Thank you for trying Sticky AMP!!

সিলগালা করা গুদাম থেকে ১ হাজার ১২৪ বস্তা চাল চুরি

বগুড়া জেলার মানচিত্র

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় খাদ্য কর্মকর্তার জিম্মায় থাকা সিলগালা করা গুদাম থেকে ১ হাজার ১২৪ বস্তা সরকারি চাল চুরি হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে ওই গুদাম পরিদর্শনে গেলে চুরি হওয়ার ঘটনা জানতে পারেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)। এ ঘটনায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেওয়ান আতিকুর রহমান বাদী হয়ে আজ শুক্রবার অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে সারিয়াকান্দি থানায় একটি মামলা করেছেন। চুরি হওয়া চালের বস্তাগুলো সম্প্রতি ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহাদৎ হোসেনের গুদাম থেকে জব্দ করা হয়েছিল।

সারিয়াকান্দির ইউএনও মো. রেজাউল করিম বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে চাল আটকের ঘটনায় জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে ইউএনওকেও রাখা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে গুদাম পরিদর্শনে যান তিনি। এ সময় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক দেওয়ান আতিকুর রহমানও তাঁর সঙ্গে ছিলেন। সিলগালা খুলে গুদামের ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে মাত্র ছয় বস্তা চাল বাদে আর কোনো বস্তা নেই। গুদামটি নির্মাণাধীন ছিল। দরজা–জানালা না থাকায় চাল চুরি হয়ে গেছে।

সিলগালা করা গুদাম থেকে চাল চুরির ঘটনায় খাদ্য বিভাগের গাফিলতি ছিল কি না, জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, চাল পাহারার জন্য উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক থানা-পুলিশকে লিখিত চিঠি দিয়েছেন। চুরি হলে দায় পুলিশের।

খাদ্য বিভাগে কথা বলে জানা গেছে, সরকারি চাল গুদামে মজুত করার বিষয়ে একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে গত ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যায় সারিয়াকান্দির পৌর শহরের বাগবেড় এলাকায় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও যুবলীগ কর্মী শাহাদৎ হোসেনের চালের গুদামে অভিযান চালায় জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জান্নাতুল নাঈম। অভিযানের বিষয়টি টের পেয়ে শাহাদৎ আগেই পালিয়ে যান। পরে কৃষি বিপণন নিবন্ধন এবং ক্রয়–বিক্রয় রসিদ দেখাতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং অবৈধভাবে সরকারি কর্মসূচির চাল মজুতের দায়ে শাহাদৎকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। একই সঙ্গে ১ হাজার ১৩০ বস্তা চালসহ গুদামটি সিলগালা করে তা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের জিম্মায় দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।

গুদামের মালিক ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শাহাদৎ হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, খাদ্য বিভাগ থেকে লাইসেন্স নিয়ে তিনি চালের ব্যবসা করেন। কাবিখা কর্মসূচির ওই চাল তিনি বৈধভাবেই কিনেছেন। এসব চালের বস্তা কীভাবে কোথা থেকে এসেছে, সেটাও উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তাদের অজানা নয়। তবু মিথ্যা তথ্যের ভিত্তিতে ভ্রাম্যমাণ আদালত সেখানে গিয়ে চাল জব্দ করেছেন। তিনি বলেন, ‘গণনা না করেই জব্দ তালিকায় চালের পরিমাণ মনগড়াভাবে ১ হাজার ১৩০ বস্তা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে চাল ছিল এর অর্ধেক। এখন সিলগালা করা গুদাম থেকে চাল কীভাবে গায়েব হলো, সেটা আমার জানা নেই। নির্মাণাধীন গুদাম। চাল সেখানে রাখা ঠিক হয়নি। পুলিশের জিম্মায় দেওয়া দরকার ছিল। ওই চাল সরানোর সঙ্গে আমার সংশ্লিষ্টতা নেই।’

সারিয়াকান্দি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আশরাফুল আলম বলেন, সিলগালা করা গুদাম থেকে চাল চুরির ঘটনায় শুক্রবার মামলা করা হয়েছে। তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।