Thank you for trying Sticky AMP!!

আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের কাজে বাধা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের

দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত শনিবার আওয়ামী লীগের এক দল নেতা–কর্মী আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের বের দেন

রাজশাহীর পুঠিয়া ও দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের কাজে যোগ দিতে বাধা দেওয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁদের হাসপাতাল বের করে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত শনিবার ১৫ জন কর্মীকে ওই দুই সরকারি হাসপাতাল থেকে বের করে দেওয়া হয়। আজ বুধবার পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া নতুন-পুরোনো কোনো কর্মচারী দায়িত্ব পালন করেননি। আর দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তিনজন ভয়ে কর্মস্থলে যাননি।

সিভিল সার্জনের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পুঠিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কুক পদে দুজন, একজন আয়া, একজন নিরাপত্তাপ্রহরী, একজন ইমার্জেন্সি অ্যাটেনডেন্ট ও দুজন ওয়ার্ড বয় নিয়োগ দেওয়া হয়। দুর্গাপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়োগ দেওয়া হয় একজন কুক, একজন নিরাপত্তাপ্রহরী, একজন আয়া, তিনজন ওয়ার্ড বয় ও তিনজন পরিচ্ছন্নতাকর্মী। রাজশাহীর সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক গত ২০ মার্চ তাঁদের নিয়োগ অনুমোদন করেন। ২৫ মার্চ তাঁরা কর্মস্থলে যোগ দেন। এই কর্মীদের সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকার আল-আরাফাত সার্ভিসেস (প্রা.) লিমিটেড।

গত শনিবার দুর্গাপুর উপজেলা কৃষক লীগের সাবেক সভাপতি রোকনুজ্জামানের নেতৃত্বে একদল লোক এসে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ করা কর্মচারীদের বের হয়ে যেতে বলেন। তখন ভয়ে তাঁরা হাসপাতাল থেকে চলে যান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন কর্মী প্রথম আলোকে বলেন, হুমকির কারণে তাঁরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। এ জন্য কাজে যেতে পারছেন না। কেউ কেউ ঝুঁকি নিয়েই কাজে গেছেন। তবে তিনি যেতে পারেননি।

এই অভিযোগ সম্পর্কে রোকনুজ্জামান মুঠোফোনে বলেন, স্থানীয় লোকজনের প্রত্যাশা থাকে যে তাঁরা কাজ পাবেন। বাইরে থেকে লোক নেওয়ার কারণে স্থানীয় মানুষের মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এই ক্ষোভের কারণে স্থানীয় লোকজনই তাঁদের ডিউটি করতে বাধা দিয়েছেন।

এ ব্যাপারে দুর্গাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মাহবুবা খাতুন মঙ্গলবার প্রথম আলোকে বলেন, আউটসোর্সিংয়ে নিয়োগ পাওয়া একজনকে মারধর করা হয়েছে। তিনজন বেশি নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন। অন্যদের কাজে যোগ দেওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি সিভিল সার্জন ও দুর্গাপুর থানায় মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার পুঠিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নতুন নিয়োগ পাওয়া কর্মচারীদের বের করে দেওয়া হয়। এরপর থেকে সেখানে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া নতুন ও পুরোনো কর্মচারীরা কাজ করছেন না।

ঘটনার দিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন পুঠিয়া উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আগে যাঁরা নিয়োগ পেয়েছিলেন, এখনো তাঁদের ১০ মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। তাঁদের তিন বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মেয়াদ বাড়ানোর কথা ছিল। তাঁদের সাতজনের মধ্যে পাঁচজনকেই বাদ দেওয়া হয়েছে। তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন, এক-দেড় লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে নতুন নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাদ পড়া কর্মচারীদের নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে গিয়েছিলেন। তবে তাঁকে পাননি।

এ সম্পর্কে রাজশাহীর সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে যাওয়ার কথা। কর্মীদের কাজে যোগদান করার কথা। এখন বর্তমান অবস্থা কী, খোঁজ নিয়ে তিনি জানাতে পারবেন।