Thank you for trying Sticky AMP!!

সদরঘাটে যাত্রীদের ঢল, লঞ্চের জন্য অপেক্ষা

ঢাকার সদরঘাটে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলার যাত্রীদের উপচা পড়া ভিড়। আজ মঙ্গলবার বিকেলে

ঈদের ছুটিতে ঢাকা ও তার আশপাশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত দক্ষিণাঞ্চলের অনেক কর্মকর্তা–কর্মচারী ও শ্রমিক লঞ্চে বাড়ি যাচ্ছেন। এতে ঢাকার সদরঘাটে যাত্রীদের ঢল নেমেছে। দুপুর পর্যন্ত কম থাকলেও বিকেলে সদরঘাটে যাত্রীদের চাপ বেড়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুর কারণে স্বাভাবিক সময়ে দক্ষিণাঞ্চলের অনেক নৌপথে লঞ্চে চলাচল বন্ধ থাকে। কিন্তু ঈদের সময় যাত্রী বাড়ায় কয়েক দিন ধরে এসব নৌপথে লঞ্চ চলাচল শুরু হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেলে বরিশালের মুলাদি, বরগুনা, আমতলী, পটুয়াখালী ও ভোলা নৌপথের শত শত যাত্রী সদরঘাটের ওয়াইজঘাটের পন্টুনে লঞ্চের জন্য দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেন।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটি) নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল সোমবার দিবাগত রাত একটা থেকে আজ বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত সদরঘাটে লঞ্চ এসেছে ৮৮টি। আর সদরঘাট থেকে দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন পথে ছেড়ে গেছে ৯০টি লঞ্চ।

আজ সদরঘাটে ভোর থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত যাত্রীদের চাপ ছিল। এরপর যাত্রীদের চাপ কিছুটা কমে যায়। বেলা তিনটার পর থেকে পুনরায় যাত্রীদের চাপ বেড়ে যায়। এ অবস্থায় দক্ষিণাঞ্চলের মুলাদি, বরগুনা, আমতলী, পটুয়াখালী ও ভোলা নৌপথের যাত্রীরা নিজ নিজ গন্তব্যের লঞ্চ না পেয়ে পরিবার-পরিজন ও মালামাল নিয়ে পন্টুনে বসে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছেন। এদিকে নির্ধারিত সময়ের আগেই যাত্রী পরিপূর্ণ হওয়ায় ভোলার চরফ্যাশনগামী এমভি ফারহান-৪ লঞ্চটি ছেড়ে গেছে।

লঞ্চের জন্য কয়েক ঘণ্টা ধরে সদরঘাটে অপেক্ষা করছেন পটুয়াখালীর বিলকিস বেগম নামের এক যাত্রী। তিনি বলেন, ‘সড়কের ঝক্কিঝামেলা এড়াতে নদীপথে বাড়ি যাচ্ছি। কিন্তু টার্মিনালে এসে দেখি আমাদের লঞ্চ পন্টুনে নেই। লোকমুখে জানতে পেরেছি পরে লঞ্চ আসবে। তাই লঞ্চের জন্য পন্টুনে বসে অপেক্ষা করছি।’

এমভি ফারহান লঞ্চের পরিচালক ফারুক হোসেন বলেন, ‘সন্ধ্যা ছয়টার দিকে মনপুরার উদ্দেশে আমাদের লঞ্চটি সদরঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সকাল ১০টার মধ্যেই লঞ্চ যাত্রীতে পূর্ণ হয়ে যাওয়ায় সাড়ে ১০টার দিকে লঞ্চটি ছেড়ে যায়।’
মাদারীপুরগামী এমভি তাসরিফ-১ লঞ্চের যাত্রী সবুজ হোসেন বলেন, সড়কে আজ যানজট তেমন ছিল না। তবে সদরঘাট হকারদের কারণে পরিবার-পরিজন ও মালামাল নিয়ে চলাফেরা করতে কষ্ট হয়েছে। কর্তৃপক্ষের হকারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ চলাচল যাত্রী পরিবহন সংস্থার (যাপ) সদস্য আজগর আলী বলেন, ‘আজ সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে পটুয়াখালী ও পায়রা বন্দর রুটে আমার দুটি লঞ্চ ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। যাত্রীরা নির্ধারিত সময়ের আগে লঞ্চে আসায় বেলা দুইটার দিকে লঞ্চ টার্মিনাল ছেড়ে যায়।’

ঢাকা অঞ্চলের নৌ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বলেন, ‘দুই দিন আগে থেকে সদরঘাট টার্মিনাল এলাকায় বিপুল নৌ পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। যাত্রীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয়, সে জন্য আমরা সার্বক্ষণিক টার্মিনাল এলাকা ও লঞ্চে নজরদারি করছি। এ ছাড়া মাঝনদী থেকে যাতে কোনো যাত্রী লঞ্চে উঠতে না পেরে, সে জন্য নদীতে নৌ পুলিশের টহল দল কাজ করছে।’ তিনি আরও বলেন, আজ সকাল থেকে যাত্রীদের চাপ কিছুটা বেশি। যাত্রীদের নির্বিঘ্ন লঞ্চযাত্রা নিশ্চিত ও নিরাপত্তার জন্য নৌ পুলিশের সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন।

সদরঘাটে নির্ধারিত গন্তব্যের লঞ্চ পৌঁছায়নি। তাই পন্টুনে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করছেন যাত্রীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে

বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের ঢাকা নদীবন্দরের যুগ্ম পরিচালক ইসমাইল হোসেন বলেন, লঞ্চের সংকট তেমন নেই। যেসব লঞ্চ গতকাল রাতে টার্মিনাল ছেড়ে গেছে, সেগুলো ফিরে এলে লঞ্চের সংকট আর থাকবে না। তিনি আরও বলেন, ‘হকারদের উচ্ছেদে আমরা অভিযান চালাচ্ছি। ঘাট এলাকায় হকার বসার কোনো সুযোগ নেই।’