Thank you for trying Sticky AMP!!

চিন্তায় চিন্তায় তর্কে তর্কে শিক্ষার্থীদের মানসপটে তৈরি হচ্ছে ভিত্তিভূমি

পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান রহমান রাজু। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মিলনায়তনে

যুক্তি দিয়ে প্রতিপক্ষকে পরাজিত করার জন্য চিন্তা করতে হবে। চিন্তা থেকেই মাথায় যুক্তি আসে। এই বিতর্ক উৎসবে চিন্তায় চিন্তায় তর্কে তর্কে আজকের শিক্ষার্থীদের মানসপটে যে ভিত্তিভূমি তৈরি হচ্ছে, আগামী দিনে তারা যুক্তি-জ্ঞান ও প্রজ্ঞায় অপরাধীদের পরাজিত করবে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মিলনায়তনে পুষ্টি-প্রথম আলো স্কুল বিতর্ক উৎসব অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন বক্তারা।

উৎসবের উদ্বোধন করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সাবেক সভাপতি রহমান রাজু। তিনি বলেন, ‘চিন্তা করার জন্যও আলাদাভাবে সময় দিতে হয়। এমনি যে চিন্তা মাথায় আসে, সেটা তো আসেই, কিন্তু আমি যা নিয়ে ভাবতে চাই, তা নিয়ে চিন্তা করতে হবে। চিন্তায় মুক্তি মেলে। আন্দোলন যদি হয় মুক্তির জন্য, তাহলে তা আমাকে করতে হবে চিন্তা ও যুক্তি দিয়ে। আমাদের মানস গঠনে, স্বদেশকে ভালোবাসার ক্ষেত্রে, বিশ্ব-মানবতার কল্যাণে সর্বোপরি নিজেকে চেনার জন্য যুক্তির বিকল্প কিছু নেই, জ্ঞানের বিকল্প কিছু নেই, প্রজ্ঞার বিকল্প কিছু নেই।’

রহমান রাজু আরও বলেন, কথায় বলে তর্কে বহুদূর। সেটা অযাচিত তর্ক। বিতর্ক হচ্ছে তার শিল্পিত রূপ। বিতর্কের আসরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ঝড় বয়ে যায়। এক পক্ষ আরেক পক্ষকে আক্রমণ করছে। সেটা চিন্তা দিয়ে, যুক্তি দিয়ে, তথ্য-উপাত্ত দিয়ে, বাহুবলে নয়। যারা অন্যায় করছে, তাদের আজকের এই বিতার্কিকেরা আগামী দিনে চিন্তা ও যুক্তি দিয়ে আঘাত করে পরাজিত করতে হবে, এটাই প্রত্যাশা।

উৎসবের সমন্বয়কারী সাইদুজ্জামান রওশন অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের মাদককে ‘না’ বলার শপথ পাঠ করান। তিনি বক্তব্যের সময় একজন সাহসী বিতার্কিককে আহ্বান জানান তাঁর হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য। এই আহ্বানে মঞ্চে উঠে আসে রাজশাহী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহীন জাহান। সে বিতর্ককে ভালোবাসার আহ্বান জানিয়ে বলে, ‘আমরা যারা বিতর্ককে ভালোবাসি, তারা নির্বাচনী পরীক্ষা ফেলে এই উৎসবে যোগ দিয়েছি।’

বিতর্ক উৎসবে শিক্ষার্থীরা ‘মাদক’ ‘মিথ্যা’ ও ‘মুখস্থ’কে ‘না’ বলার শপথ করে। বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহী কলেজিয়েট স্কুল মিলনায়তনে

উৎসবে বিভিন্ন পর্বে বিচারকের দায়িত্ব পালন করছেন রাজশাহী বিভিন্ন ডিবেটিং অর্গানাইজেশনের বিতার্কিকেরা। তাঁরা হচ্ছেন মেহেদী হাসান খান, মো. আরাফি সিরাজী, এ কে এম শহিদুল ইসলাম, হোমায়রা চৌধুরী, মারুফ ইসলাম, সুমাইয়া জেসমিন, আল আমিন, অনুরাগ আহসান, তাবাসসুম জান্নাত, আবদুল্লাহ বিন আয়াতুল্লাহ ও রাহী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন রাজশাহীতে কর্মরত প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক আবুল কালাম মুহম্মদ আজাদ।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, অযৌক্তিক তর্কের কারণেই সমাজে অশান্তি তৈরি হয়। যৌক্তিক কথাবার্তাই সমাজের এই অশান্তি দূর করতে পারে। বিতর্ক থেকেই এই অভ্যাস তৈরি হয়। তাই যুক্তিনির্ভর, বিজ্ঞানমনস্ক জাতি গঠনে বিতর্কচর্চা বলিষ্ঠ ভূমিকা রাখতে পারে।

Also Read: ভালো অভ্যাসের চর্চা করলে নেতিবাচক চিন্তা আসবে না

উৎসবে রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১৬টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেছে। প্রথম পর্বে বিতর্কের বিষয়—‘মাদকমুক্ত রাখার ক্ষেত্রে পরিবার নয়, শিক্ষকের ভূমিকাই প্রধান।’ দ্বিতীয় পর্বের বিষয়—‘তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার পাঠাভ্যাস নষ্ট করছে।’ তৃতীয় পর্বের বিষয়—‘এই সময় মেধাবী মানুষের চেয়ে মানবিক মানুষই বেশি দরকার।’ চূড়ান্ত পর্বে বিতর্কের বিষয় হচ্ছে ‘পরিবেশ রক্ষায় ব্যক্তির ভূমিকাই প্রধান।’

গত ১৪ জুলাই থেকে পুষ্টির পৃষ্ঠপোষকতায় ও প্রথম আলোর উদ্যোগে স্কুল বিতর্ক উৎসব শুরু হয়েছে। দেশের ৩৯টি অঞ্চলে এই উৎসব হচ্ছে। আঞ্চলিক পর্যায়ের বিজয়ীরা ঢাকায় জাতীয় পর্বে অংশ নেবে। উৎসবের প্রচার সহযোগী হিসেবে রয়েছে নাগরিক টেলিভিশন।

Also Read: বিতর্ক মানুষের চিন্তাচেতনা ও বুদ্ধিকে শাণিত করে