Thank you for trying Sticky AMP!!

সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেনকে অপহরণ মামলায় ৬ আসামির জামিন

নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল

নেত্রকোনা-৫ (পূর্বধলা) আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন বেলালকে (বীর প্রতীক) অপহরণ, স্বাক্ষর জাল, নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে করা মামলায় আসামিদের জামিন দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আসামিরা নেত্রকোনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে বিচারক তাঁদের জামিন মঞ্জুর করেন।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান তালুকদার প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, মামলার নয়জন আসামির মধ্যে ছয়জন আসামি আজ আদালতে হাজির হয়ে জামিন প্রার্থনা করেন। জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শাহাদাত হোসেন তাঁদের মামলার আগামী ধার্য তারিখ ২৬ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করেন।

বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেন দীর্ঘ ২০ বছর ধরে পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি টানা তিনবারের সংসদ সদস্য। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি অসুস্থ থাকায় কারও সঙ্গে তেমন একটা কথা বলেন না। এ ছাড়া স্মৃতিশক্তিও কমে গেছে তাঁর। তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটিও দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা, পুলিশ ও আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেনকে অপহরণ, তাঁর স্বাক্ষর জাল, নাম ভাঙিয়ে টাকা আদায় করাসহ বিভিন্ন অভিযোগে ২৩ আগস্ট তাঁর স্ত্রী রওশন হোসেন বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। এতে নয়জনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা সবাই এলাকায় ‘সংসদ সদস্যের লোক’ হিসেবে পরিচিত।

মামলায় প্রধান আসামি করা হয় নাদিয়া আক্তার নামের এক তরুণীকে। এ ছাড়া ওই তরুণীর ছোট ভাই পূর্বধলা সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইসরাক আহমেদ ওরফে তাইফকে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিদের মধ্যে আছেন পূর্বধলা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সোলায়মান হোসেন, সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠ (পিএস) হিসেবে পরিচিত ফেরদৌস আলম, কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, দুই কলেজশিক্ষক নাদেরুজ্জামান স্বপন ও রতন পাল, সাবেক ছাত্রলীগ কর্মী বর্তমানে পরিসংখ্যান কার্যালয়ে কর্মরত শাহ আলীম ও সংসদ সদস্যের গাড়িচালক শফিকুল ইসলাম।

এঁদের মধ্যে নাদিয়া আক্তার, ইসরাক আহমেদ, ফেরদৌস আলম, কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, নাদেরুজ্জামান স্বপন ও রতন পাল আজ জামিন পেয়েছেন। অন্য তিন আসামি গতকাল বুধবার উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়েছেন বলে জানা গেছে।

Also Read: নেত্রকোনায় সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেনের অপহরণের অভিযোগ নিয়ে ধূম্রজাল

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, আসামিরা একে অপরের যোগসাজশে বীর মুক্তিযোদ্ধা ওয়ারেসাত হোসেনকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিতে থাকেন। ফেরদৌস আলম ও কামরুজ্জামান উজ্জ্বলকে সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও অফিস-আদালতে তাঁর কাজ দেখভালের মৌখিক দায়িত্ব দেওয়ার পর তাঁরা সংসদ সদস্যের নাম ভাঙিয়ে প্রচুর টাকা আত্মসাৎ করেন। অন্য আসামিরা গত ৭ ফেব্রুয়ারি ওয়ারেসাত হোসেনকে ভুল বুঝিয়ে তাঁর গ্রামের বাড়ি কাজলা থেকে একটি গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে যান। সেখানে সংসদ সদস্যের নিজের বাসা উত্তরায় না নিয়ে ধানমন্ডি এলাকায় একটি বাসায় তাঁকে আটকে রাখা হয়। পরে গাড়িচালক সংসদ সদস্যের পরিবারকে জানান, ওয়ারেসাত হোসেন বিদেশে চলে গেছেন।

মামলায় বাদী আরও উল্লেখ করেন, তাঁর স্বামীকে (ওয়ারেসাত হোসেন) জিম্মি করে স্বাক্ষর জাল করে নাদিয়া আক্তারের সঙ্গে বিয়ের একটি ভুয়া কাবিননামা তৈরি করা হয়। এরপর স্বাক্ষর জাল করে তাঁকে (রওশন হোসেন) তালাকের একটি কাগজ ফটোকপি করে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়। পরে গত ২৭ মার্চ বিকেলে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করে ঢাকার একটি বাসা থেকে সংসদ সদস্যকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন। পরদিন চিকিৎসার জন্য ওয়ারেসাত হোসেনকে মালয়েশিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মেয়ের বাসায় রেখে চিকিৎসা শেষে ১১ আগস্ট দেশে আনা হয়। মামলায় ওয়ারেসাত হোসেনকে প্রধান সাক্ষী করা হয়েছে। এ ছাড়া আরও আটজনকে সাক্ষী করা হয়।

Also Read: সংসদ সদস্য ওয়ারেসাত হোসেনকে অপহরণ, স্বাক্ষর জালের অভিযোগে স্ত্রীর মামলা