Thank you for trying Sticky AMP!!

পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ পড়ে থেকে নষ্ট

ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের এসব যন্ত্রাংশের ওজন ৩০০–৪০০ টন যা বিক্রি করে কোটি টাকা পাওয়া যাবে।

আখ বহনের ট্রলিসহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ খোলা জায়গায় পড়ে থাকায় মরিচা ধরেছে। সম্প্রতি জয়পুরহাট চিনিকলে

জয়পুরহাট চিনিকলের পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ দীর্ঘদিন ধরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে। এগুলো ঘিরে জন্মেছে ঝোপঝাড়। মরিচা ধরে যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। লোহা, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের এসব যন্ত্রাংশের ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ টন হবে, যা বিক্রি করে কোটি টাকার রাজস্ব পাবে সরকার।

চিনিকল কর্তৃপক্ষ জানায়, কয়েক বছর আগে এসব পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ নিলামে বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছিল। তবে নির্ধারিত দর পাওয়া যায়নি। এ কারণে নিলাম বাতিল করা হয়েছিল। আবার নিলামের উদ্যোগ নেওয়া হবে।

১৯৬০ সালে জয়পুরহাট চিনিকল প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৬২-৬৩ সালে পরীক্ষামূলকভাবে চিনি উৎপাদন শুরু হয়। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭২ সালে এটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান হিসেবে ঘোষণা করে সরকার। গত মৌসুমেও আখমাড়াই হয়েছে। এই চিনিকলের বাৎসরিক উৎপাদন ক্ষমতা ২০ হাজার ৩২০ মেট্রিক টন। কর্মরত রয়েছেন ৯ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও মৌসুমি শ্রমিক। নানা কারণে প্রতিবছরই চিনিকলে লোকসান হচ্ছে। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির দেনা প্রায় ৪০০ কোটি টাকা।

চিনিকলের ব্যবহৃত অকেজো বিপুল পরিমাণ যন্ত্রাংশ রয়েছে। জায়গা না থাকায় চিনিকলের অভ্যন্তরে এসব পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। গত মঙ্গলবার গিয়ে দেখা যায়, বিশাল জায়গাজুড়ে খোলা আকাশের নিচে চিনিকলের পরিত্যক্ত লোহার যন্ত্রাংশগুলো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে। কিছু যন্ত্রাংশ ঝোপ-জঙ্গলে ঢেকে রয়েছে।

চিনিকলের কর্মকর্তা-কমর্চারীরা জানান, চিনিকলের পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশগুলো রাখার জন্য আলাদা জায়গা নেই। এ কারণে পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশগুলো চিনিকল চত্বরের গ্যারেজ অংশের ফাঁকা জায়গায় রাখা হয়েছে। এভাবেই দীর্ঘদিন ধরে রয়েছে। পরিত্যক্ত এসব যন্ত্রাংশের ওজন অন্তত ৩০০ থেকে ৪০০ টন হবে। যন্ত্রাংশগুলোর বেশির ভাগ ২৫ থেকে ৩০ বছর আগের। কয়েক বছর আগে কিছু যন্ত্রাংশ নিলামে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। তবে কাঙ্ক্ষিত দাম মেলেনি। পরে দরপত্র বাতিল করা হয়।

চিনিকল গ্যারেজের চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক আবদুল হামিদ বলেন, ‘আমি ২০০৫ সাল থেকে জয়পুরহাট চিনিকলে চাকরি করছি। তখনই গ্যারেজ এলাকায় যন্ত্রাংশগুলো পড়ে ছিল। এসব যন্ত্রাংশের মধ্যে এসএস লোহা, এমএস স্টিল, তামা ও ইস্পাত রয়েছে। এগুলোর মধ্যে চিনিকল চালুর সময়কারও অকেজো যন্ত্রাংশ রয়েছে।’

কৃষি বিভাগের পরিবহন শাখার ওয়েলডার হেলপার শাহিনুজ্জামান বলেন, ‘২০০০ সালে এখানে যোগদান করেছি। তখন থেকে লোহাগুলো পড়ে থাকতে দেখছি। যন্ত্রাংশগুলো ভালো জায়গায় রাখলেও কয়েক দিন পর গাছগাছালিতে ভরে যায়। লোহার অকেজো যন্ত্রাংশগুলো অনেক দিনের হলেও এখনো ভালো রয়েছে।’

জয়পুরহাট চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বলেন, চিনিকলের পরিত্যক্ত জিনিসগুলো মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে। পরিত্যক্ত যন্ত্রাংশগুলো নিলামে বিক্রির জন্য কর্তৃপক্ষকে বলেছেন। এগুলো বিক্রি করে সরকারের রাজস্ব আসবে।

জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আখলাছুর রহমান গতকাল বুধবার প্রথম আলোকে বলেন, ইতিপূর্বে চিনিকলের লোহার অকেজো যন্ত্রাংশ নিলামে বিক্রির জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত দাম পাওয়া যায়নি। এ কারণে দরপত্র বাতিল করা হয়েছিল। আবারও দরপত্র আহ্বানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যন্ত্রাংশ নিলামের জন্য কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটি যন্ত্রাংশের পরিমাপ করছে।