Thank you for trying Sticky AMP!!

‘চাল-ডাল কিনতেই সব টাকা শেষ, মাছ-মাংস খাওয়া হয় না’

কয়ছর আহমদ

৩৮ বছর বয়সী কয়ছর আহমদ একটি লন্ড্রির দোকানে কাজ করেন। কাপড় ধোলাই আর ইস্ত্রি করে দিন কাট তাঁর। সব মিলিয়ে দিনে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা আয় করেন। তবে তাঁর দৈনিক আয়ের বেশির ভাগ অংশই ব্যয় হয়ে যাচ্ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে সংসারের খরচের হিসাব মেলাতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন কয়ছর।

আজ রোববার সকালে সিলেট নগরের মির্জাজাঙ্গাল এলাকায় কয়ছরের সঙ্গে কথা হলো। তিনি সিলেট নগরের খুলিয়া পাড়া এলাকার বাসিন্দা। তরুণ বয়স থেকে লন্ড্রির দোকানে কাজ করছেন। এখন দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে একটি দোকানে কাজ করেন। দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ছোট সংসার। বড় মেয়ের বয়স পাঁচ বছর আর ছোট মেয়ে তিন বছরে পা দিয়েছে। কয়ছরের স্ত্রী গৃহিণী। তাই কয়ছর যা আয় করেন, তা দিয়েই পুরো সংসার চলে।

বর্তমানে বাজারে প্রায় সব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম ঊর্ধ্বমুখী। এর মধ্যে সম্প্রতি গ্যাস ও বিদ্যুতের দামও বেড়েছে। এ অবস্থায় সংসার কেমন চলছে, জানতে চাইলে কয়ছর বলেন, ‘যেই টাকা পাই, সেটা দিয়ে চারজনের সংসার চালানো কষ্ট। চাল-ডাল কিনতেই সব টাকা শেষ, মাছ-মাংস কেনা হয় না। এ জন্য মাছ-মাংসও খাওয়া হয় না। তবে মেয়েরা আবদার করলে সপ্তাহে এক দিন মুরগির মাংস কেনার চেষ্টা করেন। আর পুরা সপ্তাহে ভাতের সঙ্গে ডাল, ভর্তা বা সবজি।’

তবে কয়েক বছর আগেও পরিস্থিতি ভালো ছিল বলে মনে করেন কয়ছর। তখন আয়ও কিছুটা কম ছিল। তবে তখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নাগালের মধ্যে থাকায় স্বাচ্ছন্দ্যেই সংসার চলত। গেল কয়েক বছরে চাল, ডাল, তেলসহ সব জিনিসের দাম একলাফে দেড় থেকে দুই গুণ বেড়েছে। তবে পারিশ্রমিক ওই তুলনায় বাড়েনি বলে আক্ষেপ করলেন কয়ছর।

লন্ড্রির দোকানে কাজ করে কয়ছর আহমদ দিনে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা আয় করেন

কয়ছরের হিসাব অনুযায়ী প্রতিদিন তাঁর পরিবারের জন্য প্রায় ৩০০ টাকার বাজার করতে হয়। মোটা চাল, সবজি আর তেল–মসলা কিনতেই এই টাকা খরচ হয়ে যায়। এর বাইরে প্রতি মাসে গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পানির বিল তো আছেই। সব কেনাকাটা আর বিল পরিশোধের পর কয়ছরের হাতে কোনো সঞ্চয় থাকে না।  তাই পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে কিংবা কোনো বিপদে পড়লে সেটা সামাল দেওয়ার জন্য।

কয়ছর বলেন, ‘আগে যা কামাই করছি তা দিয়ে ভালোই চলত। এখন ৫০০ টাকা খুচরা করলে পকেটে আর টাকা থাকে না। বাচ্চাদের জন্য বাড়তি কোনো খাবার কিনে দিতে পারি না। এদিকে সামনে রমজান। এরপর ঈদ আসছে। রমজানে আসলেই তো দ্রব্যমূল্য বাড়ে। এবার যে কী অবস্থা হবে, বুঝা যাচ্ছে না।’