Thank you for trying Sticky AMP!!

মুঠোফোনে ছেলের ছবি দেখে বিলাপ করছেন মমতাজ বেগম

সৌদি আরবে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মামুন মিয়ার মা মমতাজ বেগম একটু পর পর ছেলের ছবি দেখে বিলাপ করছেন। বুধবার সকালে মুরাদনগরের মস্তাপুর গ্রামে

মামুন মিয়া (২২) ছয় মাস আগে সৌদি আরবে যান। সেখানকার একটি হোটেলে কাজ পান। গত সোমবার ওমরাহ হজ পালন করতে তাঁর মামা ইয়ার হোসেন ও ভাগনে জাহিদুল ইসলামসহ আরও অনেক বাংলাদেশির সঙ্গে বাসে করে মক্কায় যাচ্ছিলেন। ওই দিন বেলা সাড়ে তিনটায় হঠাৎ ব্রেক ফেল করে সেতুর সঙ্গে ধাক্কা লাগে বাসটির। একপর্যায়ে বাসটিতে আগুন ধরে যায়। এ সময় মামুন মিয়াসহ ১৮ জন বাংলাদেশি অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যান।

ছেলের এমন করুণ মৃত্যু কোনোভাবেই মানতে পারছেন না মামুনের মা মমতাজ বেগম। মুঠোফোনে বারবার ছেলের ছবি দেখে বিলাপ করছিলেন তিনি। বলছিলেন, ‘আমার এমন তরতাজা ছেলেটা আর নাই, এটা কীভাবে মানব?’ কারও সান্ত্বনাই তাঁকে শান্ত করতে পারছে না।

মামুন মিয়ার বাবা আবদুল আউয়াল বলেন, ‘আমার ছেলেটার বয়স এত কম। ছয় মাস আগে ওর মামা ইয়ার হোসেন সৌদিতে নেন। ছেলে আমার বলেছিল, আমাদের মুখে হাসি ফোটাবে। পাঁচ লাখ টাকা ঋণ করে ওকে সৌদি আরবে পাঠালাম। এখনো ঋণ শোধ হয়নি। সেই ছেলেই চলে গেল।’

বুধবার দুপুরে কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার রামচন্দ্রপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের মোস্তাপুর গ্রামে মামুন মিয়ার বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মামুনের মা-বাবা ও স্বজনেরা আহাজারি করছেন। দুই ভাই ও তিন বোনের মধ্যে মামুন মিয়া চতুর্থ। স্বজনেরা জানান, দুর্ঘটনায় আহত মামুন মিয়ার মামা ইয়ার হোসেন ও ভাগনে জাহিদুল ইসলাম হাসপাতালে চিকিত্সাধীন।

Also Read: সৌদিতে ওমরাহ যাত্রীদের বাস দুর্ঘটনা, আট বাংলাদেশি নিহত

স্থানীয় সময় সোমবার বিকেলে ইয়েমেনের সীমান্তবর্তী আসির প্রদেশের আকাবা শার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ১৮ বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে মামুন মিয়ার বাড়ি মুরাদনগরে। গিয়াস হামিদের বাড়ি দেবীদ্বারের রাজামেহার এলাকায়। গিয়াসের বাড়িতেও চলছে শোকের মাতম।

কুমিল্লা জনশক্তি ও কর্মসংস্থান দপ্তরের সহকারী পরিচালক দেবব্রত ঘোষ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করব আমরা।’

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলাউদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, ‘শোকাহত পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা হয়েছে। লাশ আনার ব্যাপারে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করব।’