Thank you for trying Sticky AMP!!

বিদ্যালয় ছুটির ঘোষণার পর বাড়ির পথে শিশু শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৮ মিনিটে পঞ্চগড় পৌরসভার ডোকরোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

তাপমাত্রা ৮ ডিগ্রিতে নামায় পঞ্চগড়ে প্রাথমিকের পাঠদান বন্ধ হলো বেলা ১১টায়

সকাল ১০টা বেজে ৫৫ মিনিট। শিংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষগুলোয় পাঠদান করছেন শিক্ষকেরা। প্রধান শিক্ষক মাহফুজা হোসেন নিজ কক্ষে বসে দাপ্তরিক কাজ করছেন। এর মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে খবর পেলেন, শীতের কারণে সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শ্রেণিকক্ষে সেই বার্তা পৌঁছে দিতেই হইহুল্লোড় করে বাড়ির দিকে ছুটল শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার পঞ্চগড় সদর উপজেলার শিংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে এমন চিত্রই দেখা গেছে। তবে শিক্ষার্থীদের ছুটি হলেও শিক্ষকদের স্কুলে থাকতে হবে বিকেল চারটা পর্যন্ত। প্রধান শিক্ষক মাহফুজা হোসেন বলেন, ‘শীত অনুভূত হলেও আমরা নিয়ম অনুযায়ী যথাসময়ে পাঠদান শুরু করেছিলাম। তবে ১০টা ৫১ মিনিটে আমি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে শ্রেণি পাঠদান বন্ধের বিষয়ে কর্তৃপক্ষের ঘোষণা পেয়েছি।’

পঞ্চগড়ে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় আজ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোয় শ্রেণি পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই নির্দেশনা পেতে দেরি হওয়ায় পাঠদান শুরু পর জেলার বেশির ভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়েছে বেলা পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত সময়ে।

এদিকে পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে জেলার মাধ্যমিক স্কুলগুলোতেও। তবে দুপুর পৌনে ১২টা পর্যন্ত এ বিষয়ে শিক্ষকেরা কোনো নির্দেশনা পাননি বলে জানা গেছে। এ জন্য দুপুর ১২টা পর্যন্ত বেশির ভাগ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঠদানসহ অন্যান্য কার্যক্রম চলতে দেখা গেছে।

বিদ্যালয় ছুটির ঘোষণার পর বাড়ির পথে শিশু শিক্ষার্থীরা। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে পঞ্চগড় সদর উপজেলার শিংপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তেঁতুলিয়ায় বাতাসে আর্দ্রতা ছিল ৯৭ শতাংশ। তবে উত্তরের এই জনপদে দুপুর ১২টার পর সূর্যের দেখা মিলেছে। উঠেছে ঝলমলে রোদ। টানা দুই দিন পর সূর্যের দেখা মেলায় মানুষের মধ্যে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে।

Also Read: চুয়াডাঙ্গায় শীতের মধ্যে বৃষ্টি, মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ, প্রাথমিকে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীরা

পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মণ্ডল বলেন, ‘আমরা সকাল সোয়া ৯টার দিকে তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার থেকে দিনের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৭ জানতে পেরেছি। এরপর বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্দেশনা দিতে কিছুটা দেরি হয়েছে। এর মধ্যেই বেশির ভাগ স্কুলে পাঠদান শুরু হয়েছিল। তবে ঘোষণাটি শুধু বৃহস্পতিবারের জন্য শ্রেণি পাঠদান বন্ধের। শিক্ষকেরা স্কুলেই অবস্থান করবেন। পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

দুপুরে সোয়া ১২টার দিকে পঞ্চগড় জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সাইফুল মালেক মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইতিমধ্যে প্রতিটি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে বিদ্যালয়গুলোয় বৃহস্পতিবার শ্রেণি পাঠদান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছি। ইতিমধ্যে প্রধান শিক্ষকদের তা পেয়ে যাওয়ার কথা।’

আজ বেলা ১১টা ৯ মিনিটে জেলা শহরের ডোকরোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, নিজের ব্যবহৃত স্মার্টফোনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের দেওয়া নির্দেশনা দেখে শিক্ষার্থীদের ছুটি দিচ্ছেন প্রধান শিক্ষক প্রবীর কুমার সেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সকাল থেকে নিয়মিত পাঠদান শুরু করেছিলাম। তবে নির্দেশনা পাওয়ার পরপরই শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হলো। এর মধ্যে আমরা দুটি ক্লাস নিয়েছি। তবে আগামী রোববার শিক্ষার্থীদের নিয়মিতভাবে স্কুলে আসতে বলা হয়েছে।’

Also Read: তীব্র শীতের কারণে কুড়িগ্রামে বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা

বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জেলা শহরের পঞ্চগড় সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে নিয়মিতভাবে পাঠদান চলতে দেখা গেছে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খায়রুল আনাম মো. আফতাবুর রহমান হেলালী বলেন, বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত পাঠদান বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাননি। এ জন্য নিয়ম অনুযায়ী পাঠদান চলছে।

দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে পঞ্চগড় বিষ্ণুপ্রসাদ (বিপি) সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ে গিয়েও পাঠদান চলতে দেখা গেছে। প্রধান শিক্ষক মো. ছায়ফুল্লাহ বলেন, তাঁরা পাঠদান বন্ধের কোনো নির্দেশনা পাননি। তবে তিনি বলেন, ‘এখন তো দিনে প্রায় অর্ধেক সময় চলে গেছে। আবার সামনে দুই দিন (শুক্র ও শনিবার) এমনিতেই ছুটি থাকবে। এখন আর নির্দেশনা পেয়ে কী হবে?’