Thank you for trying Sticky AMP!!

ব্যানার–পোস্টার এখনো ঝুলছে, শ্রীহীন নগর 

এক সপ্তাহের বেশি সময় আগে নির্বাচন শেষ হয়েছে। এখনো রাস্তা, পাড়া-মহল্লা থেকে সরানো হয়নি নির্বাচনী প্রচারসামগ্রী। 

গাজীপুর মহানগরের প্রায় প্রতিটি রাস্তায় ঝুলছে সিটির নির্বাচনের পোস্টার, সরানোর উদ্যোগ নিচ্ছে না কেউ। নগরের জাঝর এলাকায়

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন শেষ হয়েছে এক সপ্তাহের বেশি সময় হলো। কিন্তু এখনো মহানগরের রাস্তাঘাট, অলিগলি, দোকানপাট, স্কুল ও কলেজের সামনে ঝুলছে অসংখ্য ব্যানার, পোস্টার। এতে শ্রীহীন হয়ে পড়েছে নগর। এসব প্রচারসামগ্রী অপসারণে তেমন উদ্যোগও নেওয়া হচ্ছে না।

গাজীপুর নগরের সবচেয়ে পরিচিত এলাকা পৌর মার্কেট। এখানে রাজবাড়ী সড়কে যত দূর চোখ যায়, শুধু নির্বাচনী পোস্টার। কয়েক জায়গায় রশি ঢিলে হয়ে মাটি ছুঁয়ে আছে পোস্টার। স্থানীয় এক দোকানি বলেন, পোস্টারগুলো সরাতে এখনো কোনো প্রার্থী বা সিটি করপোরেশনের লোক আসেননি। এমনকি কেউ নিজে থেকে সরাতে গেলেও নানা ধরনের জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওই দোকানি প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু পোস্টার একেবারে আমার দোকানের সামনে এসে ঝুলছে। এটা দেখতেও খারাপ লাগে। এ কারণে আমি নিজেই সরাতে চাইছিলাম। পরে স্থানীয় কয়েকজন মানা করেছেন। বললেন, ঝামেলা হতে পারে। তাই আর কিছু করিনি।’

সিটি করপোরেশন থেইক্যাও কোনো লোকজন আসে না। আবার আমরা নিজেরা সরাইতে গেলেও অনেকে মনে করেন আমরা প্রার্থীর বিপক্ষের লোক। 
মো. খাইরুজ্জামান, টঙ্গীর সফিউদ্দিন সড়কের দোকানি

গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় মোট সাধারণ ওয়ার্ড ৫৭টি। সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৯টি। নির্বাচনে এসব ওয়ার্ডে মোট প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ছিলেন ৩৩১ জন। এর মধ্যে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৮ এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রার্থী ছিলেন ২৪৫ জন। গত ৯ মে প্রতীক বরাদ্দের পর আনুষ্ঠানিক প্রচারণায় নামেন তাঁরা। এ সময় নির্বাচনী পোস্টার-ব্যানারে ছেয়ে যায় পুরো এলাকা।

গত দুই দিন নগরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রার্থীর পোস্টারে এখনো ছেয়ে আছে প্রতিটি এলাকা। পৌর মার্কেট, জোড়পুকুর, কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ সড়ক, শিববাড়ী মোড়, চান্দনা চৌরাস্তা, বোর্ডবাজার, বাসন, গাছার কুনিয়া তারগাছ, বনমালা সড়ক, জাঝর, এরশাদনগর, টঙ্গী বাজার, বউবাজার এলাকায় দেখা যায় পোস্টারের ছড়াছড়ি। কোথাও পোস্টার ছিঁড়ে গেছে, শুধু রশি ঝুলছে। আবার কোথাও পোস্টার মাটিতে পড়ে আছে। এসবে অপরিচ্ছন্ন নগর যেন আরও দৃষ্টিকটু হয়ে পড়েছে।

টঙ্গীর সফিউদ্দিন সড়কের মো. খাইরুজ্জামান নামের এক দোকানি বলেন, ‘নির্বাচন শেষ হইয়্যা গেছে প্রায় এক সপ্তাহ। কিন্তু তা-ও পোস্টারগুলো সরানোর কোনো উদ্যোগ দেখি না। সিটি করপোরেশন থেইক্যাও কোনো লোকজন আসে না। আবার আমরা নিজেরা সরাইতে গেলেও অনেকে মনে করেন আমরা প্রার্থীর বিপক্ষের লোক। তাই হেনস্তার ভয়ে কোনো কিছুই করি না।’

অগণিত ব্যানার-পোস্টার এলোমেলোভাবে পড়ে থাকায় এলাকার রাস্তাঘাট আরও অপরিচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানালেন শহরের দক্ষিণ ছায়াবীথি এলাকার বাসিন্দা সালমা নিগার। তাঁর ভাষ্য, প্রার্থীর পোস্টার বা প্রচারসামগ্রীগুলো নির্বাচনের আগে বা নির্বাচনের দিন পর্যন্ত ঠিক ছিল। কিন্তু এখন এসব নগর অপরিচ্ছন্নের উপাদান। এগুলো দ্রুত অপসারণ করা দরকার।

জানতে চাইলে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের পর ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ বা নির্বাচন-সংক্রান্ত কার্যকলাপ দেখভালের দায়িত্ব ছিল আমাদের। এখন এসব পোস্টার অপসারণ বা নগর পরিচ্ছন্ন রাখার দায়িত্ব সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের। তারাই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেবে।’

রাস্তাঘাট থেকে নির্বাচনী প্রচার সরানোর বিষয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে কি না, জানতে চাইলে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র আসাদুর রহমান (কিরন) বলেন, ‘এগুলো (প্রচারসামগ্রী) অপসারণের জন্য আমি চার-পাঁচ দিন আগেই আমাদের বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা বিভাগকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা এটা নিয়ে কাজ করছে। তারপরও আমি এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।’