Thank you for trying Sticky AMP!!

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার

সংবাদ সম্মেলনে রাবি উপাচার্য, সবাই সচেষ্ট থাকলে এত বড় ঘটনা ঘটত না

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয় ব্যক্তিদের সংঘর্ষের ঘটনার দুই দিন পর সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপাচার্য গোলাম সাব্বির সাত্তার। আজ সোমবার দুপুরে উপাচার্যের সম্মেলনকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, প্রথম দিকে সবাই সচেষ্ট থাকলে এত বড় ঘটনা ঘটত না।

সংবাদ সম্মেলেন উপাচার্য বলেছেন, ‘এখানে আমরা কাউকে দোষারোপ করতে চাই না। এই ধরনের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের আমরা বোঝাতে চেষ্টা করি। কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে যখন ব্যর্থ হয়ে যাই, যখন বহিরাগতদের উসকানি থাকে, তখন নিয়ন্ত্রণের জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রয়োজন পড়ে। তারা কতটুকু কীভাবে দায়িত্ব পালন করেছে, এই বিষয়ে মন্তব্য করতে চাই না। আমার মনে হয় যে প্রথম দিকে সবাই একটু সচেষ্ট থাকলে এত বড় ঘটনা ঘটত না। এটা খুব দুঃখজনক। আমার নিরীহ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করেছে, এটা খুব ন্যক্কারজনক।’

Also Read: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: শান্তিপূর্ণভাবে দাবি আদায়ের পক্ষে সাত ছাত্রসংগঠন, আপাতত আন্দোলন নয়

উপাচার্য বলেন, গন্ডগোল হয়েছিল বাসচালক, হেলপারদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের। এটা দুই পক্ষের মধ্যে থাকলে মিটিয়ে ফেলা যেত। কিন্তু বিনোদপুরের কতিপয় ব্যক্তি এতে জড়িয়ে পড়ে। এতে সামগ্রিকভাবে এটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

ছাত্রদের ওপর গুলি করার আদেশ দিল কে, এই ব্যাপারে প্রশ্নের জবাবে উপাচার্য বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় কাউকে আদেশ করে না। কিন্তু কে গুলি করল, তা আপনারাই বের করেন। আমরা ইতিমধ্যে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছি। তারা সব বিষয়ে তদন্ত করবে। কতজন আহত হলো, গুলি কেন লাগল, কারও কোনো অবহেলা ছিল কি না, তা দেখে সাত দিনের মধ্যে জানাবে। তারা সুপারিশও করবে।’

ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, গতকাল কিছু অবিবেচকের মতো কাজ করেছেন। তাঁরা অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী নন। এঁরা দুষ্কৃতকারী হবেন। প্রথম দিকে আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ছিলেন। পরে আর তাঁদের নিয়ন্ত্রণে ছিল না। বহিরাগতরা নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেন। এই আন্দোলনটাকে সহিংস রূপ দেওয়া, আগুন লাগানো—এটা বহিরাগতদের কাজ ছিল। এই বহিরাগতরা সামান্য ঘটনাকে পুঁজি করে বড় কিছু করতে চেয়েছিলেন। তবে কিছু সংবেদনশীল শিক্ষার্থী বিষয়টি প্রশমনে কাজ করেছেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপাচার্য বলেন, গতকাল শিক্ষার্থীরা বেশ কিছু দাবি করেছেন। তার মধ্যে ছিল বহিরাগত বিষয়টি। ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বহিরাগতদের খুব বেশি দৌরাত্ম হয়ে গেছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে তাঁরা চান বাইরের মানুষ আসুক। সৌন্দর্য উপভোগ করুক। কিন্তু বেশির ভাগ শিক্ষার্থীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করা হয়। আজ থেকে তাঁরা বহিরাগতদের ব্যাপারে কঠোর হবেন। সন্ধ্যার পর কোনো বহিরাগতকে ক্যাম্পাসে থাকতে দেবেন না। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা পরিচয়পত্র নিয়ে চলবেন। শিক্ষার্থীরা শতভাগ আবাসিকতা চেয়েছেন। এটা এখনই সম্ভব নয়। তবে দুটি ১০ তলা ভবনের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। পরে আরও চারটি হল করা হবে।

Also Read: রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়: সংঘর্ষের ঘটনায় এবার পুলিশের মামলা, আসামি ৩০০

সংঘর্ষের জেরে রোববার ও আজ সোমবার ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল। এ বিষয়ে উপাচার্য বলেন, সেদিন তাৎক্ষণিকভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ করা হয়েছিল। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে যথারীতি ক্লাস–পরীক্ষা শুরু হবে। তবে এগুলোর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো।

আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচ বিশ্ববিদ্যালয় বহন করবে উল্লেখ করে গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, এখানে যদি কাউকে মনে হয় উন্নত চিকিৎসা দরকার, তবে তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হবে। এ ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে।

Also Read: দুই দিন ধরে রাজশাহীর বিনোদপুর বাজারে দোকানপাট বন্ধ, চলাচলেও ভোগান্তি

উপাচার্য বলেন, তাঁরা চান স্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক চলুক। আগামীকাল বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের মেসমালিক ও রাজনীতিবিদদের সঙ্গে বসবেন। এ ছাড়া তাঁরা ক্যাম্পাসের প্রগতিশীল রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের সঙ্গেও আলোচনায় বসবেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই সহ-উপাচার্য মো. সুলতান-উল-ইসলাম ও মো. হুমায়ুন কবীর, জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন মো. ইলিয়াছ হোসেন, প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক।

Also Read: চোখে আঘাত পাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে নেওয়া হচ্ছে ঢাকায়