Thank you for trying Sticky AMP!!

গোলাম দস্তগীর গাজী ১৪৪৬ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক, দেনা ১০২২ কোটি

গোলাম দস্তগীর গাজী

গত ১৫ বছরে নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য এবং বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর (বীর প্রতীক) সম্পদ ও ঋণ দুটিই হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি মিলিয়ে বর্তমানে তিনি প্রায় ১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকার মালিক। এই সম্পদের বিপরীতে তাঁর ব্যাংকঋণ ৯৩৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে দেনা ১ হাজার ২২ কোটি টাকা।

নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।

১৫ বছরে গোলাম দস্তগীরের স্ত্রী রূপগঞ্জের তারাব পৌরসভা মেয়র হাসিনা গাজীর অস্থাবর সম্পদ ২ কোটি ১৯ লাখ টাকা থেকে বেড়ে ৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা হয়েছে। ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকার স্থাবর সম্পত্তি বেড়ে হয়েছে ৪ কোটি ৬২ লাখ। হাসিনার কাছে থাকা স্বর্ণালংকারের দাম দেখানো হয়েছে ২৪ হাজার টাকা।

Also Read: তৃণমূলের তৈমুরের জমি কমেছে, আয় ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে

স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তির পরিমাণ ১ হাজার ৪৫৭ কোটি টাকার বেশি হলেও তাঁদের কাছে সোনা আছে মাত্র ১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার, বর্তমান বাজার অনুযায়ী এর পরিমাণ দেড় ভরিরও কম।

গোলাম দস্তগীর এ নিয়ে টানা চতুর্থ দফায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচন করছেন। তিনি শিল্পগোষ্ঠী গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান। ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য জমা দেওয়া হলফনামার সঙ্গে এবারের হলফনামা তুলনা করে দেখা গেছে, ১৫ বছরে পাটমন্ত্রীর সম্পদ বেড়েছে ২৫ গুণ। সম্পদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ১৫ বছরে ব্যাংকঋণ বেড়েছে ২১ গুণ।

Also Read: ১৫ বছরে নজরুল ইসলামের জমি বেড়ে ৪২ গুণ

১৫ বছর আগের হলফনামা অনুযায়ী স্নাতক পর্যন্ত পড়াশোনা করা গোলাম দস্তগীর পেশায় ভবনের ভাড়া, ব্যবসা, বোনাস শেয়ার, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বিনিয়োগের লভ্যাংশ ও বোর্ড মিটিং বাবদ বছরে ৭ কোটি ৬৭ লাখ ৩৮ হাজার টাকা আয় করতেন। এখন তিনি ভবনের ভাড়া, ব্যবসা, বিনিয়োগের লভ্যাংশ ও সংসদ সদস্য ভাতা বাবদ বছরে ৮৩ কোটি ২৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা আয় করেন। এ হিসাবে ১৫ বছরে তাঁর বার্ষিক আয় বেড়েছে প্রায় ১১ গুণ।

Also Read: নারায়ণগঞ্জে চারটি আসনে সাত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল, বৈধ ৩৮

১৫ বছর আগে গোলাম দস্তগীরের নগদ ৯৪ লাখ ১২ হাজার টাকা, ১৬ লাখ ৭ হাজার টাকা ব্যাংক জমা, সাড়ে ৪ কোটি টাকার কোম্পানি শেয়ার, ৩৯ লাখ ৮০ হাজার টাকার যানবাহনসহ মোট ৪৫ কোটি ৯৭ লাখ ৬০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ ছিল। স্থাবর সম্পদ ছিল ১১ কোটি ৯ লাখ ৬০ হাজার টাকার। স্থাবর–অস্থাবর মিলিয়ে মোট ৫৭ কোটি ৭ লাখ ২০ হাজার টাকার সম্পদ ছিল।

এবারের হলফনামা থেকে জানা যায়, ১৫ বছর পর নগদ ৯ কোটি ৬২ লাখ টাকা, ৬১ লাখ ৪৩ হাজার কোটি টাকা ব্যাংকে জমা, ২২ কোটি ৫ লাখ টাকার শেয়ার, ১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার যানবাহনসহ অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৩৩৮ কোটি ৮৬ লাখ ৩৯ হাজার কোটি টাকা। অকৃষি জমি ও ভবন বাবদ স্থাবর সম্পদ আছে ১০৭ কোটি ৩১ লাখ টাকার। বর্তমানে স্থাবর–অস্থাবর মিলিয়ে মোট ১ হাজার ৪৪৬ কোটি টাকার সম্পদ আছে গোলাম দস্তগীরের। ২০০৮ সালের তুলনায় যা ২৫ গুণ বেশি।

সম্পদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ঋণও বেড়েছে গোলাম দস্তগীরের। ২০০৮ সালে তাঁর ব্যাংকঋণ ছিল ৪৩ কোটি ৩৫ লাখ  ৮৯ হাজার টাকা। বর্তমানে গোলাম দস্তগীরের ব্যাংকঋণ ৯৩৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। এই হিসাবে পাটমন্ত্রীর ঋণ বেড়েছে ২১ গুণ।
২০০৮ সালের হলফনামা অনুযায়ী গোলাম দস্তগীর গাজী টায়ারস, গাজী ট্যাংকস, গাজী কমিউনিকেশনসহ গাজী গ্রুপের ১০টি পৃথক প্রতিষ্ঠান, একটি ব্যাংক, একটি টেলিভিশন চ্যানেল ও একটি ইনস্যুরেন্স কোম্পানিতে বিনিয়োগ বাবদ আয় করতেন।

সম্পদ ও ঋণ বৃদ্ধির বিষয়ে গোলাম দস্তগীর বলেন, ‘গত পনেরো বছরে আওয়ামী লীগ সরকারে আমলে দেশের অর্থনৈতিক বিকাশ হয়েছে। ফলে ব্যবসার প্রসার ঘটেছে। ব্যবসা বাড়ানোর জন্য ঋণ নিতে হয়েছে। কিন্তু কখনোই ঋণখেলাপি হইনি।’