Thank you for trying Sticky AMP!!

কৃষিজমির মাটি পরিবহনে খিড়া নদীতে বাঁধ। গতকাল সকালে

কৃষিজমি থেকে কাটা মাটি ভাটায় নিতে নদীতে বাঁধ

কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার দারোরা ইউনিয়নের কাজিয়াতল এলাকায় কৃষিজমি থেকে মাটি কেটে ট্রাক্টরে ইটভাটায় নিতে খিড়া নদীতে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। দারোরা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য (মেম্বার) হাবিবুর রহমান নদীতে বাঁধ দিয়েছেন বলে এলাকাবাসীর দাবি।

উপজেলার দারোরা ও ধামঘর ইউনিয়নের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গেছে খিড়া নদী। নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে সেচের কাজ ব্যাহত হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সঙ্গে বাঁধের আশপাশে মাটি ভরাট করে অবৈধভাবে স্থাপনা গড়ারও চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় খিড়া নদী দিয়ে যাত্রী ও মালবাহী নৌকা এবং ট্রলার চলাচল করত। বর্তমানে দারোরা ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে একটি চক্র নদীর মধ্যে বাঁধ নির্মাণ করেছেন। বাঁধের ওপর দিয়ে প্রতিদিন ৮ থেকে ১০টি ট্রাক্টর কৃষিজমির মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় মাটির জোগান দিচ্ছে। ফসলি জমিতে মাটিকাটার যন্ত্র বসিয়ে ২৫ থেকে ৩০ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে।

সরেজমিন দেখা যায়, খিড়া নদীর দারোরা-কৃষ্ণপুর সড়কের কাজিয়াতল পূর্বপাড়া আবদুল জব্বারের বাড়ির পাশে বাঁধ দেওয়া হয়। নদীর মাঝখানে আড়াআড়িভাবে বাঁশ পেতে রাখা। এর মধ্যে বাঁশের বেড়া দেওয়া আছে। বেড়ার ভেতর মাটি ফেলে সড়ক করা হয়েছে। মাটির এই কাঁচা সড়ক দিয়ে ক্ষণে ক্ষণে ট্রাক্টরে ফসলি জমির মাটি নেওয়া হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষক আবদুল হালিম, আলতাফ মিয়া ও নজরুল ইসলাম বলেন, নদীতে বাঁধ দেওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে পানি আটকে থাকবে, পানিপ্রবাহ ব্যাহত হবে। একদিকের পানি অন্যদিকে যেতে পারবে না। নদীতে মাছ হবে না।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আলী আকবরের ভাষ্য, এই মৌসুমে ধানি জমি থেকে মাটি কেটে বিক্রি করা হচ্ছে ইটভাটায়। এতে মাটি উর্বরতা শক্তি হারায়। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো নদীর মধ্যখানে বাঁধ দেওয়া। অবিলম্বে তিনি বাঁধ সরানো এবং দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

অভিযোগ প্রসঙ্গে হাবিবুর রহমান বলেন, ‘এই জমির মালিক আমার ভাই। তিনি বিদেশ থাকেন। জমিগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে আমি আছি। ভাই নিজেই মাটি বিক্রি করেছে। আমি বিক্রি করি না।’ তবে বাঁধ দেওয়া নিয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করেননি।

মুরাদনগরের ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, বাঁধ নির্মাণের বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। নদীতে বাঁধ দেওয়ার এখতিয়ার কারও নেই। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।