Thank you for trying Sticky AMP!!

মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন চট্টগ্রাম–১৬ আসনের (বাঁশখালী) সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ও তাঁর অনুসারীরা। এ সময় তাঁদের হাতে বেশ কয়েকজন গণমাধ্যম কর্মী হেনস্তা ও মারধরের শিকার হন। গত ৩০ নভেম্বর সকালে, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে

আচরণবিধি লঙ্ঘন, সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগে নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে মামলা

আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগে চট্টগ্রাম-১৬ আসনের (বাঁশখালী) আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল দেবের আদালতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নির্দেশে মামলাটি করেন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন মোল্লা।

বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন বাদীর আইনজীবী জাহেদুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন ও সাংবাদিকদের মারধরের অভিযোগে মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী ও অজ্ঞাতনামা ২০ থেকে ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আসামি মোস্তাফিজুরকে হাজির হতে আগামী ৩ জানুয়ারি তারিখ নির্ধারণ করেছেন।

Also Read: পিস্তল হাতে মিছিলে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজ

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উপসচিব মো. আবদুছ সালামের সই করা এক চিঠিতে গত রোববার চট্টগ্রাম জেলা ও বাঁশখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মামলা করতে বলা হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৩০ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুর। পাঁচজনের বেশি কর্মী-সমর্থক নিয়ে ঢোকার নিয়ম না থাকলেও ১০০ থেকে ২০০ জনকে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে ঢুকে পড়েন তিনি।

এতে আচরণবিধি লঙ্ঘিত হয়। মনোনয়নপত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। এ সময় সাংবাদিকেরা আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সংসদ সদস্য মোস্তাফিজুর রেগে যান। তিনি কয়েক সাংবাদিককে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। তাঁদের হুমকি দেন। তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরাও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন।

Also Read: আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে কি না, জানতে চাওয়ামাত্র সাংবাদিককে পেটালেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী

এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে কয়েকটি ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মোস্তাফিজুর চলে যাওয়ার সময় তাঁর গাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকেরা প্রতিবাদ জানাতে চাইলে তাঁর কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন।

এ বিষয়ে বেসরকারি ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের পক্ষ থেকে ‘নির্বাচন-পূর্ব অনিয়ম’ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকল্পে গঠিত নির্বাচনি অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের কাছে লিখিত অভিযোগ করা হয়। এর ভিত্তিতে কমিটি মোস্তাফিজুরের ব্যাখ্যা তলব করে। পরদিনই প্রতিনিধির মাধ্যমে ব্যাখ্যা পাঠান নৌকার এই প্রার্থী।

কমিটি নিজস্ব অনুসন্ধানে মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের গালিগালাজ ও মারধর করে মাটিতে ফেলে দেওয়া এবং প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পায়। নির্বাচন কমিশনের কাছে দেওয়া কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়, মোস্তাফিজুর সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এর ৮(খ) বিধি লঙ্ঘন করেছেন। এর ভিত্তিতে নির্বাচন কমিশন মামলা করার নির্দেশ দেন।

এর আগে গত শুক্রবার বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তোফায়েল আহমেদকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগে নৌকার মনোনীত প্রার্থী মোস্তাফিজুরের বিরুদ্ধে থানায় জিডি করে পুলিশ। পরে রোববার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য মোস্তাফিজুরকে ‘হুমকিস্বরূপ’ উল্লেখ করে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। পরে রিটার্নিং কর্মকর্তা বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটির কাছে পাঠান।

Also Read: চট্টগ্রামে ওসিকে ‘দেখে নেওয়ার’ হুমকি নৌকার প্রার্থী মোস্তাফিজুরের, থানায় জিডি