সরাইলে হত্যা মামলার আসামির বাড়িতে অগ্নিসংযোগ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে হত্যা মামলার এক আসামির বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। আগুনে ঘরের সবকিছু পুড়ে গেছে। উপজেলার শাহজাদাপুর ইউনিয়নের শাহজাদাপুর গ্রামে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শাহজাদাপুর গ্রামে দুই দল গ্রামবাসীর সংঘর্ষে এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার পর থেকে প্রতিপক্ষের বাড়িঘরে চলছে লুটপাট, ভাঙচুর। সোমবার রাতে হত্যা মামলার আসামি নশু মিয়ার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। এতে নশু মিয়ার পাঁচ কক্ষের টিনশেড একটি ঘর পুড়ে যায়। এতে ঘরটির সব মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
পুলিশ ও সরেজমিন গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, শাহজাদাপুর গ্রামের তিতাস নদের পাড়ের ৬০ শতাংশ খাসজমির দখল নিয়ে মো. কাউছার মিয়া ও মোশাররফ হোসেনের মধ্যে বছরখানেক ধরে বিরোধ চলছিল। ওই জমির ধান কাটা নিয়ে ১৩ এপ্রিল দুপুরে গ্রামে উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে কামাল উদ্দিন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হন। আহত হন পুলিশসহ অর্ধশতাধিক নারী-পুরুষ। কামাল উদ্দিন ছিলেন মোশাররফ হোসেনের পক্ষের।
এ ঘটনায় কামাল উদ্দিনের ছেলে তোফায়েল মিয়া (২২) বাদী হয়ে ১১৯ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা করেন। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় আরও ৫০–৫৫ জনকে। এ মামলায় পুলিশ এখন পর্যন্ত চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ছাড়া একই ঘটনায় সরাইল থানার পুলিশ বাদী হয়ে উভয় পক্ষের ৪৫ জনের নাম উল্লেখ করে পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে একটি মামলা করে। এ মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ২৫০ থেকে ৩০০ জনকে। এ মামলায় ৩০ নারী-পুরুষকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে আসামিপক্ষের শতাধিক পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশু বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। এর পর থেকে ওই পরিবারগুলোর বসতবাড়িতে নিয়মিত চলছে ভাঙচুর ও লুটপাট। এর মধ্যে সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি নশু মিয়ার বসতবাড়িতে ঘটে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটনা। আসামিপক্ষের লোকজনের অভিযোগ বাদীপক্ষের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
নশু মিয়ার একাধিক প্রতিবেশী জানান, হত্যার ঘটনার পর থেকে বাড়িটি ছিল মানুষশূন্য। তবে বাড়িটিতে ধান চালসহ মালামাল ছিল। আগুনে পুড়ে সব ছাই হয়ে গেছে। তাঁদের ঘরে বসার মতো একটি চেয়ারও নেই। তবে কীভাবে এ বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, প্রতিবেশীরা বলতে পারছেন না।
সরাইল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) আ স ম আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, রাতেই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ওই বাড়িতে গিয়ে আগুন দেখতে পেয়েছেন। বাড়িটি ছিল ফাঁকা। গ্রামের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আগুনে পুড়ে যাওয়া ঘরের পাশেই ছিল সঞ্চালন লাইনের খুঁটি। ওই খুঁটি থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। পরে সঞ্চালন লাইনের তারও পুড়েছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চার নারীকে আটক করা হয়েছে।
তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সরাইল উপজেলা কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী (বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ) আবদুর রউফ প্রথম আলোকে বলেন, ওই বসতবাড়ির আগুন থেকেই বিদ্যুতের খুঁটির তারে আগুন লেগেছে। খুঁটি থেকে ঘরে আগুন লাগেনি। ঘটনার পর থেকে গ্রামে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
আরও পড়ুন
-
পৃথিবীর কোন দেশে সেন্ট্রাল ব্যাংকে ঢুকতে পারছে অবাধে: ওবায়দুল কাদের
-
পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসনে হাজার কোটি টাকা বাড়তি চায় চীনা ঠিকাদার
-
রাঙামাটিতে এলোপাতাড়ি গুলিতে ইউপিডিএফের কর্মীসহ দুজন নিহত
-
বিশ্বের সেরা এয়ারলাইনস আট মাসের বেতনের সমান বোনাস দিচ্ছে
-
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সিরিজের ভেন্যুতে ঝড় বয়ে গেছে