Thank you for trying Sticky AMP!!

বাড়িটির আঙিনায় এমন জলাবদ্ধ অবস্থা আট মাস ধরে। গত শনিবার বিকেলে জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার শ্যামগঞ্জ কালীবাড়ি বাজার এলাকায়

বাড়ির আঙিনায় ৮ মাস ধরে হাঁটুপানি, দুর্ভোগ

নোংরা পানিতে অবরুদ্ধ থাকা পরিবারটি ওই এলাকার বাসিন্দা জগলু মোহন চৌধুরীর। জগলু মোহন চৌধুরী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য।

বন্যা বা বৃষ্টি হয়নি। তবুও একটি বাড়ির আঙিনায় হাঁটুপানি। পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা বিকল হয়ে নোংরা পানি বাড়ির আঙিনায় গিয়ে ঢোকে। দীর্ঘদিন ধরে জমে থাকা পানি প্রতিনিয়ত ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। নোংরা পানিতে ময়লা-আবর্জনা ভাসছে। আট মাস ধরে পরিবারটি নোংরা পানিতে চরম দুর্ভোগের মধ্যে থাকলেও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা সচল করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। ঘটনাটি জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার সিধুলী ইউনিয়নের শ্যামগঞ্জ কালীবাড়ি বাজার এলাকায়।

নোংরা পানিতে অবরুদ্ধ থাকা পরিবারটি ওই এলাকার বাসিন্দা জগলু মোহন চৌধুরীর। জগলু মোহন চৌধুরী অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য। বর্তমানে তিনি কালীবাড়ি বাজারের মুদি ব্যবসায়ী।

পরিবারটির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বাজারের পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থা রয়েছে, কিন্তু নালা থেকে পানি নামার মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। নালার মুখ মাটি ও ময়লা-আবর্জনায় ভরা। এর ফলে ড্রেনের পানি উপচে ওই বাড়ির আঙিনায় প্রবেশ করে। আট মাস ধরে ড্রেনের নোংরা পানি ওই বাড়িতে ঢুকছে। শুধু এই পরিবারই নয়, সামান্য বৃষ্টি হলে আশপাশের বেশির ভাগ বাড়ির আঙিনায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা বিকল থাকায় পানি আর নামে না। এতে ওই পরিবারসহ আশপাশের লোকজন চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে।

গত শনিবার বিকেলে সরেজমিন গিয়ে বাড়ির গেটে ঢুকতেই দেখা যায়, বাড়ির ভেতরের উঠানে হাঁটুসমান ময়লাযুক্ত পানি। পানি থেকে ছড়াচ্ছে তীব্র দুর্গন্ধ। কালো কুচকুচে পানি দেখেই বোঝা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জমে পানির রং এমন হয়েছে। পানির মধ্যে বিভিন্ন প্রকার বর্জ্য ভাসছে। মশা ও মাছি ভনভন করছে। পরিবারটির সদস্যেরা ঘরের মধ্যে বন্দী অবস্থায় রয়েছেন। ঘরের বারান্দায় রান্নার কাজ করা হয়। জরুরি কোনো কাজ না থাকলে পরিবারটির সদস্যেরা ঘর থেকে বের হন না। এভাবেই আট মাস ধরে পরিবারটি দুর্ভোগের মধ্যে আছে।

জগলু মোহন চৌধুরী বলেন, ‘বাজারের ড্রেনের পানি উপচে আমার বাড়ির ভেতরে ঢুকেছে। প্রায় সাত-আট মাস ধরে এ অবস্থা চলছে। পানির দুর্গন্ধে বাড়িতে থাকা যায় না। মশার যন্ত্রণায় আর থাকতে পারছি না। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে একাধিকবার অনুরোধ করেছি। আমরা এ অবস্থা থেকে মুক্তি চাই। ড্রেনেজ–ব্যবস্থা সচল করা হলেই বাড়ির আঙিনা থেকে পানি নেমে যাবে। কিন্তু আট মাসেও কেউ ড্রেনটি সচল করেনি।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদ শ্যামগঞ্জ কালীবাড়ি বাজারের পানিনিষ্কাশনের নালাটি নির্মাণ করে। নালাটি বাজারের মধ্য দিয়ে সিধুলী ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে দিয়ে একটি ডোবায় গিয়ে শেষ হয়। জগলু মোহন চৌধুরীর বাড়িটি ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে। দীর্ঘদিন ধরে নালাটি কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার করে না। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের অংশে নালা ভরাট হয়ে পানি উপচে ওই বাড়িতে প্রবেশ করে। আশপাশের বাড়িতেও কিছু পানি প্রবেশ করত। তবে তারা মাটি কেটে আঙিনা উঁচু করায় এখন আর পানি ঢোকে না।

অভিযোগের বিষয়ে সিধুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান ওরফে মিরন বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে ড্রেনের মুখে মাটি পড়ে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। মাটি কিছুটা সরানো হয়েছে। ড্রেনের মেরামতকাজ শুরু হয়েছে। খুব দ্রুত ওই বাড়িসহ কোথাও আর পানি থাকবে না।

স্থানীয় এক বাসিন্দা শ্রী পলাশ চৌধুরী বলেন, বাজারের পানি নামার ড্রেনের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। একটু বৃষ্টি হলেই বাজারের ময়লা-আবর্জনা ও নোংরা পানি বাড়ির ভেতরে ঢুকে যায়। বাড়িতে এখন দুর্গন্ধে থাকা যায় না। সবার প্রথমে জগলু মোহন চৌধুরীর বাড়িতে বেশি পানি ঢোকে। পরিবারটি এখন খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছে।