Thank you for trying Sticky AMP!!

উৎপাদন এলাকায়ও মরিচের দামে ঝাঁজ, সবজির দাম চড়া

পাইকারী বাজার থেকে খুচরা বাজারে বিক্রির জন্য সবজি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। শনিবার বগুড়া শহরের ৩ নম্বর রেলঘুমটি এলাকায়

উৎপাদন এলাকা বগুড়ার বাজারে হঠাৎ করেই দাম বেড়েছে কাঁচা ও শুকনা মরিচের। প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের প্রায় ৫০ টাকা ও শুকনা মরিচের দাম ১০০ টাকা বেড়েছে।

এদিকে উত্তরাঞ্চলে সবজির বড় পাইকারি মোকাম বগুড়ার মহাস্থান হাটে এক সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম পাইকারি পর্যায়ে কেজিতে গড়ে ১০ টাকা বেড়েছে।

একবার হাতবদলের পর শহরের খুচরা বাজারে প্রতি কেজি সবজিতে দাম বেড়েছে ২০ টাকা। মহাস্থান হাটে সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলেও এক সপ্তাহের ব্যবধানে শনিবার বিভিন্ন ধরনের সবজির দাম মণপ্রতি ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

শনিবার সকালে মহাস্থান হাটে কৃষক ও আড়তদারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, পাইকারি পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচ, শসা, বেগুন, করলা ও পটোলের। এক সপ্তাহ আগে প্রতি কেজি করলা ৪৫ টাকা, শসা ও বেগুন ৩০, পটোল ২০, কাঁচা মরিচ ১৩০ ও শুকনা মরিচ ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়েছিল। দাম বেড়ে গতকাল করলা ৫৫ টাকা, শসা ৪৫, বেগুন ৪০, পটোল ৩০, কাঁচা মরিচ ১৭৫ ও শুকনা মরিচ ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

একইভাবে শুক্রবার মহাস্থান পাইকারি মোকামে প্রতি কেজি পেঁপে ১০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৩০, কচুমুখি ২৫, বরবটি ৪৫, ঝিঙে ৩৫ ও কাঁকরোল ২৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে।

এক সপ্তাহ আগে এ মোকামে প্রতি কেজি পেঁপে ৭ টাকা, ঢ্যাঁড়স ২৪, কচুমুখি ২০, বরবটি ৪০, ঝিঙে ৩০ ও কাঁকরোল ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

এত বেশি দামে কাঁচা মরিচ কখনো বিক্রি করেননি বলে জানিয়েছেন কয়েকজন কৃষক। রায়নগর গ্রামের কৃষক সাজু মিয়া বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে খেতত থ্যাকে শসা তুলে হাটত লিয়ে আসে ব্যাচনো ৩০ টেকা কেজি দরত, আজক্যা বেচ্চি ৪৫ টেকা কেজি। এত দামে সবজি কোনো দিন ব্যাচপার পারিনি।’

পাইকারি আড়তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে একবার হাতবদলের পর সবজির দাম বেড়েছে খুচরা বাজারেও। শনিবার বগুড়া শহরের কলোনী বাজার ও ফতেহ আলী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে গড়ে ২০ টাকা বেড়েছে। দ্বিগুণ বেড়ে একলাফে ৪০০ টাকা কেজি উঠেছে ধনেপাতার দাম। গত সপ্তাহে এই ধনেপাতা বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকা কেজি দরে।

কলোনী ও ফতেহ আলী খুচরা বাজারে গত সপ্তাহে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা, বেগুন ৬০, পটোল ৪০, করলা ৬০, ঢ্যাঁড়স ৩৫, চিচিঙ্গা ৩০, তড়ই ৪০, পেঁপে ২৫, মুলা ৩০, কাঁকরোল ৪০, কচুমুখি ৫০, শসা ৩০, মিষ্টিকুমড়া ৩০ এবং চাল কুমড়া প্রতিটি ৩০ টাকা ছিল।

Also Read: বগুড়ায় হাঁসের ডিমের দাম হালি ৬০ টাকা

সপ্তাহ ঘুরে শনিবার এই দুই বাজারে প্রতি কেজি কাঁচামরিচ ২৪০ টাকা, বেগুন ৮০, পটোল ৫০, করলা ৮০, ঢ্যাঁড়স ৪০, চিচিঙ্গা ৪০, তড়ই ৫০, পেঁপে ৩০, মুলা ৪০, কাঁকরোল ৬০, কচুমুখি ৬০, শসা ৮০, মিষ্টিকুমড়া ৪০ এবং চাল কুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

দাম বেড়েছে সব ধরনের শাকের। এক সপ্তাহ আগে ৩০ টাকা কেজি দরের লালশাক একলাফে ৫০ টাকা, ৩০ টাকা কেজি দরের লাউশাক ও পাটশাক ৪০ টাকা, ২০ টাকা কেজি দরের পুঁইশাক ও কলমিশাক এখন ৩০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

মহাস্থান হাটের ব্যবসায়ী ও আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। তবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে দামে।

শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এক সপ্তাহ আগেও হাট থেকে চট্টগ্রামে সবজি পাঠাতে ট্রাকভাড়া ছিল ২০ হাজার টাকা। এখন ৫ হাজার টাকা ভাড়া বাড়ায় এক ট্রাক সবজি পরিবহনে গুনতে হচ্ছে ২৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া মহাস্থান থেকে কারওয়ান বাজারের ট্রাকভাড়া ছিল ১৪ হাজার ও সিলেটের ২২ হাজার টাকা। এখন কারওয়ান বাজারের ভাড়া ১৮ হাজার ও সিলেটের ভাড়া ২৮ হাজার টাকা। পরিবহন খরচ বেড়ে যাওয়ায় সবজির দামও কিছুটা বেড়েছে।

কলোনী বাজারের সবজির ব্যবসায়ী জনি মিয়া বলেন, তেলের দাম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সব জিনিসের দাম বেড়েছে। মরিচ কিনতেই হচ্ছে বেশি দামে। এ কারণে বিক্রিতেও দাম বেড়েছে।