Thank you for trying Sticky AMP!!

জুয়েল রানা

জানালা ভেঙে বের হলেন ভাগনে, নিচে পড়ে নিহত মামা

ঢাকার বেইলি রোডের বহুতল ভবনটির একটি রেস্তোরাঁর বাবুর্চি (শেফ) ছিলেন জুয়েল রানা (৪৩)। একই রেস্তোরাঁয় তাঁর ভাগনে রাকিব আকনও (৩৭) কাজ করতেন। ওই ভবনে আগুন লাগলে তাঁরা ছয়তলার জানালা ভেঙে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। রাকিব নিরাপদে নিচে নেমে আসেন। তবে তাঁর মামা জুয়েল রানা সেখান থেকে নিচে পড়ে যান এবং ঘটনাস্থলে তাঁর মৃত্যু হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১০টার দিকে বেইলি রোডের ছয়তলা ভবনটিতে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪৬ জনে পৌঁছেছে।

নিহত জুয়েল রানা পটুয়াখালীর কলাপাড়ার মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নের পশ্চিম মধুখালী গ্রামের ইসমাইল গাজীর ছেলে। স্ত্রী ও দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে তিনি ঢাকা থাকতেন। বেইলি রোডের ওই ভবনের একটি রেস্তোরাঁয় তিনি চার-পাঁচ বছর ধরে বাবুর্চির কাজ করেছেন। সেখানে তাঁর ভাগনে রাকিব আকনও কাজ করেন।

রাকিব আকন আজ শুক্রবার মুঠোফোনে বলেন, ‘ভবনে আগুন লাগার পর আমি, মামাসহ তিনজন ছয়তলায় নেমে একটি জানালা ভেঙে বাইরে নামার চেষ্টা করি। প্রথমে রাকিব এবং পরে রেস্তোরাঁর আরেক কর্মচারী ডিসের তার বেয়ে নিচে নামি। মামা (জুয়েল) জানালা দিয়ে বের হয়ে একটি এসির ওপর বসেন। এ সময় এসিসহ ভেঙে তিনি নিচে পড়ে যান। ভবনটির জানালার কয়েকটি কার্নিশের সঙ্গে মামার শরীর আঘাত লাগে। তাঁর মাথা ফেটে যায় এবং মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।’

পরিবারের সদস্যরা জানান, এক মাস আগে জুয়েলের ছোট বোনের বিয়ে হয়েছে। ছুটি না পাওয়ায় জুয়েল বোনের বিয়েতে বাড়িতে আসতে পারেননি। রোজা শুরুর আগে তাঁর বাড়ি আসার কথা ছিল। ছেলে মৃত্যুর খবর পেয়ে বাড়িতে আহাজারি করছিলেন জুয়েলের মা ফাতেমা বেগম। তিনি বলছিলেন, ‘এই পোলার আয় দিয়াই আমরা চলতাম। পোলাডায় আমারে থুইয়া আগেই চইল্যা গেল। অ্যাহন আমার কী হইবে।’

মিঠাগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের পশ্চিম মধুখালী এলাকার ইউপি সদস্য কাওসার গাজী জানান, মূলত জুয়েলের আয় দিয়েই পরিবারটি চলতো। কর্মক্ষম সন্তানকে হারিয়ে পুরো পরিবার পথে বসে গেছে। তিনি আজ বেলা পৌনে তিনটার দিকে জানান, ঢাকায় ময়নাতদন্তের পর জুয়েলের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গাড়িতে করে লাশ আনা হচ্ছে। বাদ আসর গ্রামে তাঁর লাশ দাফন করা হবে।

কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমরাও খোঁজখবর নিয়েছি। শুনেছি, পরিবারটি অতি দরিদ্র। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পরিবারটিকে সার্বিক সহায়তা করা হবে।