Thank you for trying Sticky AMP!!

রাজশাহীতে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন

বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর উদ্বোধন করেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি প্রার্থী তৌরিদ আল মাসুদের পক্ষের নেতা-কর্মীরা। শনিবার সকালে মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে

রাজশাহীতে তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে ৫১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্‌যাপন করেছে মহানগর যুবলীগ। বিশৃঙ্খলা এড়াতে তিন পক্ষের নেতাদের একসঙ্গে বসিয়ে সময় ভাগ করে দেন মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা। এরপরও ওই বৈঠক থেকে বের হওয়ার সময় তিন পক্ষের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে নেতাদের বেঁধে দেওয়া সময়ে আলাদাভাবে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর কর্মসূচি পালন করে তিনটি পক্ষ।

তিন পক্ষের মধ্যে এক পক্ষে নেতৃত্ব দিচ্ছেন মহানগর যুবলীগের আগের কমিটির প্রচার সম্পাদক মাজেদুল আলম শিবলী। তিনি এবার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তাঁর সঙ্গে সভাপতি পদপ্রার্থী হিসেবে আছেন আমিনুর রহমান। তিনি আগের কমিটির সহসভাপতি ছিলেন। একই পক্ষে আছেন সাবেক সভাপতি রমজান আলীর ছেলে রায়হানুর রহমান। তিনিও সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।

আরেক পক্ষে আছেন সভাপতি পদপ্রার্থী তৌরিদ আল মাসুদ। তিনি প্রস্তাবিত ১০ সদস্যের কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরে অবশ্য সেই কমিটি অনুমোদন করা হয়নি। এবার তাঁর সঙ্গে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে আছেন সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মুকুল শেখ। আরেক পক্ষে আছেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নাহিদ আক্তার। তিনি ২০১৬ সালের আগে মহানগর যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। এবার তিনি সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী।

ভাগ করে দেওয়া সময় অনুযায়ী মাজেদুল আলম পক্ষের লোকজন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত কুমারপাড়ার দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে আনন্দ শোভাযাত্রা করেন। বেলা ১১টা থেকে আরেক পক্ষের কর্মসূচি থাকায় তাঁরা রানীবাজারে মেয়রের কার্যালয়ের নিচে কেক কাটেন। এরপর তৌরিদ আল মাসুদ পক্ষের সমর্থকেরা আনন্দ শোভাযাত্রা করেন। আর বিকেলে নাহিদ আক্তারের সমর্থকেরা নগরের ডিঙ্গাডোবা এলাকা থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন।

যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজশাহীর ডিঙ্গাডোবা এলাকা থেকে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা বের করেন নাহিদ আক্তার পক্ষের সমর্থকেরা। শনিবার বিকেলে নগরের সাহেববাজার এলাকায়

দলীয় সূত্র জানায়, সাত বছর পর দেড় মাস আগে মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এখনো কমিটি ঘোষণা করা হয়নি। এ অবস্থায় বিশৃঙ্খলা এড়াতে নগরের রানীবাজারে সিটি মেয়র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কার্যালয়ে তিন পক্ষকে নিয়ে বসেন মহানগর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা। সেখানে মেয়র খায়রুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন না। নেতারা রাতে রানীবাজারে একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে বললেও কোনো পক্ষই রাজি হয়নি। পরে তাদের সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। সেখান থেকে বের হওয়ার সময়ই তাদের মধ্যে হট্টগোল ও হাতাহাতি শুরু হয়। দুজন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী কিল-ঘুষির শিকার হন। রানীবাজারের কার্যালয়ের বাইরে হাতাহাতির ঘটনাটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজেও দেখা গেছে। তবে সংগঠনের নেতারা এ বিষয়ে মুখ খোলেননি।

রায়হানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের পরিকল্পনা ছিল ১৯৭২ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত যাঁরা যুবলীগের ছিলেন, তাঁদের নিয়ে সকাল ১০টায় কুমারপাড়ায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে ফেস্টুন ওড়াবেন। বেলা ১১টায় শোভাযাত্রা করে সাড়ে ১১টায় কেক কাটবেন। কিন্তু আরেক পক্ষ কর্মসূচি দেওয়ায় মহানগরের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে কর্মসূচি পালন করতে বলেন। দ্বিমতের কারণে সেটা সম্ভব হয়নি। এ জন্য বেঁধে দেওয়া সময়ে তাঁরা কর্মসূচি পালন করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি নেতাদের মধ্যে হাতাহাতির বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এখনো মীমাংসা হয়নি।

যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে নগরে শোভাযাত্রা করেন সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী মাজেদুল আলমের পক্ষের নেতা-কর্মীরা। শনিবার সাহেববাজার এলাকায়

মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আহসানুল হক বলেন, সামনে নির্বাচন। এ সময়ে যুবলীগের কর্মসূচি তিন ভাগে বিভক্ত হয়ে হচ্ছে। এটা ভালো নয়। দ্রুত কমিটি ঘোষণা হওয়া দরকার। হাতাহাতির বিষয়ে বলেন, তেমন কিছু হয়নি।

দীর্ঘ সাত বছর পর গত ২৬ সেপ্টেম্বর রাজশাহী জেলা ও মহানগর যুবলীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। নগরের পাঠানপাড়া এলাকায় পদ্মা নদীর ধারে সড়কে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ। এর আগে ২০১৬ সালের সম্মেলনে রমজান আলীকে সভাপতি ও মোশাররফ হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করা হয়। এবার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে ২৮টি জীবনবৃত্তান্ত জমা পড়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ১০টি, সাধারণ সম্পাদক পদে ১৮টি আবেদন জমা পড়ে।