Thank you for trying Sticky AMP!!

বন্য প্রাণী রক্ষায় কাজ করছেন শিক্ষার্থীরা 

গাইবান্ধায় গত চার বছরে দেড় শতাধিক বন্য প্রাণী উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

গাইবান্ধা সদর উপজেলার কামারজানি এলাকায় ব্রহ্মপুত্র নদে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি জেলেদের জালে ধরা পড়ে ঘড়িয়ালটি। পরে তীরের সদস্যরা ঘড়িয়ালটি উদ্ধার করে নদে অবমুক্ত করেন

বন্য প্রাণীর নিরাপদ আবাসস্থল গড়তে কাজ করছেন গাইবান্ধা সরকারি কলেজের একদল শিক্ষার্থী। গত চার বছরে তাঁরা নানা প্রজাতির দেড় শতাধিক বন্য প্রাণী উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে অবমুক্ত করেছেন।

ওই শিক্ষার্থীরা টিম ফর এনার্জি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চের (তীর) সদস্য। শিক্ষার্থীদের এই সংগঠন ২০১১ সালের ৫ জুন বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে গঠিত হয়। বন্য প্রাণী সংক্ষরণে কাজ করায় স্বীকৃতিও পেয়েছে তীর। ২০২২ সালের ৫ জুন বন্য প্রাণী সংরক্ষণে নিবেদিত প্রতিষ্ঠান ক্যাটাগরিতে তীরকে জাতীয় পদক (বঙ্গবন্ধু অ্যাওয়ার্ড ফর ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন-২০২১) দেয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়।

গাইবান্ধার প্রত্যন্ত এলাকায় বন্দুক দিয়ে, ফাঁদ পেতে কিংবা নানা উপায়ে বন্য প্রাণী শিকার করা হতো। ফলে প্রকৃতি থেকে হারিয়ে গেছে অনেক প্রজাতির বন্য প্রাণী। এ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে ২০১৯ সালের ২০ জুন গাইবান্ধা সরকারি কলেজে বিশ্ব পরিবেশ দিবস পালিত হয়। ওই দিন কলেজের শিক্ষার্থী জিসান মাহমুদের প্রচেষ্টায় তীরের গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখা গঠিত হয়। ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর জিসান মাহমুদকে আহ্বায়ক ও সোলায়মান সরকারকে সদস্যসচিব করে তীর গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার কমিটির গঠন করা হয়। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্যসংখ্যা দুই শতাধিক। বন বিভাগ ও বগুড়ার তীর কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে বন্য প্রাণী বিষয়ে দক্ষতা উন্নয়ন সংগঠনটির কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

গাইবান্ধায় শিক্ষার্থীরা ২০১৯ সালের ২০ জুন থেকে চলতি বছরের ৪ জুন পর্যন্ত প্রায় ৪ বছরে বিভিন্ন প্রজাতির দেড় শতাধিক বন্য প্রাণী উদ্ধার করেছেন। এগুলোর মধ্যে দেশি কানিবক ৬টি, হিমালয়ান শকুন ২১, কালা শকুন ১, ভুবনচিল ৫, পাহাড়ি ময়না ১, ঝুঁটিশালিক ৫, বনবিড়াল ১৪, পানকৌড়ি ৩, গোবক ৩, ঘড়িয়াল ৩, বসন্তবৌরি ১, ঘুঘু ৩, খয়ড়াপ্যাঁচা ১, তিলাঘুঘু ১৪, মাছরাঙা ৪, গঙ্গা কাছিম ১, ছানাসহ ৫টি পাতি সরালি হাঁস, দেশি করিকাইট্টা প্রজাতির ৫টি কচ্ছপ রয়েছে। 

এ ছাড়া তীরের সদস্যরা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যবিষয়ক কর্মশালা, কলেজ ক্যাম্পাস পরিষ্কার–পরিচ্ছন্নতা ও সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন, সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করেন।

তীরের গাইবান্ধা সরকারি কলেজ শাখার সভাপতি জাহিদ রায়হান বলেন, ‘চোখের সামনে পাখি শিকার করলেও যাঁরা এত দিন নীরব ছিলেন, তাঁরা এখন আমাদের কাজ দেখে সচেতন হচ্ছেন। উদ্ধারকাজে সহযোগিতা করছেন। সবাইকে নিয়ে পরিবেশবান্ধব ও জীববৈচিত্র্যময় গাইবান্ধা গড়তে চাই।’