Thank you for trying Sticky AMP!!

‘ঘুষ নেওয়া ও ভিডিও করতে দেখে ফিরিয়ে দেওয়া’র ভিডিও ভাইরাল

পাবনা জেলার মানচিত্র

পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া শাখা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপকের (ডিজিএম) ‘ঘুষের টাকা নেওয়া এবং এ দৃশ্য ভিডিও করতে দেখে টাকা ফিরিয়ে দেওয়া’র একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর ওই গ্রাহক অভিযোগ করেন, ঘুষ দাবি করায় টাকা দিচ্ছিলেন। তবে ডিজিএমের দাবি, তাঁকে ফাঁসাতে বকেয়া বিদ্যুৎ বিলের টাকা দিতে গিয়ে সেই দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। ঘটনায় তিনি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা অরবিন্দ সরকার প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কর্তৃপক্ষের একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওই কার্যালয়ের ডিজিএমের হাতে ৫০০ টাকার একটি বান্ডিল দিচ্ছেন এক গ্রাহক। এ সময় ওই গ্রাহকের পেছনে থাকা এক ব্যক্তি ভিডিও ধারণ করছেন। তিনি গ্রাহককে প্রশ্ন করছেন, ‘কিসের টাকা দিলেন?’ গ্রাহক বলছেন, ‘মিষ্টি খেতে চাইছিলেন, তাই।’ এরপর ডিজিএম ভিডিও ধারণের বিষয়টি টের পেয়ে টাকাটা ফেরত দেন এবং উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। ভিডিও ধারণের ঘটনাটি গত বুধবার সকালের হলেও গতকাল শনিবার এটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

ওই কার্যালয়ের একাধিক সূত্র জানায়, ঘুষ দিতে যাওয়া গ্রাহকের নাম আমিনুল ইসলাম। ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া এলাকায় পৈতৃকভাবে তাঁদের চালকল রয়েছে। টাকা হাতে নিয়ে ফিরিয়ে দেওয়া ডিজিএমের নাম সাজ্জাদুর রহমান।

জানতে চাইলে গ্রাহক আমিনুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি একটি বাণিজ্যিক বিদ্যুৎ-সংযোগের জন্য কিছুদিন ধরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির দাশুড়িয়া কার্যালয়ে ঘুরছিলেন। এ জন্য সব ফি পরিশোধ করেছেন। এরপরও তাঁর সংযোগটি দেওয়া হচ্ছিল না। এর কারণ জানতে চাইলে ডিজিএম তাঁর কাছে মিষ্টি খাওয়ার জন্য এক লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। ওই দিন ডিজিএমকে ৫০ হাজার টাকা দিচ্ছিলেন। ওই সময় পেছন থেকে কেউ একজন ভিডিওটি ধারণ করেন। তিনি ওই ব্যক্তিকে চেনেন না। পরে ভিডিওটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তিনি বিষয়টি জানতে পারেন।

তবে ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমান ওই গ্রাহকের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, আমিনুল ইসলামের বাবা আনিছুর রহমানের নামে ৯ লাখ ৩ হাজার ৯৪৮ টাকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। টাকাটি আট কিস্তিতে পরিশোধের জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। গত বুধবার সকাল ১০টার দিকে তিন ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে কার্যালয়ে আসেন আমিনুল। একপর্যায়ে তিনি ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল বের করে তাঁর হাতে দেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি ভিডিও ধারণ করতে থাকেন। তিনি কলবেল টিপে অন্য সহকর্মীদের ডাকলে তাঁরা তিনজন টাকা নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান।

তাঁকে ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে বকেয়া বিলের টাকা হাতে দিয়ে ভিডিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাজ্জাদুর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানিয়ে ঈশ্বরদী থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।

জানতে চাইলে পাবনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর মহাব্যবস্থাপক আকমল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি জানার পর ডিজিএম সাজ্জাদুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় বিভাগীয় তদন্তের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে তদন্ত শুরু করা হবে। প্রতিবেদন পেলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে।