Thank you for trying Sticky AMP!!

বাজারে সিন্ডিকেট ভাঙার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করে কাজ শুরু করেছি: কৃষিমন্ত্রী

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় বক্তব্য দেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ

বাজারে সিন্ডিকেট বলে কিছু থাকবে না বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী মো. আব্দুস শহীদ। সিন্ডিকেট ব্যবস্থা ভেঙে দেওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, ‘বাজারে সিন্ডিকেট বলতে কিছু থাকবে না। সিন্ডিকেট, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি যাতে নিয়ন্ত্রণ করা যায়; সে জন্য আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছি। হাটবাজারে যারা মজুতদারি করে, তাদের অনুরোধ করব, তারা যেন হারাম ব্যবসা না করে। সিন্ডিকেট কীভাবে ধ্বংস করা যায়, তার জন্য প্রক্রিয়া কী, সেটা উদ্ভাবন করে আমরা কাজ শুরু করেছি।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালায় যোগ দিতে গিয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন কৃষিমন্ত্রী।

গবেষণার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘যে জাতি এগিয়েছে, গবেষণার মাধ্যমে এগিয়েছে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের কৃষিবিজ্ঞানীরা এখানে কাজ করছেন। আমাদের বিজ্ঞানীরা কিছুদিন পরপর যে ভ্যারাইটি বের করেন, এর মাধ্যমে আমরা বিশ্বকে বুঝিয়ে দিতে পারি যে আমরাও পারি, অসম্ভব কোনো কিছুই নয়।’

ধানের নতুন জাতগুলো কৃষকদের মধ্যে প্রচার করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তাহলে কৃষকেরা উৎসাহ পাবেন এবং উৎপাদন বাড়বে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট শুধু দেশে নয়, বরং বিশ্বের মডেল। আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) যেমন ফিলিপাইনকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে, তেমনি ব্রিও বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ সাজ্জাদ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের চেয়ারম্যান বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক দেবাশীষ সরকার প্রমুখ।

ফসল উৎপাদন বাড়ানোর তাগিদ দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ফসল বেশি উৎপাদন করতে পারলে বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে মাথানত করতে হবে না। অপচয়, দুর্নীতি যাতে না হয়; সে বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। সেই সঙ্গে প্রকল্পগুলো সময়মতো শেষ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আন্তর্জাতিক মূল্যের তুলনায় বাংলাদেশে চালের দাম অনেক কম উল্লেখ করে কৃষমন্ত্রী বলেন, ‘চালের দাম যাতে বৃদ্ধি না পায়, সে বিষয়ে আমাদের নজর দিতে হবে।’

স্বাগত বক্তব্যে ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর বলেন, বিভিন্ন গণতান্ত্রিক সরকারের সময় দেশের চালের উৎপাদন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়লেও বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের সময় উৎপাদনের হার সবচেয়ে বেশি, যা দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার পাশাপাশি খাদ্যে উদ্বৃত্তের দেশে পরিণত করেছে। এসব সম্ভব হয়েছে সরকারের কৃষিবান্ধব বিভিন্ন কার্যক্রমের ফলে।

কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গাজীপুরস্থ ব্রি সদর দপ্তরে পৌঁছালে তাঁকে স্বাগত জানান ব্রির মহাপরিচালক শাহজাহান কবীর। এরপর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন মন্ত্রী। পরে তিনি ব্রি উদ্ভাবিত ধানের জাত ও প্রযুক্তির বিভিন্ন স্টল পরিদর্শন করেন।

প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ব্রি ১১৫টি ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ১০৭টি ইনব্রিড এবং ৮টি হাইব্রিড জাত রয়েছে।