।

এসব স্টল থেকে ক্রেতার সঙ্গে আলাপ ও মুঠোফোন নম্বর বিনিময় করেছেন বিক্রেতারা। সরকারি–বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মী, স্কুল–কলেজের শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় লোকজন মেলায় এসে ঘুরে দেখেছেন। অনেকে দুগ্ধজাত পণ্য কিনেছেন।

মেলায় দুগ্ধজাত পণ্যের স্টলে ক্রেতা–দর্শনার্থীদের ভিড়

সেপের প্রকল্প কর্মকর্তা তরুণ কুমার পাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘মেলায় ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সহজে মহিষ কেনাবেচার ব্যবস্থা করা ছিল তাঁদের লক্ষ্য। আশা করছি, এ মেলার মাধ্যমে কোরবানি উপলক্ষে মহিষের বড় বাজার সৃষ্টি হবে।’

ভোলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ইন্দ্রজিৎকুমার মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, মহিষের মাংস স্বাস্থ্যসম্মত। দামও তুলনামূলক কম। তৈরি খাবারের চেয়ে প্রাকৃতিক খাবারে অভ্যস্ত। তাই অনায়াসে মহিষ কোরবানি দেওয়া যায়।

মেলায় আসা কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা হয়। মেঘনার মাঝে জেগে ওঠা বৈরাগীর চরের খামারি মো. দুলাল মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এ বছর কোরবানি উপলক্ষে ছয়টি মহিষ বিক্রি করবেন। দূরদূরান্ত থেকে মহিষ বিক্রি করতে ব্যবসায়ীরা এসেছেন। ভিডিও কলের মাধ্যমে তাঁদের মহিষ দেখানো হচ্ছে।

তেঁতুলিয়া নদীতে জেগে ওঠা চর চন্দ্রপ্রসাদের খামারি কামাল খান বলেন, তিনি কোরবানিতে ১৬টি মহিষ বিক্রি করতে চান। মেলায় এসে নয়টি মহিষ বিক্রির কথাবার্তা চলছে।

দিনভর নানা শ্রেণি–পেশার মানুষ মহিষ মেলায় এসেছেন

মহিষবিশেষজ্ঞ জিজুসের পরিচালক (প্রাণী) মো. খলিলুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের সদস্য হয়েছেন, এমন খামারিরা এবার প্রায় এক হাজার মহিষ বিক্রি করবেন। মেলার স্টলে এবং ওয়েবসাইটে এসব খামারির নম্বর ও মহিষের ছবি দেওয়া আছে। বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসব মহিষ কিনে কোরবানি দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

শত শত বছর ধরে ভোলার চরাঞ্চলে বাথানভিত্তিক মহিষ পালন হয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেন জিজুসের নির্বাহী পরিচালক জাকির হোসেন।

তিনি বলেন, দিন দিন আন্তপ্রজনন সমস্যা ও খাদ্যসংকটের কারণে মহিষের দুধ ও মাংসের উৎপাদন কমে যাচ্ছিল। এটা লক্ষ করে তাঁর সংস্থা পিকেএসএফের অর্থায়নে ভোলা ও আশপাশের চরাঞ্চলের বাথানগুলোতে ‘মুররা’ জাতের উন্নত মহিষ বিতরণ, উন্নত ঘাসের আবাদ, চিকিৎসাসেবা বাড়ানোসহ আধুনিক কিল্লা নির্মাণ করে দিচ্ছে। চার বছর ধরে তাঁরা এ কাজ করছেন। দিন দিন মহিষের দুধের উৎপাদন বেড়েছে। আরও বাড়াতে হবে।

জাকির হোসেন আরও বলেন, মহিষের মাংসে চর্বি কম এবং শরীরের জন্য উপকারী। মহিষের মাংসে হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কম। মানুষ এটা জানছে। তাই গরুর বদলে জেনেশুনে মহিষের মাংস খাওয়া উচিত। সবাই যাতে মহিষের মাংস ও কাঁচা দই খেতে উৎসাহী হন—সে লক্ষ্যে এ বাফেলো ফেয়ার।