Thank you for trying Sticky AMP!!

টানেলের ভেতরে গাড়ি থামিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের সেলফি

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ভেতরে গাড়ি থামিয়ে সেলফি তুলেছেন ছাত্রলীগ নেতা আবু তারেক (ডান থেকে দ্বিতীয়) ও ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিদুয়ানুল ইসলাম (ডানে)

চট্টগ্রামের কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম সুড়ঙ্গপথের (টানেল) ভেতরে এবার গাড়ি থামিয়ে সেলফি তুলেছেন ছাত্রলীগ নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক চেয়ারম্যান। তাঁদের সঙ্গে ছাত্রলীগের কর্মীরা ছিলেন। গতকাল সোমবার রাতে এসব ছবি তোলা হয়। ছবিগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দিয়েছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা ও এক ছাত্রলীগ কর্মী।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের ভেতরে গাড়ি থামানো কিংবা নিচে নামা এবং ছবি তোলার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এসব নির্দেশনা অমান্য করে এই কাজ করেছেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।

এর আগে গত রোববার গভীর রাতে চালুর প্রথম দিনে টানেলের ভেতরে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক মাধ্যমে। এ নিয়ে সমালোচনা চলছে।

দেশের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় এভাবে নির্দেশনা ভঙ্গ করে গাড়ি চালানোর কারণে টানেলের ভেতরে যান চলাচল ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। ভবিষ্যতে নিরাপদে গাড়ি চলাচলের বিষয়টি নিশ্চিত করতে হলে এখনই আইন ভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সড়ক পরিবহনবিশেষজ্ঞরা।

গতকাল রাতে টানেলের ভেতরে দলবল নিয়ে যান চট্টগ্রাম নগর ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক আবু তারেক। তাঁর সঙ্গে ছিলেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার পশ্চিম ঢেমশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ রিদুয়ানুল ইসলাম।

টানেলের ভেতরে ও বাইরে তোলা ছবি নিজের ফেসবুকে দেন ছাত্রলীগের নেতা আবু তারেক। ছবির ক্যাপশন হিসেবে লিখেছেন, ‘স্বপ্নের বঙ্গবন্ধুর টানেলের সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য রাজপথের প্রিয় স্নেহের ছোট ভাইগুলোর সাথে।’

এই ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে আবু তারেক আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি আসলে এক ছোট ভাই অতি উৎসাহী হয়ে এসব ছবি তুলেছে। আমার মোবাইলটা ওর কাছে ছিল। এভাবে ছবি তোলা ঠিক হয়নি আসলে।’

আর ইউপি চেয়ারম্যান রিদুয়ানুল ইসলাম প্রথমে টানেলের ভেতরে ছবি তোলার বিষয়টি অস্বীকার করেন। তবে ছবি আছে জানানো হলে তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

টানেলের ভেতরে গাড়ি থামিয়ে ছবি তোলার বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল কর্তৃপক্ষের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, টানেলের ভেতরে পর্যাপ্ত সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে। সবকিছু তদারকির আওতায় আছে। তবে এখন তো সবে টানেলে গাড়ি চলাচল শুরু হয়েছে। তাই একটু এ রকম হচ্ছে। তবে দ্রুত সব ঠিক হয়ে যাবে।

এদিকে বঙ্গবন্ধু টানেলের ভেতরে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে প্রতিযোগিতা করা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যে গাড়ি ও গাড়ির মালিকদের চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা নিতে গাড়ির নিবন্ধন নম্বর ও গাড়ির মালিকদের নাম-ঠিকানা পুলিশকে দেওয়া হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে তা প্রকাশ করছে না টানেল কর্তৃপক্ষ।

টানেল কর্তৃপক্ষের উপপ্রকল্প পরিচালক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বেপরোয়া গতিতে চালানো গাড়িগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে। গাড়ি-সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে দেওয়া হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে এসব তথ্য পাঠানো হয়েছে। অভিযুক্তরা কোনো ছাড় পাবেন না। কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরামের সহসভাপতি ও সড়ক পরিবহনবিশেষজ্ঞ সুভাষ বড়ুয়া প্রথম আলোকে বলেন, বেপরোয়া গতিতে যাঁরা গাড়ি চালিয়েছেন, তাঁরা প্রভাবশালীদের সন্তান। আর প্রভাবশালীরা নির্দেশনা ভঙ্গ করছেন। শুরুতে হয়তো গাড়ি কম। যখন গাড়ি চলাচল বাড়বে, তখন যদি এ ধরনের ঘটনা ঘটতে থাকে, তাহলে তো ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখা কঠিন হবে। এ জন্য এখনই জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে টানেল কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে।

Also Read: বঙ্গবন্ধু টানেলে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোর ভিডিও, সমালোচনা